সুবল দত্ত লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সুবল দত্ত লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কবি সুবল দত্ত-কে শ্রদ্ধাঞ্জলি



প্রয়াত হলেন সুবল দত্ত

প্রয়াত হলেন সুবল দত্ত। গত ৩০শে জুলাই রোববার বিকেল পাঁচটায়। একাধারে কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক এবং চিত্রশিল্পী সুবল দত্ত যে খুব বেশিদিন আমাদের মাঝে থাকতে পারবেন না, আমরা যারা তাঁর নিকট সান্নিধ্যে ছিলাম, জানতাম। বছর কয়েক আগে তাঁর বাইপাস সার্জারি হয়েছিল কলকাতায় বি এম বিড়লা হার্ট রিসার্চ সেন্টারে। সার্জারির পর তিনি হার্টের সমস্যা থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে চিকিৎসাকালীন ধরা পড়ে তার থেকেও মারাত্মক আরও একটি সমস্যা, তাঁর প্রস্টেট গ্রন্থিতে ক্যানসার। শুরু হয় চিকিৎসা, প্রথমে জামশেদপুরে, তারপরে তামিলনাড়ুর ভেলোরে। তবে একেবারেই ভেঙে পড়েননি তিনি, বরং আরও দ্রততায় লিখে যেতে থাকেন অনেক অনেক লেখা। সেই লেখাগুলি প্রকাশিত হতে থাকে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়। প্রকাশিত হয় কয়েকটি বই। এমনকি ভেলোরে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বসেও মোবাইলে সমানে কম্পোজ করে গেছেন তাঁর নতুন লেখা। তিনি ছিলেন অদম্য প্রাণশক্তির অধিকারী। কিন্তু শরীরের ভেতরের ক্ষয় তাঁর শরীরকে ক্রমশই দুর্বল করে তুলছিল। শেষ পর্যন্ত অসম সেই লড়াইয়ে তাঁকে হেরে যেতেই হলো। আর সেই সঙ্গেই তিনি হারিয়ে গেলেন আমাদের নিকট সান্নিধ্য থেকে।

সুবল দত্ত সাহিত্যজীবনে তাঁর প্রাপ্য স্বীকৃতি পাননি। না পাওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ অনুমান করা যেতে পারে। প্রথমত তাঁর যাবতীয় লেখা ছিল পরীক্ষানিরীক্ষা মূলক। সাহিত্যের নতুন নতুন আঙ্গিক শৈলী তিনি অনুসন্ধান করতেন। সাহিত্যভাবনাতেও ছিল ভিন্নতর মনন মানসিকতা। বোধের অনেক গভীর থেকে উঠে আসত তাঁর  যাবতীয় সৃজন। তাঁর লেখালেখির সঙ্গে যাঁরা পরিচিত, তাঁরা উপলব্ধি করেছেন তাঁর চিন্তাভাবনার স্বাতন্ত্র্য। প্রচলিত মাত্রার বাইরে ছিল তাঁর পদচারণা খোঁজ। নিতান্ত সাধারণ পাঠক-পাঠিকাদের কাছে যা কিছুটা দুর্বোধ্য বলেও মনে হতে পারে। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে যখন তাঁর যাবতীয় লেখালেখির নিবিড় পাঠ মূল্যায়ন হবে, আমি নিশ্চিত, তিনি তখন বাংলাসাহিত্যের এক অনন্য সাহিত্যিক রূপে বিবেচিত হবেন এবং প্রাপ্য স্বীকৃতিও পাবেন। কিন্তু দুঃখ এটাই যে, তিনি তা কখনও অবহিত হবেন না, তাঁর অর্জন তিনি প্রত্যক্ষ করতে পারবেন না। তিনি আমার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। প্রায় নিয়মিত তাঁর সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল। আমার সম্পাদিতকালিমাটিমুদ্রিত পত্রিকায় এবংকালিমাটি অনলাইনব্লগজিনের প্রতিটি সংখ্যার জন্য লেখা পাঠাতেন। আর পাঠাবেন না। মনে মনে যে লেখাগুলি পাঠানোর কথা ভেবে রেখেছিলেন, তা চিরদিনের জন্য অলিখিতই থেকে গেল।

তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে জানাই আমার ভালোবাসা শ্রদ্ধা। 





তথ্যসংকলন : কাজল সেন




 




 

শুক্রবার, ২ জুন, ২০২৩

সুবল দত্ত-র কবিতা

জ্বর  

এখন নেকড়ের মতো হিংস্র 
ঝগড়ুটে মহিলারা শুকনো ডালপালা 
জড়ো করে রাখতে শুরু করছে

শীত জাঁকিয়ে আসছে 

মাখন বা মাংস নেই 
প্রানীরা হাপিশ, ফল একটি স্মৃতি 
সন্ধ্যায়, সবচেয়ে খারাপ শীতের রাতে
সমস্ত বাড়ির পুরুষকে ঋদ্ধ করতে 
গুঁড়ো দুধ চা এবং জল খাওয়াতে হয় 

বিশ্বের আন্তঃরোগ শুরু হোলো বলে

প্রত্যেককে জ্বর গায়ে 
গান নাচ প্রার্থনা সব করতে হবে 
এবং ভালোবাসা 
খড়ি দাগের গন্ডির ভিতরে 
যেমন সংযত প্রেম
একটিই রং,  বহুরঙের অনুপস্থিতি
প্রতিদিন সকালে 
আবার শৈত্য থামাবার শঙ্খধ্বনি
সমাজবদ্ধ না হয়ে নিজের স্বার্থে 
জুতোর ফিতে বেঁধে রাখা
ঠাণ্ডা প্রতিরোধের জন্য 
নিজের সামর্থ মত ঘরের ভিতরে 
খবরের কাগজ প্যাক করা... 

