শ্যামলকান্তি মজুমদার লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
শ্যামলকান্তি মজুমদার লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

শ্যামলকান্তি মজুমদার-এর কবিতা


মাকে জড়িয়ে আহ্লাদ 

এলোমেলো দিনগুলো সঙ্গোপনে ধরে রাখি 
পায়েসের পাত্রখানি এলাচ লবঙ্গ পরিমলে 
কপালে চন্দন টিপ, কে কার উপমা, তুমি চাঁদ?
উঁকি দিচ্ছে কাঁচপোকা ইতিউতি আকাশের গায়ে

মা-কে জড়িয়ে আহ্লাদ মেখে নিই সর্বাঙ্গ শরীরে 
স্বর্গ যেন চেয়ে আছে দুটি চোখে অপার বিস্ময় 
কল্পনায় ছোটে ঘোড়া আঁকাবাঁকা পাহাড়ি জঙ্গল
ঝরণাকে মানাবে হার মদাশিয়া রমণীর হাসি।

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

শ্যামলকান্তি মজুমদার-এর কবিতা

বিকল্প 
এক 

আজ অনেক্ষণ এইভাবে বসে আছি।
কী ভাবছি ---- বলতে পারবো না।
এইমাত্র মানাইয়ের চলভাষ। কুলুমানালির 
হাসি বেজে উঠলো দেয়ালে আড়ালে।

মাইকে ব্যান্ডগান বাজছে। জানলা 
দিয়ে হাত বাড়ালেই স্থলপদ্ম। বৈদ্যুতিক 
তার ছেড়ে উড়ে যাচ্ছে দুটো একটা 
চড়ুই শালিখ।


দুই 

শালপাতা বিশাল বৃষ্টির মধ্যে 
শুয়ে আছে। হয়তো উড়ে যাবে 
অদ্ভুত স্বভাবে! ভাবনায় উঠে আসে 
উজ্জ্বল শীকর। কখন কীভাবে ভাষা।
স্বীকারোক্তি। আলোকিত ভিতর 
বাহির।

 

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

শ্যামলকান্তি মজুমদার-এর কবিতা

চৈত্র, ১৪৩০

-কারের মতো জেগে উঠছে পৃথিবী

                          এইমাত্র ভোর হল

পাখপাখালির নড়াচড়া, কাছেপিঠে দু-একজন মানুষ,               

তাদের অস্পষ্ট কথাবার্তা, চলাফেরা        

ভেসে আসছে কানে

প্রহর সংকেত করে উড়ে যাচ্ছে কাক

আলো -আঁধারির ঘেরাটোপে

সবকিছু মায়াবী, অচেনা।


বিকেল শেষে আর এক বিকেলে ছায়া রোদ

আমার চলা ছায়ার থেকে আর এক ছায়ায়

বুকের ভিতর গুমড়ে হাওয়ায় ভাসে সে কোন সুর -------

আমার যে গান আজও হয়নি গাওয়া...

রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪

শ্যামলকান্তি মজুমদার-এর কবিতা

আফ্রদিতি

তোমার দিকে তাকিয়ে আছি
মনে মাখামাখি আহ্লাদ হচ্ছে

দেখছি পূর্ণিমা রাতে হৈ হৈ জ্যোৎস্নায়
সারারাত
অফুরন্ত দৃষ্টি -বিনিময় আমাদের

ডেকে উঠলাম এইমাত্র
আফ্রদিতি ---
রোমকূপে রোমকূপে, শিরায় শিরায়
জন্মান্তর পেরিয়ে, দেবী এসেছে।

 

রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

শ্যামলকান্তি মজুমদার-এর কবিতা

জন্মদিনে

ঘিয়ের প্রদীপ জ্বলছে
পাশে তামার থালায় ধানদুর্বা
কাঁথার আসন পাতা
ছুঁচের নৈপুণ্য ফুটে ওঠা ফুল
কানায় কানায় ভরা পায়েসের বাটি
মা বসার ছোট্ট একটা টুল

সে একবার বেশ মনে পড়ে   লোভে
আগেভাগে তুলে নিয়েছিলাম
আঙুলে পায়েস
মুখে দেবার আগেই ––– ধমক

অবাধ্য ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে
উল্টে পাল্টে দিচ্ছে তারিখ

আমি কি ক্রমিক কোনো সংখ্যাতত্ত্বে
আটকে গিয়েছি
২৫শে মাঘ, শ্রীপঞ্চমী তিথি।

 

সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

শ্যামালকান্তি মজুমদার-এর কবিতা

আঁধার জড়ানো নির্জনতা

প্রতিবার-ই পতন থেকে উঠে আসি নিরালায়।
জানলা খুলি। আকাশ তখনো দূরে। ডুবে যাওয়া
আলো। কিছু রং। আঁধার জড়ানো নির্জনতা।
হাই তুলি। উঠে আসি বারান্দায়। মাধবীলতার
গায়ে রক্তছোপ।

 

