নাজনীন সীমন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
নাজনীন সীমন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

নাজনীন সীমন-এর কবিতা


ভালো নেই আমি

মাঝে মাঝে ভীষণ জানাতে ইচ্ছে হয়, ‘ভালো নেই আমি’!

খাঁ খাঁ করা ব্যাপক শূন্যতা চতুর্পাশে

অথচ মানুষ আর মানুষ...

হাসছে, আনন্দের ফোয়ারায় ছলকে উঠছে অসময় সময় 

তোয়াক্কা ছাড়া।

প্রিয় মুখগুলো দেয়ালে এখন--স্থবির, নির্বাক

ইচ্ছেমতো ঝরে গেছে যখন তখন।

জল স্থল সমস্তটা মিলিয়ে মিশিয়ে 

একশ ছিয়ানব্বই দশমিক নয়-চার-শূন্য মিলিয়ন স্কয়ার মাইল

তন্নতন্ন করেও একটি প্রসারিত কাঁধ মাথা রাখার এখন নেই আর।

 

ছিলো কি আসলে কখনোই? কস্মিনকালেও?

 

কঠিন হিসেব যতো--সুদ কষে দেয়া আর নেয়া--

রেওয়ামিলের পাতায় ভীষণ গোলমাল

অপরিপক্ক ছন্দের বেসামাল উল্লম্ফন কবিতার রঙিন খাতায়,

জীবনের পরতে পরতে অগণিত ভুলের সম্ভার 

সিলি, জেনী, জেইন, এলিজাবেথ থেকে অ্যাসপারেঞ্জা 

ক্যাথেরিন--মুখরা, অবাধ্য, অর্বাচীন, অনমনীয়, অহংকারী--অসংখ্য খেতাব।

বনসাঁইয়ের মতো ছেঁটে অতি যত্নে লালিত হয়েও ছাদ ফুঁড়ে 

সূর্যের সন্ধানে বেরোবার দুঃসাহস পেশীর প্রাসাদকে প্রবল আহত করে,

উল্টে যায় হিসেব নিকেষ করা সাবধানী সময়!

সরল অঙ্কে ভুলের মাশুল গুণে লাভ ক্ষতির হিসাবে সব ওলোট পালোট

ফলাফল পৃথিবীর মতোই বিশাল গোলাকার শূন্য।

 

কাক ডাকা অন্ধকারে ব্যর্থতার সুদীর্ঘ তালিকা নিয়ে 

অন্বেষণের নতুন করে শুরু পরিব্রাজক কাহিনী...

 

সাড়ে সাত বিলিয়নেরও বেশী 

মানুষের পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যাকে সঙ্কোচের 

আবরণ ছাড়াই বলতে পারা যায়, ‘আমি ভালো নেই

রবিবার, ১ আগস্ট, ২০২১

নাজনীন সীমন-এর কবিতা


 অপেক্ষায় আছি


 

অনন্ত কালের এই তৃষ্ণার্ত প্রতীক্ষা।

বিছানায় অবসন্ন শরীর এলিয়ে

সময়ের কাছে আনত প্রার্থনা বারংবার

এমন ভোরের চারপাশে যেদিন ভীষণ হল্লা হবে

ঝাঁকিয়ে ওঠাতে ত্রস্ত হবে সবাই,

সুপ্রিয় গন্ধরাজ, বেলী, পাতাবাহার আরো আরো

গাছেরা সূর্যের থেকে মুখ ঘুরিয়ে তাকাবে এবং

তাাকিয়েই থাকবে আমার দিকে,

বাহারী অর্কিড, এমনকি কণ্টকাকীর্ণ

সবুজ স্বল্প জলপায়ী ক্যাকটাসও উন্মুখ ভাবে কলের শব্দের

জন্য অস্হির অধীর হয়ে উঠবে অথচ এই মাত্র দিন

আগেই প্রায় মরতে যাচ্ছিলো অসতর্ক জলের ধারায়,

কিচিরমিচির করা চড়ুইগুলো খানিক শান্ত হবে

নিয়ম ভাঙার তীব্র সন্দেহে;

বিশালদেহী কুকুরটিও মাটিতে নাক শুঁকে

এগুবে সুপরিচিত গন্ধ -পথে হয়তো মিশে আছে ভেবে

যদিও প্রতিদিনই ওর ভয়ে কুঁকড়ে পালিয়ে গেছি,

বিশাল চায়ের কাপ সাদা কালোর মিশেলে এক কোণে

গোপন গভীর কষ্ট নিয়ে প্রতীক্ষায় থাকবে কখন হবে চুমুকে চুমুকে

সকালের নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি আর উত্থান পতনের গল্প,

পুরনো ফোনটি বালিশের নীচে অপেক্ষা করবে চুপচাপ নিত্যদিনের

হালকা গাঢ় খুনসুটি শোনার; থাকবে অপেক্ষায় হয়তো কোথাও

কোনো কোনো মানুষ, কয়েকজন মাত্র, এখানে সেখানে।

 

অপেক্ষায় আছি

​                        এমন ঘুমের কোনো কিছুতে যা আর কোনোদিন ভাঙবে না।