মহুয়া দাস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
মহুয়া দাস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

মহুয়া দাস-এর অনুবাদ কবিতা

মার্লিন পাসিনি

বৃষ্টি

কোন কিছুই নীরব নয় এখন। 

এখানে এই শহরে
গ্রীষ্ম আসছে, 
এবং তারপর বৃষ্টির গান, 
বর্ষণমুখরিত সঙ্গীতে 
নিজের চলার পথ ভিজিয়ে নেওয়া। 

চারদিকে নানা অনিশ্চয়তা
এই মুহূর্ত সত্যিই ক্ষণস্থায়ী, 
সময় বড় অল্প।  
ঝড়ের মাঝে তিরতির কাঁপতে থাকা 
এক কালো প্রজাপতির মতো 
জীবন কম্পমান। 
দীর্ঘকাল ঘুমোতে পারি নি, 
অনিদ্রা ঘিরে ধরেছে আমাকে। 
তারই মাঝে কখন যেন
নিঃসাড়ে ছায়ার মতো
ঘুম এল চোখের পাতায়। 
ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছি
দীর্ঘ ঘুমের মধ্যে।


[কবি পরিচিতি: মার্লিন পাসিনি মেক্সিকোর একজন বিশিষ্ট কবি, লেখক, প্রকাশক, সংকলক, চিত্রকর( visual artist), মনোবিদ, মিশরীয় পুরাতত্ত্ববিদ। শুধু তাই নয়, তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য সংস্থা, যেমন, ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম অফ মরক্কো, ভয়েস অফ পিস, আফগানিস্তান, ইউনেস্কো, মেক্সিকান অ্যাকাডেমি অফ মডার্ন লিটারেচারের সম্মাননীয় দূত ও প্রতিনিধি। মার্লিনের লেখা গভীর ও মনোমুগ্ধকর। তাঁর লেখার পাঠক দেশবিদেশের সর্বত্র  ছড়িয়ে রয়েছে। সম্প্রতি তাঁর সঙ্কলিত গ্রন্থ  "Consciousness and art transformation" জনসমাদৃত।]

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

মহুয়া দাস-এর অনুবাদ কবিতা


প্রেইস এম কে এনখোমা

অক্ষম কবি

গত গ্রীষ্মের কথা। 
দুঃখের প্রাচীর আমার সামনে দাঁড়িয়ে, 
তবু আমি আমার জোয়াল টেনে চলেছি। 
যন্ত্রণায় নীল হয়ে ওঠা গলার কষ্টগুলো
আমি গিলে ফেলেছি অবলীলায়,
ভিতরে জেগে ওঠা নরককে ও তার
সমস্ত কষ্টকে আমি নিভিয়ে ফেলেছি। 

প্রত্যয়ের প্রতিটি সুতোকে 
আমি আপ্রাণ চেয়েছি, 
এবং হয়ে উঠেছি তার সূক্ষ্মতম তন্তু। 
যত রকমের রং আমি দেখেছি
অনুভব করেছি চলার পথে, 
সব রকমের আঘাত থেকে
নিজেকে সরিয়েছি কোনরকমে, 
আড়ম্বরপূর্ণ পথের পাশে 
নাচতে চেয়েছি কি মহিমায়! 
কিন্তু হায়! 

সমালোচনা এসেছে, আসবেও
আমি হেসেছি, কি করে আঙুল বাঁকাতে হয় শিখেছি, 
এবং শিখেছি চামচ ধরতে, 
সেটা আর কিছু নয়, আমার কলম। 
ফাঁপা সব অনুভূতিকে, 
আমি বিসর্জন দিয়েছি 
কিছু সত্যির জন্যে। 

সব চোখ আমার দিকে চেয়ে 
থমকে গেছে, 
তবে আমি পাথরের মূর্তি নই, 
"আমি এক নিরক্ষর কবি, 
যে শুধু লিখতে চায় তাদের জন্যে
যারা কবিতা পড়ে না, 
আমি কৃষিকাজ জানা কবি, 
যার চোখ থাকে বইয়ের ছবিতে", 
সুতরাং আমি মঞ্চ ছেড়ে দিলাম।


