পুষ্পিত মুখোপাধ্যায় লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
পুষ্পিত মুখোপাধ্যায় লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২

পুষ্পিত মুখোপাধ্যায়-এর ঝুরোগল্প

চোর কাঁটা....
কৈশোর পেরোতেই অজান্তে একটা চোর কাঁটা কোথায় যে গেঁথে গ্যাছে,খুঁজছি,এখনো খুঁজে চলেছি। এই সায়াহ্নেও। বেশ ছিল শাপলা শালুক দিনগুলো। ফলসা গাছে দাপাদাপি,বটের ঝুরি ধরে দুলে দুলে তুমুল আনন্দে হুশ করে হারিয়ে যাওয়া।
  হ্যাঁ,ছোটবেলায় কাঁটা ফোটে,ভাঙ্গা কাঁচে পা কাটে,সে তো এমনিই কাঁটা,চোর কাঁটা নয়। সে চুপ করে আড়ালে ওঁৎ পেতে থাকে,মোহময়ী শ্বাপদের মতো।কিশোরের যণ্ত্রণা হয় না। কেটে ছেঁটে গেলে মামুলি প্রলেপে বা মায়ের মধুমাখা হাত বোলানোতেও শীতল শান্তি!
   হাঁটতে শেখার দিনগুলোতেও কতো...কতোবার পড়েছি।টলমল করেছি।বাড়ির লোকেরা হাসতে হাসতে বলত....'এই তো বাবু,আর একটু...কিছছু হয়নি। সোনা আমার'। তারপর গুটি গুটি চলতে চলতে পা দুটো শক্ত হয়েছে।কতো শত মাইল যে হেঁটেছি! ক্লান্তিহীন। কিন্তু ওই যে লুকিয়ে থাকা সরীসৃপের ছোঁয়া অকারণই লেগে যেতেই কষ্ট।
কৈশোরের চৌকাঠ পেরোতেই সেই যে একবার দংশন করেছিল,কোথায় যে হারিয়ে গেল আমার স্বর্ণ ঈগল দিনগুলো ! ভাবনা চিন্তাহীন,বাধাহীন জীবন,কি সুন্দর বাতাস কেটে কেটে এগোতো।কিন্তু যৌবনের আকাশে ঝাঁক ঝাঁক মৌমাছি উড়ে বেড়ায়,একমুঠো রক্ত মাংসের প্রাণী কি জানতে পারে! পারে না,আমিও ব্যতিক্রম নই। ব্যতিক্রম হতে চেয়েছি।চকচকে জীবনের রাস্তায়ও যে বিষ লুকিয়ে থাকে,ভাবিনি। এড়াতে গিয়েও এড়াতে পারে না কেউ। যারা পারে,দেবদূত তারা। কিন্তু আমি তো মানুষ। তবুও নিবির্ঘ্ন বসন্ত কাল পাওয়ার কি যে আনন্দ,উপলব্ধি করিনি। জীবনটাই যে ঝোঁপঝাড়ে ভর্তি,দুঃখের জলজমা পিচ্ছিল রাস্তাও আছে,সেখানে বিষাক্ত কীট আছে,স্বপ্ন সুখ সব ছিন্ন ভিন্ন করে দিতে পারে সেসব,ধারণাই ছিল না।
   পাঠশালার মাঠে চামড়া ছিঁড়ে ছুঁড়ে গেলে একটু বিশল্যকরণীর পাতা রগড়ে,কিম্বা দুর্বাঘাস থেঁতে লাগিয়ে দিতেই উপশম।  পুকুরে চান করতে গিয়ে ঘন্টাখানেক জলে হাত পা সাদা হয়ে যেত। দেরি দেখে পুকুর পাড় থেকে কালি মাসি হাঁক পাড়ত..'ছোটবাবু, এবার জল থেকে উঠে এসো,অনেক হলো। মা ডাকছেন।'  আহ্! সেসব দিন!  জঙ্গলে, আগাছা ভর্তি মাঠে কাঁটা থাকে। কিন্তু কংক্রিটের জঙ্গলেও!
    কতো ঋতু পেরিয়েছে,পার করেছি। কিন্তু দমকা হাওয়ায় ভেসে আসা সে কাঁটা,সেই চোর কাঁটা...খোঁচা দেয়। কোথায় যে খুচখুচ করে! সারা শরীরে হাত বুলিয়েও খুঁজে পাইনি। টিসটিস করে। হ্যাঁ,এখনো এই পড়ন্ত বেলাতেও!
  ' হে প্রভু! বড় কষ্ট,যন্ত্রণা! অস্তাচল গামী সূর্যের মৃদু আলোয় সেই কাঙ্খিত মুখ খুঁজি,হাতড়াই। একটা কাঁটার জন্য একটা ব্যাথার সমুদ্র পার হতে হবে,ভাবিনি তো। এখন বুঝি ব্যথা বেদনার ঝুলি কখনো উপুড় করা যায় না। ফুল,পাতা,সুগন্ধের কোন ঠাঁই নেই সেই ঝুলিতে। এই একাকী দুমড়ে যাওয়া ক্ষণেও কেন যে ফিরে ফিরে আসে ব্যাথার ঢেউ!
   ঘুমের মাঝে সেই মুখ ভেসে উঠলে এপাশ ওপাশ করি। মাথার ওপর শোঁ শোঁ শব্দে পাখা ঘুরে যায়।আমি অপলক তাকিয়ে থাকি।নিদ্রাহীন।  পাশে শুয়ে থাকা সহচরি জিগ্যেস করে...'ঘুম আসছে না?কি যে এতো ভাবো...?'
আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে যেতে চায়..' কাঁটা....কোথায় যে খুচখুচ করছে! ও তুমি বুঝবে না'
   আমিই কি ছাই সব বুঝি! বুঝলে সেই চোর কাঁটা কি থেকে যেতে পারতো....!
 

