রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪

মহুয়া দাস-এর অনুবাদ কবিতা

মায়া অ্যাঞ্জেলো 

তবু আমি জেগে উঠি

তোমার তিক্ত ও মিথ্যে অক্ষর
আমাকে নীচে নামাতেই পারে, 
আমাকে গ্লানির স্তুপে ধ্বংসও করতে পারো তুমি, 
কিন্তু, জেনো, ধুলোর মতো আমি ঠিক জেগে থাকব। 

আমার সাহসী ও দুর্বিনীত সত্তা কি তোমাকে অসুবিধেয় ফেলে? 
তুমি বিষাদে ডুবে যাও কেন? 
আমার দর্পিত চলাফেরা দেখে মনে হতেই পারে আমি তেলের খনির মালিক। 

চাঁদ ও সূর্যের নির্দিষ্ট জোয়ার ভাঁটার মতো, 
ঊর্ধ্ব উত্তোলিত আশার মতো
আমি জেগে উঠি। 

আমার ভেঙে পড়া চেহারা কি দেখতে চাও? 
নত শির এবং নামানো চোখ? 
অশ্রুবিন্দুর মতো ঝুলে থাকা কাঁধ, যা আমার আত্মার ক্রন্দনে দুর্বল? 

আমার ঔদ্ধত্য কি তোমার খারাপ লাগে? 
এটাকে ভয়ঙ্কর কঠিন ভেবে নিও না। 
কারণ আমি এমনভাবেই হাসি যেন আমার বাড়ির পেছনের বাগান খুঁড়ে, 
সোনার খনির খোঁজ এনেছি। 

তুমি আমাকে তোমার কথার বাণে 
বিদ্ধ করতেই পারো,
দৃষ্টিতে আমাকে ফালাফালাও করতে পারো, 
তোমার ঘৃণায় আমাকে খুন করতেই পারো, 
কিন্তু দেখো, বাতাসের মতো আমি ঠিক জেগে উঠব। 

আমার আবেদন কি তোমাকে পীড়া দেয়? 
এটা কি এক চমক? 
আমি নাচতে থাকি যেন
ঊরুসন্ধিতে এক হিরে খুঁজে পেয়েছি। 

ইতিহাসের ঘৃণিত অধ্যায় থেকে আমার জন্ম, 
যার শিকড় নিহিত বেদনাময় অতীতে , 
আমি এক বয়ে চলা বিস্তৃত কৃষ্ণসাগরের বুকে 
ঢেউয়ের উথালপাতালে হাবুডুবু খেয়েছি, 
পেছনে পড়ে রয়েছে কত যে ভয়ের রাত, 
অবশেষে এসেছে এক অবিশ্বাস্য সুন্দর ভোর, 
যেখান থেকে আমার চমকপ্রদ জাগরণ। 
এ যেন আমার জন্যে বয়ে আনা পূর্বপুরুষদের উপহার, 
আমি ক্রীতদাসদের স্বপ্ন ও আশা। 
আমি জেগে উঠি, 
জেগে উঠি, 
জেগে উঠি। 


[মায়া অ্যাঞ্জেলো ছিলেন একজন আমেরিকান কবি, সঙ্গীত শিল্পী, আত্মজীবনী লেখিকা এবং নাগরিক অধিকার আন্দোলনের একজন কর্মী। তিনি দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে সাতটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ, তিনটি প্রবন্ধ ও কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ লিখেছেন এবং বেশ কিছু মঞ্চ নাটক, সিনেমা এবং টেলিভিশন শো-এর সাথে যুক্ত ছিলেন।]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন