বিশ্বজিৎ রায় লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বিশ্বজিৎ রায় লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিশ্বজিৎ রায়-এর কবিতা

অক্ষরঘর

একটুকরো সাঁতার এসে ডাক দিতেই

নেমে পড়লাম জলে

জলের সে কী   আনন্দ, লাবডুব ---

যেন শ্রাবণধারায় ভরে উঠলো

শুকনো নদীর বুক …


সাঁতার কাটতে কাটতে মোহগুলো সব

ঝরে পড়ল জলে

মায়াগুলো যেন ঘুমিয়ে পড়ল

আদর জলের কোলে---

ঘিলুর মধ্যে খেলতে থাকা পোকার দল

দমবন্ধ হয়ে ভাসতে থাকল

শুকনো মাথার খোলে ---


নতুন করে গল্প বোনা শুরু করল অক্ষরঘর

নতুন করে কবিতা আঁকা শুরু করল শব্দগ্রাম –

আমিও সাঁতর কাটতে কাটতে

শুরু করলাম   

নতুন শেখা আনন্দগান …

 

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিশ্বজিৎ রায়-এর কবিতা

কাটাকুটি 

সোমাকে ভালবাসতে বাসতে মৃণালের ভালবাসা

একদিন ফুরিয়ে গেল,

সুমিতকে ভালবাসতে বাসতে সঙ্গীতার ভালবাসা

একদিন ফুরিয়ে গেল –

এরপর দেখা গেল, মৃণাল চলে গেছে সঙ্গীতার কাছে, আর

সোমা চলে গেছে সুমিতের কাছে ---

এরপর নতুন করে আবার তাদের ভালবাসা জন্ম নিল,

ছোট থেকে বড় হলো, অনেক আলো জ্বলল,

হাসাহাসি, নাচানাচি, ঘোরাঘুরি হলো ---


অনেক বছর কেটে যাওয়ার পর

এখন আবার মৃণাল খোঁজে সোমাকে,

সঙ্গীতা খোঁজে  সুমিতকে ---

টিভি দেখতে দেখতে, মলে বাজার করতে করতে,

রেস্তোরাঁয় খেতে খেতে, বাড়ির কাজ করতে করতে,

রাতের বিছানায় অন্ধকারে পাশাপাশি শুয়ে

একে অপরকে খুঁজে বেড়ায়…

 

শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২

বিশ্বজিৎ রায়-এর কবিতা

নতুন দিশা 

ধরো, কোথাও কোনো সংগীত  নেই
ধরো,  কোথাও কোনো পাতাঝরাশব্দও নেই –––
 তখন দু-দণ্ড  চুপচাপ 
 কোনো নদীর ধারে বসে থাকো, অথবা 
একদৃষ্টে চেয়ে থাকো উঁচু কোনো বৃক্ষের দিকে –––
বেশ কিছুক্ষণ পর তোমার প্রার্থীত সংগীত বা 
কবিতার  শব্দধুন তুমি শুনতে পাবে 
বহুদূর থেকে ভেসে আসা মৃদু ঘন্টাধ্বনির মতো .... 

ধরো, পৃথিবী থেকে ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে মায়া,
পরিযায়ী পাখিরা উড়ে গিয়ে বাসা বাঁধছে 
চেনা দেশ ছেড়ে অন্য কোনো দেশে,
তুমি বুঝতে পারছো কোথাও কোনো একটা 
অদৃশ বদল ঘটছে –––
তখন নিজের ভেতর নিজেকে তুমি দেখতে শুরু করো,
মগ্ন হয়ে বসে থাকো তোমার অতল পৃথিবীতে ––– 
দেখবে, এমন এমন  অদ্ভুত-অচেনা জায়গায় 
ছড়িয়ে আছে তোমার ছায়া,  যা কল্পনাতীত,
যা তোমাকে  এক নতুন পথে মুক্তির দিশা দেখাবে ... 