মঙ্গলবার, ১ জুন, ২০২১

পুষ্পিত মুখোপাধ্যায়-এর অণুগল্প


 এটা বদলে দাও প্রভু ....

কৌশিকের ভেতর সবসময় একটা নদী বয়ে যায় নানান শব্দে। ওই নদী থেকে নানা শব্দ উঠে আসে। কুলকুল শব্দটা তার প্রিয় হলেও পিউয়ের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর কয়েকটা মাসই মাত্র কৌশিক নিজের প্রিয় শব্দ শুনতে পেয়েছে! ব্যস্!তারপর এই দীর্ঘদিন, এই দীর্ঘ সাতটা বছর নদী তার গতিপথ বদলেছে, তারতম্য ঘটেছে শব্দের। শব্দের তারতম্য ঘটার সঙ্গে সঙ্গে পিপাসার্ত হয়েছে সে, ক্রমাগত বেড়েই গ্যাছে  তার পিপাসা। পিপাসায় ক্লান্ত হয়ে নৌকো বয়েছে সে নদীতে, জল ছুঁয়ে দেখেছে,অদ্ভুত ভাবে তেতো লেগেছে তার, ঠিক যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে ওঠার পর যে অনুভূতি হয়। কি আশ্চর্য! নদীর পুরো জলই কি তবে একসময় তেতো হয়ে যায়? কৌশিকের ভেতর আজকাল একটা বাগানও বেড়ে চলেছে অতি দ্রুত গতিতে। যেখানে আছে গাছ, সবুজ ঘাস, যেখানে পাখি ডাকে, কোকিলের কুহুতান তাকে মুগ্ধ করে। সে বুকের ভিতর থেকে সারা বাগানকে শুনিয়ে যেন বলে ওঠে, "আমি ভালবাসি, আমি প্রেমিক, আমি বাঁচতে চাই। আমাকে তুমি মেরো না। কোনো প্রেমিককে খুন করতে কি তোমার হাত কাঁপবে না প্রভু? কোনো প্রেমিককে খুন করা বীভৎসতম কাজ। তবে আমার শরীরে বড় জ্বালা। আমি কষ্ট পাই। প্রতিরাত্রে আমাকে একটা রক্ত মাংসের শরীরের কাছে নুব্জ হয়ে যেতে হয়। আমি কৌশিক সেন, আমি বড় অফিসার,আমার তাঁবে আছে আছে দুশো লোক। সবাই আমাকে ভয় করে, মান্য করে, অফিসে আমার কথাই শেষ কথা। কিন্তু আমি অসহায়, অতৃপ্তআহ্! ঈশ্বর, আমি তৃপ্তি চাই। আকণ্ঠ জলপানে পরিতৃপ্ত হতে হতে চাই...একটা শরীর...শুধুমাত্র রক্তমাংসের শরীর ..."  কৌশিক এভাবেই সেই বাগানে পায়চারি করতে করতে একটা ঝরণার সন্ধান পেয়ে গেছে মিষ্টি জলের কুলকুল ঝরণা। তার নিজের স্টেনো সুতপা মুখার্জিকে সেই বাগানে আনতে পেরেছে। 

