মাহফুজ আল-হোসেন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
মাহফুজ আল-হোসেন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

মাহফুজ আল-হোসেন -এর কবিতা

মনুষ্য জন্মের ক্ষণ

চৈতন্যের মগডালে বসে আজও তুমি
কোন সে গান গেয়ে যাও বলো - চিরনতুন কৌশোরক অনুভবে 
অথচ চৌদিক ভরে গেছে মানববিনাশী হিংসার নীল ক্যাকটাসে 
শোকার্ত রোদে আজ ভিজে নেয়ে একাকার
তোমার কেতকী কদম
তবুও অন্ধ চোখে সুনন্দ শব্দ -প্রকৌশলে বসিয়ে দিচ্ছ রোজ মুক্তির সবুজ চশমা 
 নৌকোডুবিতে মরে ভেসে ওঠা হতভাগাদের‌ একটাই তো চাওয়া
মনুষ্য জন্মের ক্ষণ ধরিত্রী জুড়ে একটাই হোক সকলের--পঁচিশে বৈশাখ

 

বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৩

মাহফুজ আল-হোসেন -এর কবিতা

অক্লেশের অভিমুখে অনিরুদ্ধ স্বপ্নযাত্রা

যখন‌ পাশ ফিরে শুয়েছিলে
তখন নির্বাক পাশবালিশটার ওপারটা অকস্মাৎ অন্য আকাশ!
অপ্রস্তুত স্বপ্নের মাঝপথে কেন দোয়েলের ঠোঁটে ধরিয়ে দেয়া হলো স্বপ্নভঙ্গের স্বরলিপি?
নীলোৎপল অম্বর সে মুমূর্ষু প্রহরে ভারী হয়েছিল দুপারের  গণকান্নায়!

অতঃপর ভাষাবদলের হুমকি থেকেই তো শুরু হলো 
স্বপ্নবাজ পাখিদের স্বতন্ত্র কূজন।
রাজপথ থেকে রক্তপলাশ মেখে নেয় বিপ্লবের লাল রঙ;
আর সে পথ বেয়েই জনস্রোত মিশে যায় রক্তস্রোতে।
প্রতিটি প্রত্যুষেই প্রলম্বিত হতে থাকে
স্বপ্নহীন শৃঙ্খলিত রাত;
অবশেষে তাঁর অগ্নিবাণীতে হয় নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ‌।
চলে মরণপণ সম্মুখসমর দুরন্ত দুর্বার...
ত্রিশত অযুত রক্তমূল্য  আর নারকীয় হিমাগ্নির প্রস্তরিত কান্না এনে দ্যায় সহস্রাব্দের নতুন ভোর।

অন্য বিপ্লবের পথ বেয়ে শোষিতের গণতন্ত্র আনবে বলে যখন স্থিরপ্রতিজ্ঞ হৃদয়মন 
পরাজিত শত্রু আর অক্ষশক্তির বিষাক্ত ছোবলে সূর্যতাপসের হৃদয়বিদারক মহাপ্রস্থান!!

আবার পশ্চাৎমুখী তিমিরযাত্রা প্রেতপাদুকায়;
আবার স্বপ্নচুরি জলপাই রঙের কলঙ্কিত স্বৈরিতায়...

অবক্ষয়ী প্রহর শেষে মেঘ সরিয়ে আবার সূর্য হাসে
মাঝখানে কিছুকাল সূর্য হারায়  ঘন মেঘের আড়ালে;
ঘাতকের চতুর্চক্রযানে উড্ডীন হয় শহীদের রক্তমাখা পতাকা!
কীটদষ্ট কর্কটকাল শেষে  দিনবদলের গান আবার উঠে আসে দুর্জয় দোয়েলের ঠোঁটে;
হোক না শুরু পুনর্বার নতুন উদ্যমে অক্লেশের অভিমুখে অনিরুদ্ধ স্বপ্নযাত্রা...

 

শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২

মাহফুজ আল-হোসেন -এর কবিতা

কবিতার পক্ষে তেমন কাউকে দরকার নেই

কবিতার পক্ষে কোথাও দাঁড়াবার কেউ নেই বলে 

নিষ্প্রদীপ  মৃতগৃহে করুণ রাগাশ্রিত বিলাপোৎসবের 

কীইবা প্রয়োজন?
কবিতাই তো পারে কৃষ্ণপক্ষের নিকষ অন্ধকারে 

শেষ সলতের আলোটুকু পরম নির্ভরতায় জ্বেলে দিতে;
হতে পারে সে আলো কখনো সখনো স্নিগ্ধতা দোষে দুষ্ট!
যদি কোনো এক মহারাত্রিতে পৃথিবীর সব আলো 

নিভেও যায় –––

নিশ্চিত জেনো কবিতার অলৌকিক অঙ্গুলি প্রক্ষালনে 

কৃঞ্চগহ্বরের ওলান থেকে অঝোর ধারায় নেমে 

আসবে সত্যাশ্রয়ী আলোকবৃষ্টি
আলোকিত মানুষের পক্ষে হয়তো কেউ কেউ থাকে 

অমনুষ্যের পক্ষেও কিন্তু আজকাল অনেকেই দুর্ভেদ্য 

ঢাল হয়ে দাঁড়ায়!
কবিতার পক্ষে কাউকে কিন্তু সেভাবে থাকবার দরকার নেই।

চক্ষুষ্মানের দৃষ্টি ধূসর হয়ে এলে ব্রেইলের ছিদ্রমালায় 

কবিতার ম্রিয়মান শব্দাবলি হঠাৎ করেই সরব হয়ে 

ওঠে মুখাপেক্ষী ভিড় ঠেলে!!