[প্রেইস এম কে এনখোমা একজন অতুলনীয় কবি ও লেখক, যিনি বাস করেন দক্ষিণ পূর্ব আফ্রিকার মালাউইয়ে। মালাউই পাহাড় ও জলরাশিতে ঘেরা এমন একটি স্থান, যাকে ঘিরে রয়েছে জাম্বিয়া, ইউনাইটেড রিপাবলিক অফ তানজানিয়া এবং মোজাম্বিক। এখানকার মূল ভাষা নিয়াঞ্জা, যা চেওয়া নামেও পরিচিত ও ইংরেজি। আরও প্রায় দশটি স্থানীয় ভাষা এখানে আছে। প্রেইস এম কে এনখোমা মূলত ইংরেজি ভাষাতেই তাঁর লেখাগুলি লেখেন। এই তরুণ কবির লেখা কাব্যগ্রন্থ "Eyes glazed with love" অসাধারণ একটি কবিতা সংগ্রহ। এই তরুণ কবি 'গ্লোবাল প্যাসনেট রাইটার্স' নামের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সহ প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর অসাধারণ কবিতা ও গদ্যের জন্যে অসংখ্য পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।] 

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

মহুয়া দাস-এর কবিতা

পঁচিশে বৈশাখ

বৈশাখের খরতাপে জেগে ওঠো ওই, 
জন্মক্ষণ কথা বলে ওঠে। 
সামগান আর পাতা খসার আওয়াজ 
চেনা সুরে বেজে ওঠে কি পবিত্র! 
আশ্রম সেজে ওঠে সবুজের গানে, 
 কত শতসহস্র ফুলের প্রস্ফুটনে। 
দেখি তুমি ওই দীর্ঘ শালপ্রাংশু দেহে
 হেঁটে যাও 'উদয়ের পথে'। 
তোমার গান কন্ঠে নিয়ে হেঁটে যায়
তরুণ তরুণী, 
ওই লাল পথে আজও। 
পঁচিশে বৈশাখ এসেছিল
তোমারই গান গেয়ে, 
সেই গান বুকে ধরে
আজও সগৌরবে পথ চলে
 গোয়ালপাড়া থেকে জোড়াসাঁকো। 
আমারও মুক্তি মেলে নি
তোমাকে ছাড়া, 
তোমাকে পরমপিতা জেনে
সন্তানকে দিয়ে যাই খোয়াইয়ের তারা
আর হৃদয়ের গান যত। 
তোমার চোখে ভোরের মায়া ফুটে ওঠে, 
ভোরের চোখে ভেসে ওঠো তুমি। 
আমি আভূমি প্রণত থাকি
আজীবন তোমারই কাছে, 
চিরসখা, হে আমার।

 

রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪

মহুয়া দাস-এর অনুবাদ কবিতা

মায়া অ্যাঞ্জেলো 

তবু আমি জেগে উঠি

তোমার তিক্ত ও মিথ্যে অক্ষর
আমাকে নীচে নামাতেই পারে, 
আমাকে গ্লানির স্তুপে ধ্বংসও করতে পারো তুমি, 
কিন্তু, জেনো, ধুলোর মতো আমি ঠিক জেগে থাকব। 

আমার সাহসী ও দুর্বিনীত সত্তা কি তোমাকে অসুবিধেয় ফেলে? 
তুমি বিষাদে ডুবে যাও কেন? 
আমার দর্পিত চলাফেরা দেখে মনে হতেই পারে আমি তেলের খনির মালিক। 

চাঁদ ও সূর্যের নির্দিষ্ট জোয়ার ভাঁটার মতো, 
ঊর্ধ্ব উত্তোলিত আশার মতো
আমি জেগে উঠি। 

আমার ভেঙে পড়া চেহারা কি দেখতে চাও? 
নত শির এবং নামানো চোখ? 
অশ্রুবিন্দুর মতো ঝুলে থাকা কাঁধ, যা আমার আত্মার ক্রন্দনে দুর্বল? 

