সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২০

সম্পূর্ণ সূচি (১ম বর্ষ ।। ১ম সংখ্যা) [নভেম্বর সংখ্যা]


 

কাজল সেন


 

চাঁদ তোমার আমার


উপপাদ্য আর সম্পাদ্যের জটিলতায়

আরও কিছু কৌণিক মুখ বহুতলের বারান্দায়

একটা ঘর তার অনেক জানালা

নির্দ্ধারিত অতিথি আসন

সংরক্ষিত শহীদ বেদী

সমাগত সন্ধ্যায় তুমি প্রদীপ জ্বেলেছিলে বৈঠকখানায়

এখন আসন্ন রাত্রি

অনেক তারার সম্মিলনে কার্তিকের আকাশ

বিকলাঙ্গ মানুষেরা বলে গেল

একদিন তারা দল্মার শিখরে ওড়াবে সাম্যের পতাকা

সেদিন কবে আসবে

কবে মুক্ত হবে সব খাঁচার পাখি

পিতৃত্বের অমোঘ দায় থেকে কবে তুমি দায়বদ্ধ হবে

কবে বলবে এই রাত তোমার আমার

চাঁদ আমার তোমার

কামাল হোসেন


 

সময়ের সাঁকো

দীর্ঘ তিরিশ বছর পর হঠাৎ ফোন করে
পুরনো বন্ধু বলল : আমাকে মনে আছে তোর?

সময়ের সাঁকোর এপাশে এক বিশাল
সিঁড়ির নীচে দাঁড়িয়ে আমি বিষণ্ণ চোখে
দেখেছিলাম আকাশের ছুটন্ত উড়োজাহাজ
ও রক্তলোভী ঈগলের বিবাদ, সূর্যের বিচ্ছুরিত কণা

আমার বুকের ভিতরের ঘরবাড়ি
পাষাণপুরীর মতো নির্জনতা খোঁজে,
চারপাশে ছড়িয়ে শৈশবের অমল কুসুমগন্ধ

নাসের হোসেন

 



স্পৃহা

 

অন্ধকারের মধ্যে যে আলো
আমি তার অনুসন্ধানে আছি।
গাছের ভিতরে যে অনুভবপাথরের ভিতরে
যে অনুভব আমি তার অনুসন্ধানে।
হঠাৎ দু হাত টুকরো হয়ে গেলে
কীভাবে মানুষ বেঁচে থাকে,
 এক অনন্ত জিজ্ঞাসা।
প্রতিটি কোষের মধ্যে যে জীবন-স্পৃহা
তাকে আমি প্রণাম করেছি।

সুবীর সরকার



মায়া

 

সারি সারি সাজানো পুতুল

চারপাশে শোকসংগীত

ঘুমের ভেতর দেখি শ্যাওলার সবুজ

সানগ্লাস খুলি।দেখি কুয়ো

 বালতি

কমার পাশে সেমিকোলন রাখি

আর নদীর জলে মেঘের মায়া


 

অমিতাভ মৈত্র



ইস্কাপনের রাজা

 

এই যুদ্ধমোরগ যখন হেরে ফিরে আসে আমি ভয় পাই
সেই ভয়ের চাপে আমার দুপুরের দোলনা হাঁটতে হাঁটতে বেরিয়ে যায়
আর কাদা পায়ে উঠে আসে কালো অপেক্ষাহীন একটা গাড়িতে

গাড়ি চলতে শুরু করে
আমার হেরে যাওয়া যুদ্ধমোরগ লাল হয়ে যায়
রক্ত তেমন নেইহেরে যাওয়া যুদ্ধমোরগ তবু লাল হয়ে যায়

প্রণব বসুরায়


 

পায়রা আসে কেন

 

ইচ্ছের পায়রাগুলিকে আজ উড়িয়ে দিলাম

রেলিং থেকে।

কাউকে 'অভদ্রবলা সামাজিক অপরাধ

তাই তাকেও তুলে দিই ঝোলানো টং-......

তুমি বরং এখনই দেখে নাও

বয়মের আচার ঠিক আছে কিনা

আরঘরের কোণে মাছ ধরার ছিপ  হুইল...

আমাদের কত ঘুড়ি ছিলো আর

হাজার হাজার গজ মাঞ্জা সুতো...

বিপর্যয় কি সব নিয়ে যায়যেতে পারে?

#

তাহলে রেলিং ভরে

এখনও পায়রা আসে কেন !

সুবীর ঘোষ


 


এক ঈশ্বর

 

শিশুগাছের নামে শৈশব থাকলেও

দৈর্ঘ্যে সে আশি ফুট যেতে পারে।

বিদ্যাসাগর খর্বকায় হয়েও

বাঙালির উচ্চতায় গেঁথেছিলেন গর্ব।

সে সময় কয়েকজন

বিদ্যাসাগর থাকলেও

বাঙালির বিদ্যাসাগর

একমাত্র ঈশ্বরচন্দ্রই

বিদ্যা মমতা সাহস  সংস্কারকে একসূত্রে বেঁধেছিলেন।

মুণ্ডচ্ছেদ করে জীবনীশক্তি

কমানো যায় না।

কুষাণরাজ কণিষ্ক সেই দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে এখনও বেঁচে আছেন।

বিদ্যাসাগরও থাকবেন।

পাষন্ডেরা এসব মাথামুন্ডু না জেনে

শুধু মুন্ডুই ভেঙে দেয়।

বিদ্যাসাগর নামক শিশুগাছটির

মাথার কাছে পৌঁছতে পারে না।