শুক্রবার, ২ জুন, ২০২৩

শ্যামলকান্তি মজুমদার-এর কবিতা

পাঠ

বৃষ্টির ভাষা পাঠ করি
পাতা চুইয়ে ফোঁটা ফোঁটা শিশির পাঠ করি
অন্ধকারের ভাষা পাঠ করি
তোমার চোখের ভাষা পাঠ করি

বনকলমির ডগায় বসা ফড়িং
উড়ে গেলো।

 

রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩

শ্যামলকান্তি মজুমদার-এর কবিতা

না-বাজানো হারমোনিয়াম

কী জানি কোথায় যেন রয়ে গেছো সুরভি ছড়িয়ে! 
শূন্যমুঠি খুলে দেখি গন্ধময় পুরোনো সুবাস। 
ঠোঁটে এসে থেমে থাকে কতো আফোটা কথা। 
না-বজানো হারমোনিয়ামর 
খারাপ হয়ে যাওয়া রিড হয়ে রয়ে যাবে 
যতদিন বাঁচি।

রেণু রেণু উত্তেজনা। এলোমেলো মন।
হয়তো দুচোখ আর চেয়ে চেয়ে তোমাতে মিলবে না! 
ফেলে আসা দিনগুলি ধরা রইলো মনের কানাচে।

 

শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২

শ্যামলকান্তি মজুমদার-এর কবিতা

হিংস্র

আকাশটাই মনেহলো নিভে গেছে তখন সন্ধ্যাতে
আস্ত ওই লাল ফল গিলে ফেলে মস্ত অজগর
ধীরে ধীরে দেহটিকে এলিয়ে দিয়েছে পশ্চিমে
রক্তহিম চোখদুটি মেলে যেন ক্ষিপ্ত সন্ধ্যাতারা
 আরো কোনও ভয়ঙ্কর বার্তা নিয়ে এসেছে আকাশে
বিবস্ত্র নারীর দেহ লুঠ করে নেশাগ্রস্ত চাঁদ
মুঠো মুঠো ছায়া ছুঁড়ে উন্মাদ ছিনালি
দীর্ঘ দেবদারুটির সমস্ত শরীর জুড়ে হিংস্র আঁচড়।

 

বুধবার, ১ জুন, ২০২২

শ্যামলকান্তি মজুমদার-এর কবিতা

সুখে-দুঃখে বোনা অভিমান

 

কথা বলতেই এসে ছিলাম

ফিরে যাচ্ছি মৌন স্বপ্নে

 

মেঘ কল্পনাবিলাসী

শিরিষের উঁচু আকাশে

লুকোচুরি সারাদিন

সুখে-দুঃখে বোনা

তোমাদের কাছে রেখে গেলাম অভিমান।

 

বিকেলের সূর্য ডুব দিয়েছে জলে

ফিরে যাচ্ছি মূক জ্যোৎস্নায়।

 

শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০২২

শ্যামলকান্তি মজুমদার-এর কবিতা

অশ্বত্থ ডালে


ডুকরে উঠছে

থেকে থেকেই পাতা

অশ্বত্থ ডালে

 

কান্না কি তার

তেমন,

চোখের জলে ধরা

বুক ভেজানো

মুচড়ে ওঠা

ব্যথায়?


ঠোঁটের অবাধ্যতায়। 

মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০২২

শ্যামলকান্তি মজুমদার-এর কবিতা

বিপন্নতা বিষয়ক

 

পড়ে আছি অঘ্রাণের বেলা। জড়ানো সুতোর

মধ্যে অসম্ভব গিট। এক একদিন সকালের

ফর্সা মুখ। নীরাভা, তোমাকে। কতটা দূরত্ব

ঠিক, কিমি কিংবা গজ? অভিমান হত।

 

এড়ানো যায় না। আঁশটে গন্ধের মত অন্ধকার।

রুগ্ ক্যালেন্ডারে শুভদিন। বরাদ্দ মাছের পাতে

বিড়াল চাহনি। আঁচল সরানো চকিত নগ্নতা।

কথার পৃষ্ঠায় কাটাকুটি। ভুল বানানের মধ্যে

অসতর্ক উঁকি।

 

নিজেকে ভেঙেছি। টুকরো টুকরো কাচ

ছড়ানো উঠোনে। অক্ষরে অক্ষরে ফণা।

ভিজে ওঠে প্রান্তবেলা। নির্মিত নিরালা

থেকে কেন্দ্রবিন্দু  সুদূরে লুকোনো।

 

চেনা যায় না। মুখের উল্কিতে ভাঙা রঙ।

টেরাকোটা স্বভাবের। চোখের সংলাপে ধরলে

মনের আলোপে বহুদূর। হাসিতে কত্থক যদি

কান্নায় ভরতনাট্যম। তবু ডাকি। কাছাকাছি

আবেগে জড়াই। কিছুটা আলোয় ভাসি

অযুত যোজন অন্ধকারে।

 

ছোবলের দাগ দেখি বাঁধানো চাতালে।

রক্ত মুছে নেওয়া জলছবি। চোখে চোখ

রাখলে ইতস্তত পাপ।