ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না-র কবিতা

জল

ঝমঝমে বৃষ্টির মধ্যে মাঠের  মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে আর একটা আমার মতো কেউ

এদিকে ডালে ফোড়ন দিতে দিতে ক্যানেলের পাড় ধরে  ঘুরে আসছে হাতা খুন্তি হাড়ি কড়া

সাবান আর ধূপের গন্ধ মাখা সকালটা মাঠের দিকে অভিসারী  হতে চাইছে হয়তো তখনই তারও পালক ভেজানোর সখ।

সখ মানে তো একটু গান বাজনা, বইপত্র পড়া আর গাছ পালার মধ্যে বসে থাকা।

যে ভিজে যাওয়া আর ভিজতে চাওয়ার মধ্যে যে

ফারাক

তা মেটানোর  কোনো দায় তো নেই অভিধানের।

শুধু দেখছি দুটো অবস্থানেই বিস্তর মানুষ

হিংসার দিকে আর শান্তির দিকেও তাই তবু...

নিজের কথা, পড়শির কথা জল জঙ্গলের কথা ভাবলে

এখন চোখ জলস্রাবী মেঘের মতো ভারি হয় কিন্তু ঝরে পড়ে না

খুব গভীরে বসে কেউ অশ্রুজলে স্নান সেরে নেয়

আমিও সেখানে শান্তিতে ভিজতে পারার একটা মাঠ রেখে জ্বলতে থাকা বর্তমানে ফিরে আসি। 

রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪

ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না-র কবিতা

শরীর ২

কানের পাশ ঘেঁষে মৃত্যু চলে যাবার পর  বোঝা যায় শরীরের নিজের একটা ভয়াঞ্চল আছে। তার সব কটা কাঁপনকে ওপর ওপর একই মনে হলেও তাদের  ভাষা ভিন্ন। প্রথম চুম্বনে, প্রথম মিলনে সে যেমন করে কেঁপে ওঠে ভয়ে তা হয় না। পা বেয়ে ঘাম গড়িয়ে জুতো ভেজে অথচ গলায় তখন সমুদ্র শুষে নেবার আকুতি। রাগের সময় কেঁপে ওঠাও খানিকটা অসহায় করে মানুষকে।  তাহলে কাম ক্রোধ ত্রাসে সে বশে থাকে না।
তার মানে সাধারণ শরীর এক অবাধ্য সহচর।
সঙ্গে থেকেও যে আসলে নেই বললেই হয়।
 

রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না-র কবিতা

শরীর


হত্যার ইচ্ছে তীব্র হলে নিজেকেই...  পায়ে পাথর বেঁধে ডুবিয়ে দিই

কোনো আতঙ্ক ছাড়াই ডুবে যায় মহার্ঘ শরীর

অঘ্রাণের মিঠে রোদ হাত ভর্তি শূন্যতা

মাঠের ঘাসে পড়ে থাকা ভীতু কিছু ফিস ফিস

এসব আমার মন ঘোরাতে পারে না

আমি জলের উপর বুদ্বুদ দেখি

আলো পড়ে কত বিচ্ছুরিত রঙ

শরীর কি জানত তার নি:শ্বাসে এত রঙ ছিল

হে বিশুদ্ধ জলাশয়  উপহার ফিরিয়ে দিও না  

সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না-র কবিতা

এভাবেই

কেউ আসেনা তবু বিকেলটা প্রত্যাশী হয়
চুল বাঁধে, পোশাক বদল করে,
সেঁকা চা পাতা, চানাচুর, চিজ বিস্কুুটের আয়োজনে ব্যস্ত হয়।
হঠাৎ রোদে উদ্ভাসিত নীল মেঘের ক্যানভাসে
বিদ্যুতের তারে স্থির লাল ফড়িং
হাতের ফোনে দ্রুত ক্লিকের পর আর কাজ থাকে না।
সন্ধে হলে জ্বর আসে
থার্মোমটারের অস্ফুট প্রলাপ শুরু হয়,
জলপটি থেকে ঝরে পড়ে শুকনো বকুল আর চিঠির লাইন।
এভাবেই ফ্লাশ ব্যাকে চলে যায় অচিহ্নিত  রাতের জানালা। 

 

রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩

ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না-র কবিতা

ক্রীড়া দিবস

মাঠে বসে ডালমুট খাই ঝাল লজেন্স আর এলাচি চা
সাদা সাদা টুপি উড়ে উড়ে চলে আর ফুড়ুৎ করে নীলে চলে যায় শালিকের আনন্দ বাহার
গান ওঠে " তোরা বাতাস কর বাতাস কর"।
উত্তর থেকে জোরাল হাওয়া দিলে মানালিতে ফেলে আসা কান ঢাকা টুপির বিরহ সাপটে ধরে
গুলি চামচ দৌড়ে "ওর গুলিটা ভাঙা ছিল" বলে ঘিরে ধরে ছুটন্ত স্বপ্নের ঝাঁক
খোঁড়া পায়ের বয়স্ক আফসোস গরম খিচুড়ির মধ্যে লুকিয়ে ফেলে  নোনা জলের ফোঁটা।
ভাল মন্দের বিচার রোদের সাথে মুখ বদলায়।
অনেক রকম দৌড় ও তার স্মৃতি নিয়ে শিশির মাখা গাছ অন্যরকম রাত পোহায় আর জেগে উঠে সারাদিন হাসে 
 

শুক্রবার, ১ অক্টোবর, ২০২১

ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না-র কবিতা


বিপন্ন

এত ভাবে নিজেকে জমিয়ে দিতে হয়
একটা আধুনিক জীবনে অথবা
চালচুলোর হিসেব আর ব্যাঙের আধুলি আগলে থাকতে থাকতে শ্যাওলাধরা পাথর -- পিছলে পড়ার শঙ্কা
দুর্গম সব গুহার ভেতরে সেই পাথরেই  ছবি ছিল পাশে কোথাও গানও ছিল হয়তো।
বিলুপ্ত গাছ আর পশু পাখিরা চিঠি লেখার ঠিকানা জানতে চাইলে কর্তব্য স্থির হয় না।
হাতে পড়ে থাকে ব্যূহে ঢোকার পর বেরতে না পারার ক্ষোভ।
স্বপ্নের ভেতরও হত্যা আর কালো আচ্ছাদন...
পথ পাচ্ছি না হে ভোলা মন পথ দেখছি না।

বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না-র কবিতা


একদিন শৈব দুপুরে

এই সব ঈশ্বর বিশ্বাসীদের আসেপাশেই ঘুরি ফিরি তর্ক তুলি

প্রাচীন বিগ্রহ আর পাথরে খোদাই কিছু লিপির অদূরে পদ্মদিঘিপাতার আড়ালে হয়তো মারণ দংশন  তবু
গোলাপি কমলিকা এসবের ঊর্ধ্বে উঠে গলা বাড়িয়ে গান শোনে।
দোতারা ডুবকির সাথে জটাধারী শৈবের কিছু কথা বার্তা মনে মনে হয়তো হয়েছে। তেঁতুলের পাতায় কোনো চঞ্চলতা নেই তবে ইশারা ছিল ধারা বর্ষণের
অগ্নিকুন্ডের ধোঁয়া চিন্তাকে আচ্ছন্ন করার আগে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে পিঠ ভিজিয়ে নেয়া উচিৎ কি না হর বা হরি কেউই মীমাংসা  করল না... গানের একটা ধর্ম আছে না
ধর্মের নাম সঙ্গীত হলে অথবা কাব্য হলেও নষ্টামি  চলতোমানুষকে বিশ্বাস কী!

 

 

মঙ্গলবার, ১ জুন, ২০২১

ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না-র কবিতা


নূর আগুন

নিজের এই পাগলপনা সঙ্গী এখন...

সারাদিন চোখে ধরে রেখেছি একটাই চেহারা
দীর্ঘ বাঁকা ভুরুতে অনেকটা উড়ান নিয়ে রোজ আসে  সে
আড়াল থেকে দেখি আর কুরুশ কাঁটায় বুনি এক গোলাপবাগের ব্যথা ব্যথা সুখ
অ্যাম্বুলেন্স ছুটে যাচ্ছে চতু্র্দিকে-- তীব্র শব্দ ঢুকে পড়ছে রক্ত স্রোতে
মুখের আবরণী সরিয়ে মধুর করে হাসি নতুন শংকার দিকে, হাতে হাত রাখারও চেষ্টা করি
একজোড়া বলিষ্ঠ হাতের বেষ্টনীর কথা কল্পনা করে করে রাত দেখি। দৃষ্টি নেমে আসে পিঠ থেকে পিছলে পড়া আলোয়
আমি যখন ভালবাসতে চাইছি তখনই  আকাশে আগুনে  পতঙ্গ
উড়তে উড়তে খসে পড়ছে  ঘাসে।

ভাবছি চোখের করুণ চাহনি কি আমার জন্য হতে পারে?
অথবা দৃঢ় হাতের পাতায় কোনো কল্প সফর?