 

সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১

বিশ্বজিৎ রায়-এর কবিতা

 

পাওয়া

সাদাপাতার ওপর দিয়ে
যে পিঁপড়ের দল হাঁটছিল,
ওদের অনুসরণ করতে করতে 
পৌঁছে গেলাম অচেনা এক গুহামুখে ---

'চিচিং ফাঁক ' বলে 
বন্ধ দরজা খুলতেই দেখলাম
ভেতরে বসে আছে আমার 
পূর্বজন্মের আত্মীয়স্বজন,  বন্ধুবান্ধব... 

শুক্রবার, ১ অক্টোবর, ২০২১

বিশ্বজিৎ রায়-এর কবিতা


আনন্দ

 

আহারে বসলাম----

সামান্য অন্ন শাকপাতা

দূরে কোথাও আলো বেজে উঠলো.... 

 

একটা কাঠবিড়ালি 

তুরতুর করে ছুটে এসে

শুনিয়ে গেল গোপন কিছু কথা---

 

একটা বন্ধ দরজা খুলে গেল

অনেকদিন পর....

বৃহস্পতিবার, ১ এপ্রিল, ২০২১

বিশ্বজিৎ রায়-এর কবিতা


 গল্প

তুমি যে রাস্তা খুলে দিলে

তার চারপাশে হাত বাড়িয়ে দিল অনেক উদ্ভিদ অক্সিজেন,

সেই রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে দেখলাম

বিজ্ঞাপনে আঁকা নানান সুখের গল্পমায়া-অহিফেন.....

 

সেই গল্পগুলি স্বপ্ন হয়ে জড়িয়ে ধরলো আমাকে,

আমলকি বনে গা এলিয়ে পড়ে থাকল তারা 

সারা ঋতু জুড়ে ---

গল্পের বুনোটে খাবি খেতে খেতে 

অজানা শঙ্কায় আমি

নিজের ছায়াকে  খুঁজতে থাকলাম ঈশ্বরের পদতলে....

 

প্রতিটা চৌমাথায় এসে দিক বদল করে

ঢুকে পড়লাম অন্য রাস্তায়,

প্রাচীন বট, নাটমঞ্চ, সবুজ ধানক্ষেতসবাই

অবাক হয়ে দেখতে থাকল  আমাকে---

মনে হল, চিনেও যেন ঠিক চিনতে পারলনা কেউ ...

 

একপা, দুপা করে আমি আবার  

ফিরে আসতে থাকলাম নিজের ভেতর.... 

 

সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

বিশ্বজিৎ রায়

 


নতুন কবিতা   

 

ভয়ঙ্কর ঝড়-তুফান  আর  খিদের বোবাযুদ্ধ নিয়ে

পার হয়ে  এলো  বিষাক্ত একটা  বছর –––

ছন্দহীন দিনগুলি পেরোতে গিয়ে কত শত গাছ 

নুয়ে পড়ল মাটিতে   

কত ঝলমলে ফুল ঝরে কাঠি হয়ে গেল

কত উচ্ছ্বল  ঝর্ণা শুকিয়ে

মৃতপ্রায়  হয়ে গেল মাত্র কয়েকদিনে   …

 

এসব দেখে আকাশ থেকে কোনো ঈশ্বর

নেমে এলেন না

খাবার জীবন দান  করতে –––

নুয়ে পড়া গাছগুলির ভাঙা ডালপালা  

ফ্যাকাশে হয়ে আসা ফুলগুলি,

শুকিয়ে  যাওয়া নদীগুলির জীবন পরিচর্যা করলেন

ওই মাটির পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ানো ঈশ্বরের দল –––

 

তাদের কোমল  স্পর্শে  যারা উঠে দাঁড়ালো

তারা পিছন ফিরে দেখতে পেল ফেলে আসা দিনগুলির

যন্ত্রণাময় ক্যালেন্ডার পেরিয়ে সা নতুন জীবন –––

যারা দাঁড়াতে পারলনা, তারা এটাও দেখতে পেলনা,

অত্যাশ্চর্য আলোয় প্রস্ফুটিত  হয়ে থাকা  

এক নতুন পৃথিবী, যেখানে পতপত করে উড়ছে

নতুন জীবনবোধের কবিতা