কাজল সেন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
কাজল সেন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

কাজল সেন-এর কবিতা

আশ্বিনে যাব আমি যুদ্ধযাত্রায়


ছুটির দিনে যেমন হয় একটা গাছাড়া গাছাড়া ভাব

দরকারী কাজ পড়ে থাকে আলসেমি গায়ে মেখে

কতবার যে ভেবেছি এইরকম এক ছুটির সকালে  

দেখা করে আসব নিরুপমার সঙ্গে চোখ মেলে দেখব তার সংসার

আমার তো আর সংসার পাতা হলো না নিরুপমার সঙ্গে

কেন হলো না কী বাধা ছিল সেসব বড়ই সেকেলে কথা

কী আর হবে সেইসব হারানো দিনের পান্ডুলিপি খুলে বসে


কখনও বা ভেবেছি আসন্ন আশ্বিনে যাব আমি যুদ্ধযাত্রায়

পৌঁছে যাব সেই পাতার কুটিরে হাজার বছরের বৃদ্ধ বটগাছের কাছে

যেখানে আজও অপেক্ষায় আছে শকুন্তলা অন্য কোনো নামে অন্য পরিচয়ে

রাজ্যের পর রাজ্য জয় করে আকাশে উড়িয়ে দিই বিজয়পতাকা

বেজে উঠুক জয়শঙ্খ ধ্বনি ফুলবৃষ্টি হোক বিজিত দিগন্তরেখায়

ধন্য ধন্য গুঞ্জনে সারাটা বাতাস জুড়ে অসামান্য সুরের মূর্চ্ছনা

শকুন্তলা আশ্বস্ত হোক আমার আগমনে অন্য কোনো নামে অন্য পরিচয়ে  


দিন বয়ে যায় কন্টকিত দিনের চাকার অবিশ্রান্ত ঘূর্ণনে

চড়ুইপাখিরা আর বাসা বাঁধে না খড়কুটো মুখে বয়ে আমার খোলা বারান্দায়

একটা সরলরেখা বারবার হোঁচট খেয়ে হারিয়ে যায় চৌরাস্তার মোড়ে

মনে নেই ভুলে গেছি ঠোঁটের ওপরে অন্য ঠোঁটের ঘর্ষণে বিষ্ফোরিত হয় কিনা প্রেম

সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো অবিরত ছুটির দিন আছড়ে পড়ে আমার জীবন সায়াহ্নে

সারাটা সকাল জুড়েই কেমন একটা গাছাড়া গাছাড়া ভাব

আলসেমি গভীর হয় দরকারী সব কাজ পড়ে থাকে সন্ধ্যের ঘনত্ব যায় বেড়ে  

 

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

কাজল সেন-এর কবিতা

আসা যাওয়া 


যে বন্ধুর কথা আমি ভাবি

সে চলে গেছে বহুদিন আগে আমাকে ছেড়ে  

বলে গেছে ফিরবে না সে আর কোনোদিন 

দেখা হবে না আর

কথা হবে না আর

দেখাশোনার বাইরে এমনই তার যাওয়া


আমারও যাবার কথা ছিল তার সাথে

ডায়মন্ড হারবার রোডে দাঁড়িয়ে 

সেদিন আমাদের অনেক কথা হয়েছিল

চলে যাবার কথাও হয়েছিল


সে চলে গেছে 

আমারও যাবার কথা ছিল


একদিন সত্যিই আমিও চলে যাব  

আমরা সবাই একদিন চলে যাব

শুধু ভাবি যাওয়া যদি এতটাই অনিবার্য হয়

তাহলে আমাদের আসারই বা কী এমন প্রয়োজন ছিল    

 

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

কাজল সেন-এর কবিতা

সবাই তো আর কৃষ্ণগোপাল হয় না


সবাই কি আর কৃষ্ণগোপালের মতো হয়

হয় না কখনোই 

কৃষ্ণগোপালের মতো হয় শুধু কৃষ্ণগোপালই

অবেলায় এসে উলটে দেয় ছক্কা পাঞ্জা

অসময়ে এসে পালটে দেয় বংশের সুনাম 

সেরা মেজাজ সেরা আবদার

তখন বড় রাস্তায় সার বেঁধে দাঁড়িয়ে পড়ে

ভাড়া করা গাড়ি

ভাড়া করা বাড়ি 

ভাড়া করা মেয়েমানুষ

ধুমসো পুলিশ

বলদের শোভাযাত্রা


সবাই তো আর কৃষ্ণগোপাল হয় না 

নতুন বউয়ের চলন বোঝা কি এতই সোজা

মন যখন ভালো নেই তখন মনের কথা না ভাবাই ভালো

ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হলে ঠগ আর না বাছাই ভালো

কৃষ্ণগোপাল বলেছিল তখন নিজের দিকে না তাকানোও ভালো

উচ্চতা কম হলে উচ্চতর ভাবনার ভেতর না ঢোকাই ভালো


রাতে আজ জলসা হবে কৃষ্ণগোপালের বাড়ির ছাদে

মহুয়া গাইবে গজল

লতিকা গাইবে ভজন

দেবতোষ বাজাবে সারঙ্গী

মহাবীর বাজাবে দোতারা

বেচারা কৃষ্ণগোপাল বেচারাই থেকে গেল চিরটাকাল

সে না জানে গান না জানে নাচ

তবে কেউ যদি ঘোমটা খুলে নাচতে পারে খ্যামটা

নিধুবাবু স্বয়ং হাজির হবেন জলসায় সঙ্গে টপ্পা 

 

রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪

কাজল সেন-এর কবিতা

আমরা মনে রাখব না আমাদের অন্তর্গত অতীত              

 

তাহলে একথাই থাক আমাদের আর দেখা হবে না কোনোদিন  

আমরা মনে রাখব না আমাদের অন্তর্গত অতীত

ভুলে যাব প্রচলিত কায়দায় আমাদের খেলাধুলোর ময়দান

শৈশবের সাদা দাগ অসুখী ফুল ফল আর তার বীজতলা

 

আশ্চর্য এক মাটির উনুনের কথা তবু মনে পড়ে যায়

মনে পড়ে জঙ্গলের মায়া ছেড়ে বাইসন ছিল আমাদের দাওয়ায়

কতবার কতভাবে যে ডাকা হয়েছিল ওরে ফুলটুসি ঘরে ফিরে আয়  

জলের অঢেল সম্পর্কে তবু ভেসে যায় এক দুই বাহান্ন হাতের তাস  

 

সঠিক হাতের কাজ আর কোথায় সঠিক ভাবনায় কে আর ভালোবাসে

খোলা দরজায় ঝড় ঢুকে অবলীলায় অতিক্রম করে যায় খোলা জানালা

জানি আর দেখা হবে না কোনোদিন কথা হয়েছিল আমাদের তাই

অন্তর্গত অতীত ছায়া দেখে তার ডায়েরির অলিখিত বর্ণমালায়