আমার ঔদ্ধত্য কি তোমার খারাপ লাগে? 
এটাকে ভয়ঙ্কর কঠিন ভেবে নিও না। 
কারণ আমি এমনভাবেই হাসি যেন আমার বাড়ির পেছনের বাগান খুঁড়ে, 
সোনার খনির খোঁজ এনেছি। 

তুমি আমাকে তোমার কথার বাণে 
বিদ্ধ করতেই পারো,
দৃষ্টিতে আমাকে ফালাফালাও করতে পারো, 
তোমার ঘৃণায় আমাকে খুন করতেই পারো, 
কিন্তু দেখো, বাতাসের মতো আমি ঠিক জেগে উঠব। 

আমার আবেদন কি তোমাকে পীড়া দেয়? 
এটা কি এক চমক? 
আমি নাচতে থাকি যেন
ঊরুসন্ধিতে এক হিরে খুঁজে পেয়েছি। 

ইতিহাসের ঘৃণিত অধ্যায় থেকে আমার জন্ম, 
যার শিকড় নিহিত বেদনাময় অতীতে , 
আমি এক বয়ে চলা বিস্তৃত কৃষ্ণসাগরের বুকে 
ঢেউয়ের উথালপাতালে হাবুডুবু খেয়েছি, 
পেছনে পড়ে রয়েছে কত যে ভয়ের রাত, 
অবশেষে এসেছে এক অবিশ্বাস্য সুন্দর ভোর, 
যেখান থেকে আমার চমকপ্রদ জাগরণ। 
এ যেন আমার জন্যে বয়ে আনা পূর্বপুরুষদের উপহার, 
আমি ক্রীতদাসদের স্বপ্ন ও আশা। 
আমি জেগে উঠি, 
জেগে উঠি, 
জেগে উঠি। 


[মায়া অ্যাঞ্জেলো ছিলেন একজন আমেরিকান কবি, সঙ্গীত শিল্পী, আত্মজীবনী লেখিকা এবং নাগরিক অধিকার আন্দোলনের একজন কর্মী। তিনি দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে সাতটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ, তিনটি প্রবন্ধ ও কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ লিখেছেন এবং বেশ কিছু মঞ্চ নাটক, সিনেমা এবং টেলিভিশন শো-এর সাথে যুক্ত ছিলেন।]

রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

মহুয়া দাস-এর অনুবাদ কবিতা

মার্লিন পাসিনি 


বড় স্বপ্ন

শুরু থেকেই একসাথে চলা

এক পথের স্বপ্নে

যে স্বপ্নের পথে 

উন্মুক্ত বিশালতা এবং তারাদের গান। 


আমাদের মধ্যে সব আছে

তোমার আমার মধ্যে সবকিছুই

আবার যেন কিছুই নেই

সবকিছুর শুরু শেষ

সবই ছিল এবং আছে। 


একই নৃত্যের রসায়নে

আমরা আমাদের পা ফেলি একসাথে

শাশ্বত কুয়াশার মধ্যে 

যে জ্যামিতিক পবিত্র বুনন

তা বিশ্বকে রূপান্তরিত করে। 


তারার বনের সুবাস

আমরা অন্তরঙ্গ বিশুদ্ধতায় মহত্ত্বে অনুভব করি। 

আমাদের স্বপ্ন এবং সত্য

যা বিদ্যমান

মহাবিশ্বের হৃৎস্পন্দনের মধ্যে তা 

চিরন্তন, চিরকালের।


[মার্লিন পাসিনি মেক্সিকোর একজন বিশিষ্ট কবি, লেখক, প্রকাশক,সংকলক, চিত্রকর (visual artist), মনোবিদ, মিশরীয় পুরাতত্ববিদ। শুধু তাই নয়, তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন  উল্লেখযোগ্য সংস্থা যেমন, ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম অফ মরক্কো, ভয়েস অফ পিস, আফগানিস্তান, ইউনেস্কো, মেক্সিকান অ্যাকাডেমি অফ মডার্ন লিটারেচারের সম্মাননীয় দূত ও প্রতিনিধি। মার্লিনের লেখা অপূর্ব ও মনোমুগ্ধকর। তাঁর লেখার পাঠক দেশবিদেশের সর্বত্র। সম্প্রতি তাঁর সংকলিত গ্রন্থ "Consciousness & art transformation" জনসমাদৃত।]

সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

মহুয়া দাস-এর কবিতা

 অসুখ

জারবেরা ফুলের মতো সোজা দাঁড়িয়ে
প্রতিরোধ, করি তো তোমাকে।
আগলাই, জল‌ দিই, পুষ্টি,
আরও কত কিছু।
কি অসুখ এ তোমার বাকলে?
চেতনা হারিয়ে দুর্বোধ্য হও বারবার।
এ কি পূর্বজন্ম থেকে এসেছে ফিরে?
আকাশ ভাবি, পাতাল ভাবি,
কর গুণে গুণে সময় দেখি।
এ রাক্ষসজন্ম কে দিল তোমায়? হে বৎস,
পিতা? নাকি তাঁরও পূর্বের কোন রাক্ষসসম প্রাণ?
আর ডিম ফুটতে দেবো না,
কাঙাল হবো না, 
নির্বোধ হয়েও‌ কিবা লাভ বলো?
কঠিন পাটাতনের মতো হবো এবার।
মাখনের মতো গলতে চাইলে মন
শাসনে শাসনে নির্লিপ্ত করে দেব
যত ইচ্ছেগাছ।
এই যে চেতনা যত লুপ্ত হয়ে আসে,
বলো কোন মহৌষধি সারাবে রোগ তোমার?
মাঝেমাঝে মনে হয় সব শেষ বুঝি,
সান্ত্বনা নামে কোনো শব্দ বেঁচে নেই।
পরের দিন আচম্বিতে কে এক পাখি
তবু জানলায় এসে বসে, বলে,
'ওঠো,জাগো,
বিষণ্ণতা ধরে নাড়া দাও অসীমে।'
ভয়ের মতো শীত কিংবা শীতের মতো ভয়
ঠেলে উঠি অবশেষে, 
অলৌকিক প্রেত যেন এক।
এদিক ওদিক হাত পেতে 
চেয়ে নিই সাহস। 
আগলাতে তো হবেই।
 আত্মজ সে।

 

শুক্রবার, ২ জুন, ২০২৩

মহুয়া দাস-এর কবিতা

ঢেউ

সারারাত মনে হয় বসে থাকি ওই জলের ভেতর
আকাশে চাঁদ না মেঘ কারা ওই ভেসে যায়, 
পায়ের থেকে সামান্য দূরে 
আছড়ে আছড়ে পড়ছে ঢেউ। 
কে যেন মুক্তোর মালা হাতে চলে গেল দূরে, 
 উটের পিঠে পুরনো দম্পতির 
প্রেম প্রেম খেলা। 
নতুন প্রেমে যারা মগ্ন
তারা বালি নিয়ে আঁকিবুকি কাটে, 
নামের পিছে নাম 
আরও কত নাম, 
ভেসে যায় সমুদ্রের জলে। 
আমি যার হাত ধরে বসে আছি
তার চোখ কোথায় ভেসে গেছে, 
জল থেকে খুঁজে আনবো নাকি? 
আমিও ভাসিয়ে দিই আমার চোখ। 
মাছধরা নৌকো কুপি জ্বেলে
চোখের পিছনে পিছনে চলে। 
সমুদ্রের সামনের চেয়ারেরা মহার্ঘ্য হয়ে ওঠে রাতারাতি। 
ভাড়া আকাশপ্রমাণ হোক আগে, 
তারপর ঝিনুক খুঁজে খুঁজে
পায়ে পায়ে ফিরবো 
হোটেলের ঘরে।

 

রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩

মহুয়া দাস-এর অনুবাদ কবিতা

সানগ্রে হ্যান



ফুলের হাসি
এক জাপানি বন্ধুর 
হঠাৎ জিজ্ঞাসা,
ঐ অক্ষরগুলোর মানে বলতে পারো?
অক্ষরগুলো হাসছে কিন্তু,দ্যাখো।
চেয়ে দেখি সেখানে এক ফুল।

ফুলের দোকানের কাচের দরজা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে,
হাসছে এক ফুটন্ত ফুল।
সেখানে আরও অনেক ফুল
নজর কাড়ছিল,
নানা প্রজাতির।
দরজার বাইরে লেখা ফুল শব্দটি
ফুলেরই মতো উজ্জ্বল, হাসছিল।

প্রত্যেকটি পাতায় পাতায় যেন ফুলের আলিঙ্গন।
তাদের মুখে অন্য কিছু নয়,
শুধুই হাসি।
আরও হাসিতে পূর্ণ হয়ে উঠুক তারা।

এক স্মিত ফুল কখনো কি দুঃখী হতে পারে!

আমি তোমাকে এক চলন্ত গাড়িতে দেখতে পেলাম,
এক পলকের জন্যে।
একটি ফুল যেন অন্য ফুলকে দেখছে।
ফুল দেখে তোমার মুখে 
যেন হাজার ফুলের হাসি।

এই সুন্দর ফুলের মতো হাসি
তোমার মুখে চিরকাল থাকুক।
তোমার মুখে যেন দর্জি 
তার নিপুণ হাতে 
ফুলের শরীর ফুটিয়ে তুলেছে।
এ তো ফুলই।
সত্যিই এক সুন্দর ফুল।


আমার স্বপ্নই আমার ভুল

স্বপ্ন দেখা আমার ভুল হয়েছিল, 
ভেঙে পড়া সেই রাজ্যের পিছনের বাগানে 
কত ফুল ফুটে আছে
তবু রাজতন্ত্রের ক্রুরতা সেখানে স্পষ্ট। 
এখানে কখনোই ছিলাম না, 
আদিম সব রং ফুটে আছে এখানে
এ যেন চলচ্চিত্রে দেখা আশ্চর্য  সব রঙের উন্মীলন। 
সিনেমাস্কোপ যেন। 

ক্যালিডোস্কোপের স্মৃতি আনে মনে, 
বাওবাব গাছ কেন তার 
মাথা আর ডালপালা
 আকাশের দিকে তুলে দাড়িয়ে? 
দিনরাত সে কোন স্বপ্নে বিভোর? 
মনে হয় স্বপ্নের কোষে কোষে
পৌঁছে গেছে তার ইচ্ছেরা, 
বাতাসের মাঝে ভেসে ভেসে। 

না, তাও নয়। 
এটা তার দোষ যে, সে, 
মাটিতে নিজেকে প্রতিস্থাপিত না করেই, 
আকাশে পৌঁছনোর স্বপ্নে বিভোর ছিল, 

যদিও আমি তার ছায়া হারিয়েছি, 
তার সমগ্র জীবনের প্রকাশ ঘটে গেছে ইতিমধ্যেই।

 

[সানগ্রে হ্যান ১৯৫৫ সালে কোরিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন কবি, রচনাকার, অনুবাদক (জাপানী-কোরিয়ান)। সহকারী অধ্যাপক । তিনি সেজং বিশবিদ্যালয়ে জাপানি ভাষা ও জাপানি সাহিত্যের প্রধান ছিলেন। তাঁর কাজের জন্যে তিনি কবিতা ও  সচেতনতা বিষয়ক নবাগত পুরস্কার, কোরিয়া থেকে হিওনান্সিওলহিওন সাহিত্য পুরস্কার এবং জাপান থেকে সিতোসোজো পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি অনেক জাপানি সাহিত্যকর্ম কোরিয়ান ভাষায় এবং  কোরিয়ান সাহিত্যকর্ম জাপানি ভাষায় অনুবাদ করেছেন। এই কাজে কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কাব্যিক সংকলন, শিশুদের বই, আত্ম প্রতিরোধের বই ও বিজ্ঞানের বই রয়েছে।]