তৈমুর খান লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
তৈমুর খান লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

তৈমুর খান-এর কবিতা

কতদূর হেঁটে যাচ্ছ তুমি

এখনও তো চেরা দাগ বুকে 

যে রক্তে সিঁদুর এঁকে দিয়েছি সিঁথিতে 

এখনও রাত জেগে বসে আছি 

আমার স্মৃতির বারান্দাতে 


কতদূর হেঁটে যাচ্ছ তুমি 

আরও দূর চলে যাবে 

যার কোনও ইতিহাস হবে নাকো লেখা 

যেখানে সবাই মৃত, ঝরে পড়ে পাতা 


নিঃস্ব করতলে আলো ফোটে নাকো আর 

হলুদ বিকেলের চা আসে 

কেঁপে ওঠে হাত 

যদিও কোকিল ডাকে, বুঝি নাকো ভাষা 


হরিণ-হরিণী সব গভীর বনের দিকে যায় 

ফিকে চাঁদ কোলে নিয়ে রাত্রির আকাশ 

আমাকে কত তার গল্প শোনায় 

গল্পের কাছে বসে থাকি, নিঃশব্দে রাত পার হয় 



আর্তপ্রশ্ন


উজ্জ্বল অক্ষম লোভাতুর

এইখানে হীন আস্ফালন রেখে যায়

সিংহাসন নির্মাণ করে

শাসন করে

সম্রাট হয়


আমরা তাকেই সমীহ করতে শিখি

সমস্ত ভ্রমের আয়োজনে

শ্লোগানে শ্লোগানে

মুখর করি তার রাজধানী


অস্তিত্ব ডুবে যেতে থাকে

আমরা কি অমেরুদণ্ডী প্রাণী!



নিরুদ্দেশ

বাঁচার তাগিদ ছিল, অনেক তাগিদ থাকে

দূরের ধূসর বক ফিরে আসে বাড়ি


কথা ছিল, অনেক কথা থাকে

আততি লুকায় ফাগুন মাস অলির গুঞ্জনে


সারাদিন শূন্যের ফুটবল খেলি অন্যের বাগানে

মাঝে মাঝে বিরতি রচনা


এপাড়া ওপাড়া ঘুরে জীবনকে কোথাও পাওয়া যাবে না

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

তৈমুর খান-এর কবিতা

একটি জীবন, বহুরাস্তা

রাস্তা ঘুরে ঘুরে গেছে

অবসাদ ঢেকে দিচ্ছে বনজ্যোৎস্নায়

আমরা তবুও ক্লান্ত পরামর্শহীন

কোথায় চলেছি?


ঐতিহ্যের বহু দোকানে এখনও জ্বলছে আলো

বিজ্ঞাপন নেই

ভেতরে ভেতরে মানবিক স্বর, হয়তো কাঁপুনি

পুরোনো রীতিনীতি ডাকছে আমাদের


শীতের কাঁথা সেলাই করছে কেউ

কেউ যাচ্ছে জলের কাছে

কারও বুকে শুকনো নদী, শুয়ে আছে ঢেউ


পাশ ফিরছি

রাস্তা কত দূর?


একটি জীবন, বহু রাস্তা, অভিমান তবুও চুপচাপ

রাত কাটছে প্রহর গুনে, কমলালেবুর বন পেরিয়ে

যুবতী ঝরনার পাশে যদিও সকাল

আর সকালের আপেল বাগান


দ্বন্দ্বপীড়িত সবাই, কিছুটা দাম্ভিকও

নিরুচ্চারে সবাই গেয়ে চলেছি নিষিদ্ধ গান



সত্য

সত্য কিছুই নয়

দেখাও, না-দেখাও

বলাও, না-বলাও


মেঘ করে আছে, বৃষ্টি নামছে

মাঠে মাঠে উল্লাস চরছে


কে উল্লাস?


