রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

রঙিন ক্যানভাস ।। বর্ষ ৪ ।। সংখ্যা ৩৬-৩৮ (অক্টোবর-ডিসেম্বর সংখ্যা) ।। অক্টোবর-ডিসেম্বর সংখ্যার প্রচ্ছদ {জন্মদিন সংখ্যা}


 

সম্পূর্ণ সূচি ১ (বর্ষ ৪ ।। সংখ্যা ৩৬-৩৮) [অক্টোবর-ডিসেম্বর সংখ্যা] {জন্মদিন সংখ্যা}


 

সম্পূর্ণ সূচি ২ (বর্ষ ৪ ।। সংখ্যা ৩৬-৩৮) [অক্টোবর-ডিসেম্বর সংখ্যা] {জন্মদিন সংখ্যা}


 

সম্পূর্ণ সূচি ৩ (বর্ষ ৪ ।। সংখ্যা ৩৬-৩৮) [অক্টোবর-ডিসেম্বর সংখ্যা] {জন্মদিন সংখ্যা}


 

সম্পাদকের নিবেদন


 সম্পাদকের নিবেদন

বিশ্বখ্যাত দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল। জন্ম ১৮৭২ সালে ইংল্যান্ডে। লিখেছেন বহু মননশীল বই। বইয়ের বিষয় ছিল শিক্ষা, বিজ্ঞান, গণিত, রাজনীতি, সমাজতত্ত্ব, ধর্মতত্ত্ব, দর্শনশাস্ত্র প্রভৃতি। দার্শনিক হিসেবে সমগ্র বিশ্বে সমধিক পরিচিত হলেও, গণিতবিদ হিসেবেও তাঁর বিশ্বখ্যাতি ছিল।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে শান্তিবাদীর ভূমিকার জন্য কারাদন্ডে দন্ডিত হোন। পারমানবিক নিরস্রীকরণের সপক্ষে তাঁর ছিল প্রতিবাদী সংগঠকের ভূমিকা। 

সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান ১৯৫০-এ। 

তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছেপ্রিন্সিপল্‌স্‌ অফ ম্যাথমেটিক্‌স্‌’, ‘প্রব্লেমস্‌ অফ ফিলজফি’, ‘দ্য .বি.সি. অফ রিলেটিভিটি’, ‘দ্য অ্যানালিসিস অফ ম্যাটার’, ‘পলিটিক্যাল আইডিয়ালস্‌’, ‘হিস্ট্রি অফ ওয়েস্টার্ন ফিলজফিপ্রভৃতি। 

রাসেল ভেবেছেন পৃথিবীতে মানুষের স্থান সম্পর্কে এবং কল্যাণময় জীবন অর্জনে তার সম্ভাবনা সম্পর্কে ভেবেছেন। মানুষ প্রকৃতির একটি অংশ। প্রকৃতি বিরুদ্ধ কোনও কিছু নয়। পার্থিব জগৎ সম্পর্কে কিছু বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন যে, মানুষের শরীর অন্যান্য পদার্থের মতো ইলেকট্রন, প্রোটনের মতো কণিকার দ্বারা সৃষ্ট। আবার আমাদের চিন্তা-চেতনা মস্তিষ্কের ভেতরেই বহুপথ পরিভ্রমণ করে, যেমন আমরা করে থাকি সড়ক রেলপথ। চিন্তা করার জন্য যে শক্তি ব্যবহৃত হয় তার উৎস হল রসায়ন। রাসেল উদাহরণস্বরূপ বলেছেন, কীভাবে শরীর আয়োডিনের অভাবে চালাক মানুষ নির্বোধে পরিণত হয়। 

সুন্দর জীবন সম্বন্ধে রাসেল বলেছেন, জ্ঞান ব্যতীত প্রেম বা প্রেম বাদ দিয়ে জ্ঞান ––– কোনোটাই সুন্দর জীবন সৃষ্টি করতে পারে না। তাই সুন্দর জীবন হল প্রেমের দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং জ্ঞানের দ্বারা পরিচালিত। 

মানুষকে মানবিক করে তুলতে হলে সাহসের গণতন্দ্রীকরণ আবশ্যক। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, নারীর ভোটাধিকার থেকে দেখা যাচ্ছে যে তাদের সাহস অদম্য সাহসী মানুষদের মতো বেড়ে গেছে। তাদের এই সাহসের প্রয়োজন ছিল। সাহস, তা যে ধরণেরই হোক, অর্জন করতে হলে প্রয়োজন সুন্দর স্বাস্থ্য, পর্যাপ্ত পুষ্টি এবং মৌলিক প্রাণোচ্ছল আবেগ।