   কৌশিক লাইট না জ্বেলেই মশারি তুলে খাট থেকে নেমে খুব ধীরে, অন্ধকারে উঠে দাঁড়িয়ে আস্তে আস্তে সামনের ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ায়। চতুর্দিক গভীর অন্ধকারে ডোবা হলেও অন্ধকারের নিজস্ব একটা জ্যোতি আছে। সেই জ্যোতিতে বাড়িঘর, গাছপালা অদ্ভুত তেলচিটে ধরণের দ্যাখাচ্ছে। আকাশে মনমরা চাঁদের দুঃখী কিরণে চারপাশ বড় বিষণ্ণ। প্রতিদিন পূর্ণিমা হলে তার মতো মানুষের অনেক কষ্ট কমে যায়। ছাদভাসা পূর্ণিমায় উদোম শিশুর মতো ঘুমিয়ে পড়া যায় অতি নিশ্চিন্তে আর তা হয়না বলে প্রতিটি রাত একটি শরীরী তুফান আরেকটি প্রস্তর শরীরের ওপর আছড়ে পড়ে চৌচির হয়ে যায়। শুধু নিজেই নিষ্ফলা আক্রোশে ভাঙ্গাচোরা সেতুতে এসে ঠেকে। তখন বিগ অফিসার কৌশিক সেন দুমড়ে মুচড়ে একটা নির্বিষ সরীসৃপের মতো পাশ ফেরে। পরের ছোবলেও বিষ ঢেলে সে পিউকে আলোড়িত করতে পারে না। দিনের পর দিন এই একই খেলায় বিরক্ত হতে হতে সুতপাই ঢেউ তুলেছে তার জীবনে। 

       কৌশিক সামনের অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে একটা সিগারেট ধরায়।  জোনাকির মতো এক চিলতে আলো ওঠানামা করতে থাকে। দুরে পুলিশের হুইসল শোনা যায়। একটা ট্রাক অন্ধকারের বুকে পা ফেলে পেরিয়ে যেতেই কৌশিক পিছন ঘুরে তাকায়। সামনে তার বেডরুমের ভেতরটা একদম নিশ্ছিদ্র অন্ধকার। ওই অন্ধকারে খাটের ওপর অঘোর ঘুমে নিশ্চল তার স্ত্রী পিউ। 

     কৌশিক জ্বলন্ত সিগারেটের টুকরোটা দুরে ছুঁড়ে দিয়ে ব্যালকনি থেকে অন্ধকার ঘরে এসে ঢুকে টেবিল ল্যাম্পটা জ্বেলে দেয়। মশারির ধারে এসে ঘুমন্ত পিউয়ের মুখটা লক্ষ্য করে। লক্ষ্য করতে করতে ভাবতে চেষ্টা করে পিউ সুতপা হয়ে উঠেছে। তার সবকিছু পাল্টে যাচ্ছে। এমনকি সুতপার শরীরের গন্ধ পর্যন্ত পিউয়ের শরীর থেকে উঠে আসছে। কৌশিক ঘেমে ওঠে উত্তেজনায়, জিভ লালায় জড়িয়ে আসছে। মশারি তুলে বিছানায় উঠে বসে। পিউকে দুহাতে নাড়া দিয়ে ডাকে। পিউ চ্যাটচ্যাটে ঘুম জড়ানো চোখে জিজ্ঞেস করে..."কি? ..কি বলছো? তুমি এখনো ঘুমোওনি?"