উল্লাস কেউ নয়

শুধু একটা মরমি পাখি বসেছে তার পিঠে

দোল খাচ্ছে


সত্য আসলে সত্যই

কিছুটা না-দেখা, কিছুটা ধারণা

 

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

তৈমুর খান-এর কবিতা

মৃত্যুগুলি

মৃত্যুগুলি সুন্দর ছিল না
 ভয়ঙ্কর কুৎসিত আর দুঃখে ভরা
 রক্তমাখা ঠোঁট, এলোমেলো হাত-পা
 সোনালি রঙের বিকেলে
 আর কোনো রাস্তা চোখে পড়ছিল না আমাদের

 শোকের পাথর কুড়াতে কুড়াতে
 ইহবিমুখ হয়ে যাচ্ছিলাম সবাই
 নীল আকাশে এক টুকরো সাদা রঙের
 রবার ঘষতে ঘষতে চলে যাচ্ছিল হাওয়া

 আমরা কোনো আকর্ষণীয় গল্পের কাছে যেতে পারিনি
 আমরা কোনো চায়ের আড্ডায় বসিনি
 আমরা পোশাকও পাল্টাইনি কেউ

 মৃত্যুরা চারিদিকে শিস দিচ্ছিল
 অন্ধকারের বিড়ালের মতো তাদের চোখ
 বারবার আতঙ্কিত করছিল আমাদের


কৃষক

মানুষকে বাঁচাবার এবং ভালোবাসবার 
                       ইচ্ছেগুলির জন্ম দিতে দিতে
                                                  চলে যাব
 শিল্প একটি শ্লোগান মাত্র
 এই এক টুকরো, কয়েকটি শব্দ
 বোধের তীব্র লাঙলে চাষাবাদ
 সহিষ্ণু আর অপেক্ষার বাতাসে
                                       নামুক অনুকম্পা;

 মধ্যরাত আগলে আছি
 সকাল ও সূর্যকে দিয়ে যাব
 আমার প্রাচুর্য সমূহ
 মানবিক দানার শস্যে পুষ্ট শিষগুলি
 মহাকালে আন্দোলিত হবে

 আমিও তবে মহাকালের কৃষক 

রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪

তৈমুর খান-এর কবিতা

আত্মজিজ্ঞাসা

আত্মজিজ্ঞাসার কাছে নেমে এসে বসি
 কে আছে আমার আর?
 এই আমি আমাকেই ছুঁই
 আমিই আমার বিশ্বাস

 ঝিলমিল রোদে আনচান মন
 নিজের কাছেই নিজের প্রশ্রয় অথবা শাসন
 দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে আজ আর লীলা নেই
 সব লীলা চলে গেছে সেই অতীত কমলের বনে

 চৈতন্যে উঠেছে হাওয়া
 হাওয়ায় উড়ছে ঐশ্বরিক গান
 আমি গান গাইতে পারি না
 কেঁপে উঠে আমার ভীরু কণ্ঠস্বর

 কোন্ উৎস থেকে তবে জেগে উঠি রোজ?
 আমিও কি নদীর মতো ঢেউয়ের সংঘাত পাই?
 ভাঙতে থাকি—ভেঙে ভেঙে বিচূর্ণ শাবক
 কেন মানুষ নই? আত্মজিজ্ঞাসা নিরুত্তর

 চারিপাশে ঘাতকের ছায়া
ভেসে ওঠে সফেদ কাফন
 স্তব্ধতারা অস্তিত্ব মোচড়ায়
 জীবনের স্বরলিপি ঝরে ঝরে পড়ে... 

 


দোকানি

কিছু কান্না আর দীর্ঘশ্বাস 
 শব্দের বয়ামে রেখে দিই
 আর দোকান চালাই আমি
 আমার আয়ুর পথের ধারে
 এই
      আমার
                সামান্য
                           বিপণি

 রাগ-বৈরাগ্য আর উদাসীনরা
 সবাই দোকানে আসে
 দুঃখ কেনে,আনন্দ কেনে
 বারবার আনন্দ ফুরিয়ে যায়

 রাতে কোনও কোনও বিহঙ্গ আসে
 বিহঙ্গরা ভীষণ অন্ধকার
 কেউ কেউ চাঁদ দ্যাখে
 কেউ কেউ অলীক জ্যোৎস্নায় লুটোপুটি খায়