মানুষের ঝগড়ুটে স্বভাবই বলে দেয়
তুষারযুগ আসছে

 

রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩

সুবল দত্ত-র কবিতা

পরিমাপ 

এসো গো সুরধনী
এসো জনকুটির প্রাঙ্গণে শূন্য ও এক দিয়ে পরমপ্রেমের তথ্যগাছ পুঁতি
আমরা অধুনা কবি যারা
ক্ষয়া দোষ অস্তিত্ব সংকট 
কেতাব ও ডাটা দোষী 
তার আগে জেনে নাও এদের ডি এন এ থেকে কত আনন্দ আহরণ হতে পারে 
জেনে নাও পুষ্প প্রেমে কোনোদিন কেউ সত্যিকারের মজে ছিল? 
নারীদেহ সন্ধিবাসে কোনোদিন ঈশ্বরীয় প্রেম অনুভব?
ওদের কাব্যভাবনায় এখনো কি 
স্বামী বিবেকানন্দের আভাস একটুখানি? 
কিংবা গোয়াল ঘরে স্টাফ বাছুর দেখে
শোষিত গাভীর চোখে কতটা শুন্যতা

সুরধনী সুন্দরী প্রেমময়ী দেখো এই কবিরা ব্রহ্মের কতটা ফ্যাদম মাপতে পারে

 

বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৩

সুবল দত্ত-র কবিতা

ডেথ বেডে স্বপ্ন

নদীতীরে গন্ধরাজ লেবু পাতার উপর স্বপ্নে অযোনিজ জন্ম হল আমার
কিন্তু আমার দেহ জীবন সংকট
ও ধরতে পারল না টুপ করে ঝরে পড়ল
আমি ভাসমান যেমন বহমান আমি
তত ঘন হয়ে ওঠে নদী তত দুপাশাড়ি কূল জানান দেয় প্রকৃতি অমৃত গতিমান
ও আমার স্বপ্নিল দেহ
গন্তব্য জানোনা? জীবনে কি লাশে?
আধার কি আধারহীন আলোর চাহিদা নেই
নতুন নতুন কষ্টের অভ্যাস
শরীরের কাটা ছেঁড়ার মর্মবেদনা

এই যন্ত্রণা অভ্যাস কিন্ত মৃত্যু নয়
জীবনের প্রত্যাগমন
দেখ আমি প্রকৃতি খোলে যৌনপ্রাণী বিচ্যুত
মোহনাগামী আসমুদ্রে মিলে যাবো
ঊর্ধ্বে মহা জগৎ আমি এক
জলজ পৃথিবী জরা ব্যাধি মৃত্যুহরা
'বহে নিরন্তর অনন্ত আনন্দ ধারা'

ও শরীর জীবনে ফিরলে ফের কারো
নোংরা চিন্তাময় শ্বাস তোমার প্রাণবায়ুতে
করুণা ভিক্ষার বাটিতে তুচ্ছতা মুদ্রার শব্দ
আরো উপভোগ?
টিভিতে গোগ্রাসে গিলবে রেপকেস মার্ডার
নোংরা পলিটিক্স?
কিংবা গুনবে প্রকৃতির উচ্ছিষ্ট সময়
 

সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২২

সুবল দত্ত-র কবিতা

 

ঘুম                      

 

অচেনা পথ  ঘুমের আবেশ

 মেয়ে এখন আর স্বপ্নে এসো না 

অবচেতনায় এই আমি যৌনতা পুড়িয়ে ফেললাম 

হায় আমার অজানা ইচ্ছে আর দেহ ঘড়ি 

 মেয়ে তোমায় এবার মা করে নিতে ভীষণ ইচ্ছে করে 

তুমি ঝুমঝুম নুপুর পায়ে পায়ে আমার বদ্ধ উদোম আগুন ঘরে এলে 

আমার মহাজাগতিক অংক কষতে ইচ্ছে করবে 

এবার শরীরে প্রাণীজ আগুন নয় 

আমি সত্যি সত্যি খাওয়া পরা যৌনতা  শূন্যতা ভুলেছি

মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০২২

কবিতা : সুবল দত্ত

দুটি কবিতা

পুজোর গন্ধ গুলি পেরিয়ে দেখলে গাটার ভর্তি দুর্গন্ধের পাশে

ছেঁড়া কাগজে লিখে যাচ্ছে ম্যাসেজ কবিতা এক ভিখিরি পাগল

হে জনমানস  তোমরা তার কাছে পাঠ নাও কুয়াশা  কাশ

অনেক রাজনীতির পর সময়ের কাছ থেকে প্রকৃতি  শরত্‍

পেয়েছে,এই কথা বুভুক্ষু ভিখিরি বোঝে,এখন তার হাহাকার

ধরো ধরো প্রজন্ম, কুচিকুচি তোমাদের পারফিউম ভেসে যায়

তোমাদের কেতাবি প্রকৃতিপ্রেম অসহ হৃদয় আর নিদ্রামিথুন  

 

ফুলওয়ালির পাশেই দুই রমণীর চোখ মুর্গা কলিজায়

গতজন্মের পুজো, ছুটির ঘুম, আর মাংসের আসবাব

এইসব ভাবতেই নারীদের চোখে কামসূত্র ভাসে

মুন্ড কলিজাহীন মোরগটি মুক্তি পেতে ঠিকসময়ে

দেয় মরণ ওড়ান, পড়ে অনিবার্য ফুলের স্তবকে

ফুল থেকে খাদ্য খাদকের গন্ধ ভাসে