রাসেলের ভাবনায় ––– যদি বিজ্ঞান চায়, তবে আমাদের আগামী প্রজন্মদের সুন্দর জীবন কাটাতে সক্ষম করে তুলবে, তাদের জ্ঞান এবং আত্মসংযমের দীক্ষা দিয়ে এবং বিরোধ সৃষ্টিকারী চরিত্রের পরিবর্তে মিলন সৃষ্টিকারী চরিত্র প্রদান করে।

রাসেল প্রয়াত হোন ১৯৭০- আটানব্বই বছর বয়সে। তিনি প্রতিনিধিত্ব করে গেছেন একটি শতককে। তিনি যে পৃথিবীর স্বপ্ন দেখে গেছেন তা নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। আগামী দিনেও থাকবে। তিনি চেয়েছিলেন সব রকম কুসংস্কার থেকে মানুষের মুক্তি। তিনি সবরকম যুদ্ধ, হানাহানি, হিংসা, এবং বৈষম্যের বিরোধী ছিলেন। তাঁর মতো মনীষী মহান মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছেন এবং থাকবেন ইতিহাসের পাতায়।

তাঁর জন্ম-সার্ধশতবর্ষে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই।


সকলে ভালো থাকুন।রঙিন ক্যানভাস’-এর জন্মদিন উপলক্ষ্যে সকল লেখক এবং পাঠককে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা অভিনন্দন। 


রোশনি ইসলাম

সোনালি বেগম

কবি মলয় রায়চৌধুরী-কে শ্রদ্ধাঞ্জলি

 



মলয়দা স্মরণে 


বিগত ২৯ অক্টোবর ২০২৩ ছিল প্রয়াত মলয় রায়চৌধুরীর ৮৫তম জন্মদিন। কিন্তু ৮৪ বছর অতিক্রম করে ৮৫ বছরে  পদার্পণের সুযোগ তাঁর হলো না। মাত্র তিনদিন আগে ২৬ অক্টোবর সকালে প্রয়াণ ঘটল তাঁর। বাংলা সাহিত্যে তিনি একদিকে নিরলসভাবে লিখেছেন কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, নাটক; অন্যদিকে অনুবাদ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন কবিদের কবিতাগ্রন্থ। তিনি ছিলেন আপাদমস্তক প্রতিষ্ঠানবিরোধী। সারাটা জীবন তিনি প্রাতিষ্ঠানিক সাহিত্যচর্চার বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে অপ্রাতিষ্ঠানিক সাহিত্যসৃষ্টি করে গেছেন। তাঁর লেখা যতগুলো বই প্রকাশিত হয়েছে, কোনো বাণিজ্যিক সাহিত্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত হয়নি। তাঁর কোনো লেখা কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সাহিত্য পত্রিকায় প্রকাশিতও হয়নি। তিনি লিটল ম্যাগাজিনে লিখতেন, অসংখ্য লিটল ম্যাগাজিনে সারাজীবন লিখেছেন। এবং এভাবেই  তিনি পৌঁছে গেছেন সাহিত্যের আন্তর্জাতিক স্তরে। তিনি বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতে লিখেছেন, অন্যান্য ভাষায় তাঁর লেখা অনূদিত হয়েছে, তাঁর সাহিত্যকর্ম নিয়ে বিভিন্ন দেশি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পি এইচ ডি- জন্য গবেষণা হয়েছে। তাঁর লেখকসত্ত্বা এতটাই অভূতপূর্ব বৈচিত্র্যপূর্ণ, যা নিবিড় পাঠ গভীর বিশ্লেষণের অপেক্ষা রাখে। এর  পাশাপাশি ১৯৬১ সালে হাংরিসাহিত্য আন্দোলনের যে সূচনা হয়েছিল, বাংলাসাহিত্যের  প্রথাগত বহমান ভাবনা, আঙ্গিক, শৈলী গঠনের শুধু বিরুদ্ধতা নয় বরং খোল নলচে বদলে দেবার জন্য আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন মলয় রায়চৌধুরী। পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাসাহিত্যে উত্তর-আধুনিকতার ওপর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। 


বলা বাহুল্য, তাঁর প্রয়াণে বাংলাসাহিত্যে অপূরণীয় শূন্যতা্র সৃষ্টি হলো। তাঁর স্মৃতির প্রতি জানাই আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা। 


তথ্যসংকলন : কাজল সেন