  কৌশিক বলে ...তোমাকে একটা কথা বলবো ভেবে ঘুমোতে পারিনি। "

"কি পাগল লোক রে বাবা! কি বলবে, বলো এতো রাত্রে ?"

"তোমাকে আজ থেকে সুতপা বলে ডাকবো, রাজি তো? "

"কি যে পাগলামি করোনা ঘুমিয়ে জেগে জেগে সুতপা নামের কোনো মেয়ের স্বপ্ন দেখেছিলে, না উপন্যাস পড়ছিলে?"

"না তা নয়। তবে তুমি কথা দাও তুমি সুতপা হবে?তুমি সুতপা হয়ে উঠবে? চলো, আজ আর আমরা এই খাটে শোবো না। মাটিতে বিছানা পাতো। এই খাটে আমার শরীর জ্বালা করে। প্লিজ, আমার জন্য একটু কষ্ট করো। প্লিজ সু......" কৌশিক পিউয়ের হাত দুটো ধরে খুব কাতর গলায় বলে।  পিউ কোনো উত্তর না দিয়ে পাশ ফিরে শোয়।  কৌশিক ঝুঁকে তার মুখের কাছে মুখ আনতেই পিউ তাকে জাপ্টে ধরে পাশে শুইয়ে দুহাতে জড়িয়ে ধরে বলে ..."আমি তোমার পিউ, অন্য সবাই খারাপ মেয়ে...এসো ..." পিউ তাকে জড়িয়ে ধরতেই বৃদ্ধ সরীসৃপের মতো কুন্ডলি পাকিয়ে গুটিয়ে যায় কৌশিক পিউয়ের দুহাতের মধ্যে।  নাহ্! এবারো হলো নাপরের ছোবলে দেখতে হবে সে সফল হচ্ছে কিনা।  ঘুম ঘুম অবশ লাগে নিজেকে কৌশিকের।  ঘুমে তলিয়ে যাবার আগে বিড়বিড় করে, " এটা বদলে দাও প্রভু!.....

 

           

 

 

 

 

 

বৃহস্পতিবার, ১ এপ্রিল, ২০২১

পুষ্পিত মুখোপাধ্যায়-এর অণুগল্প

 


স্বপ্নে রঙ্গীন পাখি ওড়ে 

আমি স্বপ্নকে ভয় পেয়েছি, স্বপ্নে কুৎসিত সরীসৃপ ঘুরে বেড়াতে, আমি কুঁকড়ে থেকেছি। কালো মেঘ সব ভিড় করে আসত আমার ঘুমে। সেই চ্যাটচ্যাটে ঘুমে কোনো সুগন্ধি মাখামাখি হয়ে থাকত না। আমি একটার পর একটা বসন্ত পার করে এসেছি, মেদহীন, রঙ হীন..সেসব বসন্ত! আমার ভেতরে একটা পুরুষ, সুগন্ধ সন্ধানী এক পুরুষ, রঙ্গীন পাখির সন্ধানে থাকা একটা মানুষ সুগন্ধিত এক সমুদ্রের খোঁজে চোখ জ্বেলে বসে থেকেছে দিনের পর দিন। হঠাৎই কেন যে সেই সর্ব শক্তিমান জাদুকর সুগন্ধিত চামর দুলিয়ে ঝাঁকড়ে দেয় আমাকে, জানিনা। আমার অতৃপ্তির সাগরে একমুঠো রঙ্গীন গুলাল ছড়িয়ে দিলো, আহা,শেষ ঘন্টা শোনার আগে! এতেই আমি আবার দুলে উঠি। মনোরম এক উদ্যানে এসে পড়লাম। জানো, সেই বাগীচার একটা নাম আছে... বৃষ্টি। 

