শান্তময় গোস্বামী লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
শান্তময় গোস্বামী লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

শান্তময় গোস্বামী-র কবিতা

বেইমান দেউড়ি


সৃষ্টিসূত্রে যাতায়াতের অভ্যাসে অক্ষর উপত্যকায়

আমার পরিচিতি জন্মেছে কিছুটা।

গড়িয়েছে বহুদূর জলছোট নাও আমার, ভয় পায় বেয়ে যেতে

আসা-যাওয়ার পথের বাঁদিকে, ব্যথাদের রঙ গাঢ় হয়ে এলে

দূরে ক্ষয়িষ্ণু রক্ত রঙের ইটের পাঁচিল-খাঁজে খুঁজে পাই

অজস্র হতবাক বিশ্বাসঘাতকতা।

 

বেইমান দেউড়ি পার হতেই স্পষ্ট হয় সেসব অতৃপ্ত আত্মা…  

ঘৃণিত রাজনীতি, পারিবারিক অসুস্থ দংশন আর নানান

সামাজিক বান্ধব প্রতারণা জানান দেয়

আমার শেষ স্বাধীনতা যুদ্ধে কোন রক্তপাত হয় নি।

ব্যাভিচারি আলেয়া সাক্ষী থেকেছে শুধু নেশাগ্রস্ত বমনের মতো

অলিন্দে অলিন্দে বাতি দেওয়ার ক্ষমতার খেলায়।

 

টা দিন তাই চুপ থাকাই ভালো।

ভেতরে বাইরে ক্রমশ প্রকাশ্যে আসে দূরবীন আলো।

পছন্দ, অপছন্দের নিরাময়ের খেলায় চলছে পিপাসার কেনাবেচা

ডিজিটাল শিরদাঁড়া, ইচ্ছুকদের ঠোঁটে গুঁজে দেয় আম আঁটির ভেঁপু

হাওয়া এখন বিপরীতমুখীবেইমান দেউড়ি পেরিয়ে উড়ে যায় পালক

হয়তো মাতৃঋণবিশ্বাসঘাতকতা বড্ড তেজস্ক্রিয়!  

 

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

শান্তময় গোস্বামী-র কবিতা

আমার রবীন্দ্রনাথ


চলে যায় দিননিবিড় ছায়ায়

কোথায় ছুটেছে সেকোথায় কে জানে

এক বৈশাখ থেকে আর এক শ্রাবণ

বৃত্তাকারে সীমানা আঁকে রবির চলন

দুঃখ কান্না হাসিজীবন মরণে

তারপর শুধু মাটি নির্মাণ পাথর খোদাই

রাশি রাশি সব রঙ তুলি খেলা

এতেই স্মরণ

এতেই পূজা সারা হয়ে যায় বরণে।


সুখে আছি, দুখে আছিঘিরে আছি কাছাকাছি

ভালোবাসি তাই বিশ্বাসে মানি

অন্ধকারের অরূপ রূপেতে

আছে সে অন্য কেহ।

তাকে জেনে নিতে পথে সে পথে

বৃষ্টি গন্ধে মাটি মাখা সুরে

পায়ে পায়ে হেঁটে যাই বাউলিয়া আমি

তোমারি আখরে তোমারই যে গান গাই।


আঁধারের মতো অসীমের এই কাল

বড় ভয় লাগেজাগে প্রেম বুকে

দিনের পরে দিনগুলি মোর

ছিঁড়ে ছিঁড়ে হারিয়ে যাবে।

যা কিছু উজাড় দিয়েছিলে তুমি

হারিয়ে ফেলেছি সবটুকু তার

কখন তুলে নিলে হাতে যাবার ক্ষণে

মুঠি খুলে দেখি কিছু নেই সঞ্চয়।


শূন্য এখন দুঃখদিনের সকল স্বপ্নভার

আমার ছুটি ফুরাল যে কখনকেমন যেন অন্যমনে

আমার সকল চেতনার বেলা

আমার সকল উদাসী সময়,

আমার সকল সুশীল স্ব-যাপন

থেমে আছে যেন কবেকার

বৈশাখী সেই একবেলা

আর না-বলা এই শ্রাবণে।

 

রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

শান্তময় গোস্বামী-র কবিতা

ঈশ্বরীয়

আগুনের নদী থেকে উঠে এসো কবি

মেখে নাও সবুজ ছত্রাক

ক্লোরোফিল জলে ভেজাও সুবাসিত চা

মুছে যাক পাপ আলপথের উত্তরাধিকার!

 

ভাতের হাঁড়ির মধ্যে লুকিয়ে পরে খিদে

অন্ধকারে হাতড়ে উঠে আসে একমুঠো শূন্যতা

সোহাগি ভাতের আশে খিড়কির ঘাটে কলাবউ-স্নান

খিদে বোঝেনানুন-স্বাদে  জেগে থাকে স্মৃতি সন্তান

 

আগুনে পুড়ে যায় কবি খিদে

নাছোড় শরীরে লেগে থাকে তেল হলুদের দাগ

পোড়া গন্ধে, জ্যোৎস্নায়, হে ঈশ্বর, আমি

                                                 একটা রাত শান্তিতে ঘুমাব

 

সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

শান্তময় গোস্বামী-র কবিতা

অপভাষ
আমাকে তুমি একটু একটু করে কাছে চাইছো
আমি বুঝতে পারছি, আর তাই আমি
অরণ্য, ফুল, পাখি, জ্যোৎস্না এসব
বিছিয়ে দিয়েছি তোমার বিছানায়
এদেরকে জড়িয়ে ধরো, চুমু খাও
দেখবেআমাকেই পাবে।

এখন তুমি আমার সবটুকু দেখতে চাইছো
আমি বুঝতে পারছি, আর তাই
খুব ধীরে ধীরে খুলে দিলাম আমার দক্ষিণের জানালা
যে দূরে কিছু অস্পষ্ট তারা দেখছো
ওর ভেতর দিয়ে আমি এখন দেখছি তোমাকে।
তোমার সবকিছু উন্মোচিত করছো মরালছন্দে
এখন অনেক রাত
আমার বুকের ভেতরের শূন্যতা ভরিয়ে দিচ্ছো কোমল স্পর্শে।

ঠিক মুহূর্তে তুমি আমার হৃৎস্পন্দনে বেঁচে থাকা

দুঃখগুলো কুড়িয়ে নিতে চাইছো

আমি বুঝতে পারছি, ভীষণ বুঝতে পারছি

আর তাই আমি

ধীরে খুলে দিলাম আমার চৌকাঠ, বাতিদানঅপেক্ষা

পুরোনো ঘৃণাদের হাততালি থেকে আলাদা করি

বশ্যতায় রাখি নানান অভ্যেসের অভিযোগ

আশ্লেষের বেলুনে লেগে যায় কোনারক জলছাপ

উত্তল, অবতল, গুহা, কন্দর পেরিয়ে তখন আমি

মার্জারছন্দে পারিজাত ইচ্ছেদের যাযাবর ছন্দে উপুড়

 

অপভাষগুলি বর্ণীল করে রাখি আজ শয়নেস্বপনে

যতটুকু পাই যখনি এবং যেখানে!