 বিষণ্ন থালায় হাহাকার অন্ন বেড়ে দেয়
 স্বপ্নের তরিতরকারি, আকাঙ্ক্ষার পানীয়
 হয়তো পেট ভরে, হয়তো ভরে না
 কিছু উদ্যম জন্মায়, কিছু নিরুৎসুক কামনা

 একটা ঘরেরও দুয়ার নেই
 জানালাগুলিও ভাঙা
 যে যার মতন যাওয়া-আসা করে
 চেতনারা উলঙ্গ সব, চরিত্রহীনা

 দোকান চালাই আমি
 সারা দিনমান আমার ব্যস্ততা

বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৩

তৈমুর খান-এর কবিতা


 হাঁটতে বেরিয়ে

উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড আর মধুমেহ 

                                            নিয়ে

                        বেশিদূর হাঁটা যায় না

             মৃত্যুর ভাবনাগুলি কুকুর হয়ে

        দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়তে চায়



আমি অন্যদিকে তাকিয়ে থাকি

             শ্রাবণ মাসেও বৃষ্টি হলো না

 বিকেলগুলি আরোগ্যহীন 

     নষ্ট সভ্যতার বাঁশি বাজিয়ে      

                          চলে যাচ্ছে

                           রাত্রির দিকে         


শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২

তৈমুর খান-এর কবিতা

শিল্পী

  

 উপমা চুল খুলে এলে

 আমি ওর প্রেমে পড়ি,

 এই বসন্ত বাতাসে

 উড়ুক উড়ুক

          চুল তার

            উড়ে যাক অপার্থিব শাড়ি!



 শব্দের ঠোঁটে গান লেগে আছে

 ব্যঞ্জনার তবে কেন মাধুকরী?

  ছন্দ দোলাক মাজা

          উপলব্ধির আছে তীব্র তরবারি।



 এবার সঙ্গম হোক

 লীলাক্ষেত্রে বাজুক 

                 কাল্পনিক বাঁশি

   সম্মোহনের ভাষা হারিয়ে গেলে

  কাছে এসে ইঙ্গিতে বলুক: 

                      ভালোবাসি!

 

শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০২২

তৈমুর খান-এর কবিতা

মুখ

  

 পৃথিবীজুড়ে ধর্মরা ঘর বানাচ্ছে

 পৃথিবীজুড়ে মানবেরা মরে যাচ্ছে

 

বহুদিন পর কোনো প্রত্নসন্ধানী

 এই পথে আয়না নিয়ে এলে

 ইতিহাসেরা মুখ দেখবে:



কোথাও রক্তাক্ত মুখ

 কোথাও  বিদ্বেষের নৃশংস গর্জন

 

বুধবার, ১ জুন, ২০২২

এই সংখ্যার কবিঃ কবি তৈমুর খান

 


কবি তৈমুর খান

জন্ম​ :​ ২৮ জানুয়ারি ১৯৬৭, বীরভূম জেলার রামপুরহাট ব্লকের পানিসাইল গ্রামে। 


পিতা মাতা :​ ​জিকির খান নাওরাতুন। 

পড়াশোনা :​ ​বাংলা ভাষা সাহিত্য নিয়ে মাস্টার ডিগ্রি এবং প্রেমেন্দ্র মিত্রের কবিতা নিয়ে পি এইচ ডি প্রাপ্তি। 

 

পেশাউচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহ শিক্ষক  

প্রকাশিত কাব্য : কোথায় পা রাখি (১৯৯৪), বৃষ্টিতরু (১৯৯৯), খা শূন্য আমাকে খা (২০০৩), আয়নার ভেতর তু যন্ত্রণা (২০০৪), বিষাদের লেখা কবিতা (২০০৪), একটা সাপ আর কুয়াশার সংলাপ (২০০৭), জ্বরের তাঁবুর নীচে বসন্তের ডাকঘর (২০০৮), প্রত্নচরিত (২০১১) ইত্যাদি। 

 

পুরস্কার : নতুনগতি সাহিত্য পুরস্কারকবিরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার দৌড় সাহিত্য সম্মান। 






কল্যাণী

 

 আজ আর কল্যাণী নেই?

    শুধু তাকে ডাকি বারেবারে

          আমাদের শোকাবহ জুড়ে 

                  ভীরু তমসার গান ঝরে

 

কে দেবে আলো জ্বেলে তবে?