 অলক্ষ্যে কারো জাদুকাঠির ছোঁয়ায় আমার খরা বিজন প্রদেশে বৃষ্টি নেমে আসায় আমার আবার ঘুরে দাঁড়াতে ইচ্ছা করলো। আমার মাথার ওপর ঝুলে থাকা সেসব কালো মেঘ, দুহাতে সরিয়ে দিয়েছে বৃষ্টি।  আপাদমস্তক ভিজেছি প্রেমে, ভালবাসায়। সেই মহার্ঘ বস্তুর স্পর্শে নিজেকে বড় ধন্য মনেহয় প্রিয়ে, তুমি সেই অপার্থিব প্রেম দান করলে, আমি কৃতার্থ হলাম। সুগন্ধিত বৃষ্টির আঁচল জড়িয়ে নিজেকে বেশ তরতাজা যুবক ভাবতে ভালো লাগলো। এটাই তো বেঁচে থাকার মূলমন্ত্র। তোমাকে আতরের মতো মেখে নিতেই ঘুমিয়ে থাকা রঙ্গীন সে পাখি আবার উড়ানে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। সারাজীবন শুধু কাঁকর, পাথর জড়ো করে আসছিলাম, তুমি বসরা গোলাপ হয়ে সুগন্ধি কুড়োতে দিলে। আপ্লুত হলাম আমি। 

  তুমি খাঁচায় বন্দী রঙ্গীন পাখি, তুমি বলেছ। আমি মানিনি, ভাবতেও পারিনি। কেউ কি পারে, কেউ কি মজা পেতে পারে সে রঙ্গীন পাখিকে বেঁধে রেখে!

  আগল খুলে আমার স্বপ্নে যে ওড়ো তুমি, আমার সারাশরীরে শিহরণ বয়ে যায়, খেলে যায় বিদ্যুৎ।  আহা! সেই শীতের নির্জন দুপুরের ওম! তিরতির করে বয়ে যায় আমার প্রতিটি শিরা উপশিরায়। শিরিষ ফুলের মতো তোমার গোছা চুলে মুখ গুঁজে, তোমার টোল পড়া দুগালে ঠোঁট ঠেকিয়ে তৃপ্তি সাগরে ভেসে গেছিলাম। 

  সেই যে শুরু, এর সমাপ্তি রেখা যেন কখনো চোখে না পড়ে সখি। একটু আদর, একটু সোহাগ, কিছু কিছু খুনসুটিতে স্বপ্নের রঙ্গীন পাখি কি যে মিষ্টি সুরে গেয়ে ওঠে...দাও ,আরো দাও প্রাণ ...প্রাণ ভরিয়ে ... তুমি শীতল বাতাস, এক ঝলক আমার মুখে মাখিয়ে কি সরে যেতে চাও? কিন্তু আমি পারিনা, ধৈর্যের বাঁধ বেঁধে রাখতে। আমি শুধু জানি.. শুধু গানের দিন ... তুমি আমার স্বপ্নে রঙ্গীন পাখির গান হয়ে এলে! মুগ্ধতার সীমা ছাড়িয়ে আমি প্রতিনিয়ত প্রতীক্ষমান।  আমি বুঝি, উপলব্ধি করি তুমি আমার ঘুমের দেশে, স্বপ্ন জগতেই বিচরণ করে ,আমাকে কষ্ট দিতে ভালবাসো।  নাহলে কেন এই গানভরা দিনগুলো শুকিয়ে যেতে দিচ্ছোপৃথিবীর সব সুগন্ধ হয়তো একদিন নিঃশেষ হয়ে যাবে, কিন্তু তোমার মন, শরীরের সুগন্ধ কোনদিনই নিঃশেষিত হওয়ার নয়।  আমি আমোদিত হয়ে আছি প্রিয়, কাছে থেকেও কতো দুর..কতদুরে তুমি।  তোমার গোলাপ বাগান ভ্রমণে আর কি কোনো অধিকারের জায়গা ছেড়ে রেখেছো!