রহিত ঘোষাল লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
রহিত ঘোষাল লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

রহিত ঘোষাল-এর কবিতা

নোনা জলের দুর্গম পথ

বৃষ্টির সাথে যে হাওয়া আসে তার কিছুটা রুমালে জড়িয়ে
আমি সাগরের মোহনায় একটি ছোট নৌকায়
শেষ জনমানব অধ্যুষিত দ্বীপ থেকে দূরে।
আরো দূরে চলে যাচ্ছি। 
নোনা পানির জীবন 
আর রূপালি চাঁদ সম্বল
ডিঙি নৌকা থেকে বড়শি জেলেরা 
শুভেচ্ছা বিনিময় করে চলে যায়,
দু'ধারের চর থেকে কেওড়া গাছেরা মাথা নুইয়ে কুর্নিশ জানায়,
মৌয়ালদের গা ছমছমে বর্ণনায় উঠে আসে ধোঁয়ার মতো সচেতনতা,
আরেকটু কান পাতলে শোনা যাবে
মাঝি বউয়ের চঞ্চল মনের দোয়া-দুরুদ,
আকাশে বিপদের সংকেত ঘন কালো হয়ে এলে
ছোট ছোট স্রোত গুলো ঢেউয়ে পরিণত হয়,
                     গহীন জঙ্গল থেকে রূপকথারা
জলদস্যুর চকচকে বন্দুকের নলের মতো ঝিলিক দিয়ে ওঠে । 
আরো অজস্র  উৎপীড়ন ফেলে আমি ভেসে যাচ্ছি,
কথিত আছে নীল সমুদ্রে রঙিন মায়াবিনীদের 
কাছে সাত রাজার ধন আছে,
আমি তার সন্ধানে চলেছি,
এই গোটা মরসুম আমাকে খুঁজো না,
সৈকতে যে বিষধর মরা সাপ দেখতে পাবে
কাঁকড়ার দাঁড়াতে যে উৎকণ্ঠা দেখতে পাবে
ঘাই জালে আটকে পড়া মাছের ছটফটানিতে দেখতে পাবে 
আমি প্রত্যেকের জন্যই কিছু বার্তা পাঠিয়েছি,
আর বুঝেছি জীবিকার পেটে তলিয়ে গেছে অনেক যৌবন। 

 

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

রহিত ঘোষাল-এর কবিতা

আলোর সংস্পর্শ

আর কেউ বারণ করে না তোমার মতো করে,
জলের দরে রক্ত, রক্তের দরে ঢেউ,
এইতো নিত্যদিন, তোমার ব্রত পালনের ফুল ফলমূল,
চোখে চোখে ভালবাসা-ভালবাসা, তুলকালাম,
বৃষ্টির মুখোমুখি আমাদের যোগ্যতা,
তোমার মতো করে সাবধান করে না কেউ আমায়,
আঁজলায় অঞ্জলির তাপ, মাস মাইনের ওইটুকু টাকা
তুমি না ভেঙেই  তুলে রাখো,
তোমার মতো খুঁটিনাটি নিয়ে কেউ থেকে যায় না,
দেখ শাখা প্রশাখায় আলো উড়ে বেড়ায়,
আরো কিছুক্ষণ থেকে যাও এখানে সহজ,
নিজস্ব আশা আকাঙ্ক্ষার থেকে দূরে
শুধু মুহূর্ত থেকে মুহূর্তের মধ্যেকার প্রেম।।

 

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

রহিত ঘোষাল-এর কবিতা

হাওরপাড়ের পিউম

সময় অসময় শান দেয় 
কিশোর কিশোরী, বাবুইয়ের বাসার 
মতো ওদের ঘর, ওদের স্বপ্ন জানে বন টিয়া,
মাটির তৈজস খালি, ঘুম থেকে উঠে 
জেনেছে দুজন, তারপর 
ওড়া হাতে গমমাড়াইয়ের কাজে বেড়িয়ে পড়েছে,
খেতজুড়ে ঘাম-রক্তের ছিটেন,
শামুকখোলা সাক্ষী।।

 

শূন্য সংশয়

কেন বেঁচে থাকতে হয় জানো?
ফোঁটা ফোঁটা জল শরীর ছুঁয়ে দেবে, অবিরাম,
ওয়াশপুরের এক মেয়ে তার ব্যক্তিগত ডায়েরি
যেদিন আমার হাতে তুলে দিয়েছিল
সেদিনই একটা লক্ষ্মীপ্যাঁচা প্রথমবার
আমাদের ছাদে এসেছিল, 
ছমছমে অরণ্য নশ্বর দেবকন্যা হয়েছিল,
তার কপালের ছোট বিশ্রী সেলাইয়ের দাগ 
সমুদ্রের ফেনার মতো,
গালভর্তি শালুক হাসি,
কোকিলের পৃথিবী জন্ম 
হেমন্ত খামে আবছায়া,
ঘূর্ণ্যমান জীবনসঞ্চার।।

রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪

রহিত ঘোষাল-এর কবিতা

ব্যাপ্তি

দৃষ্টিসীমা আর কতো নামবে জানি না,
জানি আগামী সপ্তাহে তুমি নতুন কোনও 
এক পৌষবঞ্চনা নিয়ে আসবে,
খেজুরের রসে মজেছিলাম,এখন তামার
রূপে, বদর গাজীর সহযোগিতায়
পুকুরে হিল্লোল হয়, ফুল পাখিরা মুক্তগ্রন্থি 
থেকে তৈজসপত্রে এসে নামে,
একাকী আঁন্ধার আমাকে
তামার নারী শরীরের জন্যে মনোনীত করে,
আমি অবয়ব থেকে পূর্ণতা পেয়ে সমৃদ্ধ  
ও সর্বত্রস্থিত হই।।

 

রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

রহিত ঘোষাল-এর কবিতা

শ্বাসাঘাত

আত্মার অস্থি-মাংস সাক্ষ্য দেয়
আমার হয়ে তোমার সাথে অন্য কেউ
এতদিন বাস করেছে, আমার সব লক্ষণ
তার ভিতরে ছিল, শুধু আমার ক্ষয় হয়ে
যাওয়াটা সে নিতে পারেনি,
আমার শরীরের ভিতরে পরিত্রাণ পেতে
তোমরা মরিয়া হয়ে উঠেছো, দুশ্চর সাধনা
থেকে তুলে এনেছি তোমাদের জন্য প্রয়োগবাদ, 
মহামায়াচ্ছন্ন আমার দ্বৈত প্রাণ জানে না ভালোবাসা এক প্রকার শ্বাসরোগ।।

 

সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

রহিত ঘোষাল-এর কবিতা

নিচতলার সদস্য

পাখির আরাধনা দেখে আমিও মাফ চাই তৎক্ষণাৎ, সবজি ওয়ালার ডাকাডাকি; কেন এত দাম?

পুনর্জন্ম নিয়েও যারা এসে দাঁড়িয়েছে তাদের মনেও একই প্রশ্ন,সমগ্র জাহান ঢেঁকিছাঁটা চাল নিতে এসেছে, 

সামনে নলকূপ পেয়ে নিজেদের চামড়া পরিষ্কার করে নিচ্ছে,

মহাসড়ক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঝুম বৃষ্টিতে খাদে পড়েছে, পলিথিন দিয়ে এক একটি পরিবার নিজেদের 

ঢেকেছে, জীবন চরকি হাতে ছুটছি-ভেঙে যাওয়া বসতবাড়ি জড়িয়ে নিয়ে ছুটছি, আগুন থেকে উঠে আসা 

ময়ূর স্রোতের তোড়ে প্লাবিত করে নিম্নাঞ্চল,খেলনা গাড়িতে করে ঘুরে ঘুরে

কদম ফুলের স্বপ্ন বিক্রি করি-

রেণুতে রেণুতে শান দেই।।

 

শুক্রবার, ২ জুন, ২০২৩

রহিত ঘোষাল-এর কবিতা

আমিতো জলকে নেমেছিলাম

বৃষ্টিতে খাওয়া মাটি,
নৌকাতে ভেজা নদী,এখানে ওখানে সারল্যের চাবি কাঠি।হাতিরঝিল কাঠ ফাটা রোদে এলিয়ে দেবে মাথা যেখানে সেলাই ইস্কুল বসেছে স্বনির্ভরতার প্রতিশ্রুতি নিয়ে। মামলার বাদী বুটভাজা চিবায়,জন্মের সময়ের মুখের মধু এখন অস্রাব্য ফেরিওয়ালার,
তুমুল মন খারাপ কেবল শেষ।ক্লান্ত বিধ্বস্ত মেরুদন্ড।পাখা ঘুরতে চাইছে না।ব্যস্ততা ও বেকারত্ব একে অপরের মুখ চাওয়াচাই করে।এই দিনটা তোমার মতোই বুকের ভেতর ধ্বংসস্তূপ নিয়ে ব্যবহারে ফুটিয়ে তোলে আদরের ফসল।সেনপাড়ার দিকে বিকেল নেমেছে সাথে ছিলে তুমি,মুয়াজ্জিনের তাড়াহুড়োর দিকে তাকিয়ে থাকে- কালনাগিনী,পরশুনাগিনী,তোরশুনাগিনী,বাঘিনীনাগিনী,ডাকিনী-যোগিনী,নিবেদিতা ভোগিনী,খালা আম্মা রোগিনী,প্রাক্তনী ঠোগিনী।তখন আমি?
আমিতো জলকে নেমেছিলাম।।

 

রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩

রহিত ঘোষাল-এর কবিতা

এমন যদি হয়

কাঁচের গ্লাস ভাঙ্গা বিরহ,
স্ফটিকের উপর ঘুম ও দ্বিধা।
ভারী ব্যভিচার-ঠিকানা বিভীষিকা,
       ছোট্ট কামরায় আটপৌরে পরিণতি।
             বেইমানির দোকান-রাজকীয় খেলাঘর,
     অসংজ্ঞায়িত  অদৃশ্য স্রোতে শরীর।

জংলি ধুম্রজাল-উত্তপ্ত নীরবচিত্ত,মুখের কথা।
     শহরের গলিতে গলিতে অবাধ্য পথিক।
    মেঘনার দিকে প্রসঙ্গ সর্বদা অসংরক্ষিত।

এখনো ধরা বাকি বিকেলের উদ্যান,
উপন্যাসের নিঝুম দ্বীপ, ঘাসের নিঃশ্বাস।

বিষাক্ত প্রস্তুতি অবলীলায়-তিক্ততায় দুঃখবিলাস।।