       সন্ধ্যার পানপাত্রে মদিরা ঢেলে

                       সাজাবে টেবিলে?

  আর সস্নেহ উষ্ণতার স্পর্শে জাগাবে!

 

আমরা সবাই কল্যাণ

      আমাদের ঘরকন্না জুড়ে 

                       থাকে কল্যাণী

              তার কাছে সান্ত্বনা পাই বলে

       আমরা এখনও আত্মহত্যা করিনি

 

কত সংকট আজ পার হচ্ছে যুগ

 আমাদের অসহায়তায় ডুবে যাচ্ছে চাঁদ

                        কল্যাণী দেখে  যাও

তোমার কল্যাণেরা আজ পুষেছে বিষাদ!



পাঠশালা

 

 প্রাচীন স্কুলগুলি স্মৃতির রোদ্দুরে জেগে আছে

 আমরা চট পেতে বসি বটের ছায়ায়

 নীলজামা গায়ে, দ্রুত পাখিদের আনাগোনা

 পর্যাপ্ত রঙের ভাষা মেলে দেয়;

 ভাষার সংস্কৃতি বোঝে নবীন সাধনা।

 

বর্ণপরিচয় হাতে ঈশ্বর দাঁড়ান

 ঈশ্বরের দীর্ঘছায়ায় আমরা মুগ্ধতা ভিক্ষা করি

 পাতা উল্টাই শুধু

 জীবনখাতায় ছবি আঁকি

 

 কত ছবি!

 ছবিরাও প্রাণ ফিরে পায় রোজ

 পাঠশালা হেসে ওঠে; আর সব প্রাচীন পদ্ধতি।



ঝড়

 

 ঝড় আসছে।

 আমরা মরুর উট। কথা বলি না। চেঁচাই না।

 ঝড় সামলে নিই বালিতে মুখ গুঁজে।

 যারা ঝড় আনছে তারাই শুধু চেঁচাচ্ছে।

 আতঙ্ক ছড়াচ্ছে আর নিয়ত বাঁশি বাজিয়ে দিচ্ছে।

 কোলাহলে কোলাহলে একটা দেশ 

           ক্রমশই দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে কেবলই।

 

দেশের বসন্তকে শুষে নিচ্ছে গ্রীষ্ম।

 দেশের শরৎকে ঢেকে দিচ্ছে শীত।

 বর্ষা আনছে দুর্যোগের মেঘ। ঘন কালো মেঘ।

 ঘনঘন বজ্র ছুঁড়েছে এসে।

 

 কার কী সফলতা এখন?

 ভাবতে ভাবতে রাত নামছে। 

 বার্ধক্য এসে পিঠে বসছে আমাদের।

 কয়েকটি মরুর পাখি উড়ে যাচ্ছে আকাশের দিকে।

 আমরাই শুধু বাকি যৌবনটুকু 

           দিয়ে যেতে চাই মরু সভ্যতাকে।

 

 যারা ঝড় আনছে তারা কেউ সভ্য নয়

 যুদ্ধবাজ ধ্বংসকারী গভীর মিথ্যুক



খিদে

 

 পালাতে পারি না কোথাও

 আমি আমার ছায়া কাছাকাছি থাকি

 দুপুরে গরম ভাতের ঘ্রাণ এলে

 খিদে পায়

 রোজ রোজ খিদে পায় শুধু!

 

 এই পুকুরের ঘাটে দু'দণ্ড বসি

 বহু পুরনো সিঁড়িতে দেখি নূপুরের শব্দ লেগে আছে

 আলতা পরা খালি পা কার উঠানামা করে?

 

 দুয়ার খোলা আছে

 বাগানের হাওয়া আসছে বসন্তের আমন্ত্রণ নিয়ে

 সব কুঁড়ি ফুটবে এবার অনুরাগের পরশ পেয়ে!

 

 পালাতে পারি না,

 মাঝে মাঝে কোকিলের মতো ডাকি

 কেন ডাকি?

 আমার ছায়াটি বোঝে সব, শুধু আমিই বুঝি না;

 

 আমার শুধু খিদে পায়

  আর এক অন্য খিদে

খিদের আগুনে হৃদয় সেঁকি!


প্রস্তুতি

  

 তোমার আঁচলে কত নক্ষত্র ফুটেছে

 বিচিত্র আলোর ঝিকিমিকি

 আমি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখি!

 

ওখানে হৃদয় রাখবো তোমার আলোয়

 ওখানেই রেখে দেবো আমার বাঁশির সুর

 ওখানে কখনো হবে না অন্ধকার!

 

শুধু রাত্রির সন্তান হয়ে বেঁচে থাকা যায়?

 মাইল মাইল রাস্তা হেঁটে জীবনের আয়ু হলো ক্ষয়

 অন্ধকারে নিজেকেও বিশ্বাসঘাতক মনে হয়

 

সারারাত যদিও জেগে থাকি

 সারারাত যদিও নক্ষত্রফুল কুড়াই

 তবু এক উজ্জীবনের ডাক আসে শুনি

 

 দীর্ঘশ্বাসগুলি লুকিয়ে ফেলি

 আর তৃষ্ণাগুলি অস্বীকার করি

 গভীর নির্জনে একা চুপি চুপি যাই



এই জন্ম

 

 যে শব্দ গান হয়নি

    আমি সে শব্দের কাছে যায়নি কোনোদিন;

 যে মেঘ বৃষ্টি দেয়নি

     আমি কি সেই মেঘের কাছে গেছি?

 আমার শস্যের ক্ষেতে শব্দ আর গান

 আমার মাথার ওপর মেঘ আর বৃষ্টির সম্মোহন।

 

 এই জন্ম শুধুই বাঁশি

  জীবন শুধুই ভেজা ভেজা অভিমান

 

 দুপুর বিকেল হয়ে আসে

 বিকেল রাত্রির ডাক পায়

 গেরুয়া আলোর পথে নামে রাঙাচেলি

 রাত্রিতে হেসে উঠবে অদ্ভুত জ্যোৎস্নায়!

 

 বিশ্বাসের ধ্বনিগুলি বেজে ওঠে

 অলৌকিক সমুদ্রের নৌকাগুলি ছেড়ে যায়

 একে একে সমস্ত নাবিকেরা সাদা পোশাক পরে

 আমিও ধূসর গন্ধ মুছে ফেলি মনে মনে

 

 উপলব্ধির সব জানালায়

 আমার আসক্তি তীব্র হলে

 আবার আবার মেঘ জমে

 শব্দেরা গান হয়ে ফেরে।



পাটনি কথিত

 

 ওগো নদী, আমি চলে যাচ্ছি

 আর ফিরবো না কোনোদিন

 আমার নৌকা ভাসিয়ে দিলাম

 

এখন আমি বিপন্ন স্মৃতির ভেতর

 বানিয়ে নিয়েছি ঘরবাড়ি

 এখন কান্নার জলের পুকুরে স্নান সারি

 

বহুদিন দেবী আসে না আর

 গাড়ি চেপে চলে যাচ্ছে সব দেবী

 সেতুর বাঁধনে বন্দি সব নদী সভ্যতার

 

কার স্পর্শে কে-বা সোনা হয়

 কার বরে কাদের সন্তান দুধ-ভাত খায়

 কিছুরই হিসেব জানা নেই তার

 

শুধু পতাকা উড়ছে চারিদিকে

 হানাহানি আর কুৎসার গানে হাততালি

 সব রাস্তা জুড়ে নেমেছে বাহিনী

 

এই পথে কবে আসবে আবার

আমাদের নবজন্মের বিদ্যা সুন্দর?

ছেঁড়া অন্নদামঙ্গল হাতে দাঁড়িয়ে আছে রায়গুণাকর!


বিশ্বাস

    

 আমরা বিশ্বাস পুষে রাখি

 বিশ্বাস এসে আলো জ্বালে

 আলোকিত ঘরে

 আমাদের শিশুরা চাঁদ দ্যাখে।

 

 চাঁদ কি টিপ দিয়ে যায়

 তাদের কপালে?

 

 দুধ নেইদুধ খাওয়ার বাটি নেই

 তবুও বিশ্বাস আছে আমাদের।