 

সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১

মাহফুজ আল-হোসেন -এর কবিতা


নিজের হাতে খুন করেছি গতকাল

নিজের হাতে খুন হয়েছি গতকাল

বরাহ বর্তমান এখন

আমায় ফিরতে দিচ্ছে না কিছুতেই

 

অথচ অর্বাচীন ভবিষ্যত 

কাউকে কিছুই না বলে 

চুপিসারে সরে গেছে

ঠিকানাহীন অনিশ্চিত গন্তব্যে

 

চিন্তাঘরের  চকচকে চাবি 

বালিশের নীচে রেখে 

বেরিয়েছিলাম তত্ত্ব তালাশে

অবেলায় ফিরে দেখি 

দরজায় ঝুলছে যুক্তির তালা

 

দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিলো উৎসুক দৃষ্টিতে

মুহূর্তগুলো পেরিয়েছে যুগ

মনের নাগাল পায়নি মন

জানিনা কেন সে উচাটন  

সারাবেলা সারাক্ষণ

 

অথচ আমার গুরুতর প্রেম নিয়ে

পক্ষীকূলেও চলছে লঘুৃ হাস্য -পরিহাস

বলো কে থামাবে ওদের ক্রমবিবর্ধিত কোরাস

আর কেইবা করবে আমার 

ভালোবাসার অন্তিম সৎকার

 

আমি নিজের হাতেই  তো খুন করেছি গতকাল

তখন কিসের আমার বর্তমান

বলো কিসের আবার ভবিষ্যত.... 

 

      ০৮ অক্টোবর ২০২১ 

শুক্রবার, ১ অক্টোবর, ২০২১

মাহফুজ আল-হোসেন -এর কবিতা


জার্নি বাই ট্রেন

ঘুম ভাঙার পর আয়েশি আড়মোড়া - এরপর হাই তুলতে তুলতে অনেক পরে টের পেলাম আজগুবি এক ট্রেনের যাত্রী আমরা সবাই।

গুষ্টিসুদ্ধ জায়গা হচ্ছে কী করে !
কেউ উঠছে কেউ নামছে এভাবেই তো স্থানসংকুলান  ( সমস্যা হলে যেমন চ্যাংদোলা করে উঠানো যায় কিংবা ধপ করে নীচেও ফেলে দেয়া যায়, মোটা অংকের জরিমানা জেনেও ট্রেন যাত্রায় ত্যক্ত- বিরক্ত হয়ে কেউ আবার অকালে চেইন টেনে নেমে যায়)

একটাই তো ট্রেন তাই না? ( শুনে স্টেশন মাস্টার হাসছেন সবার অলক্ষ্যে ..)
একজন প্রবীণ প্যাসেঞ্জার বললেন  -ট্রেনের তালে তাল মিলিয়ে সবাই যেভাবে খোশগল্পে মেতে আছে-
প্রত্যেকের কানে আলাদা করে হুইসেলের সংযোগ থাকলে বোধহয় ভালো হতো।

যাত্রারম্ভের প্রাক্কালে সকলেই এক ক্লাসের যাত্রী ছিলেন- অর্থ অনর্থ এবং ক্ষমতাসম্পর্কের যাদুস্পর্শে আস্তে আস্তে শীতাতপ শোভন সুলভ  শ্রেণীভুক্ত হয়েছেন (শ্রেণীসংগ্ৰামের সেই গৌরবজনক ইতিহাসের কথা  বিস্মৃতির অতল গহ্বরেজবরদস্তি,শ্রেণীচ্যূতি, সীট দখল এসবএখন তো নিত্যনৈমিত্তিক, কেউ আবার হ্যান্ডেল ধরে দন্ডায়মান থাকার চিরস্থায়ী দণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত)

ট্রেনের জানালার দু'ধারে উল্টোদিকে ছুটে চলা  সিগন্যাল পোলগুলোই শুধু আছে, সবুজ গাছপালা ধানক্ষেত কুঁড়েঘর  সব ইরেজার দিয়ে মুছে ফেলেছে বখে যাওয়া ছেলেগুলো;

কী -প্লাটফর্মের প্লট বদলে নদী আঁকলো কে?
আর নদীর জল অল্পস্বল্প ঘোলা তো থাকতেই পারে- তাই বলে এমন ভুরকুষ্টি কালো!

সবজান্তা একজন গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন- রেললাইনের শেষপ্রান্তে অথৈ সমুদ্র ...

পুন‌শ্চ

ঠিক মনে নেই সবটা, একটু একটু করে আবছা মনে আসছে  -ট্রেনটা হঠাৎ  করেই একটা টানেলে ঢুকেছিল - এরপর থেকে না আছে কোনো ট্রেন না আছে কোনো স্টেশন, বেমালুম সব গায়েব - যেন অনন্তকাল ধরে সবাই দাঁড়িয়ে আছি একঠাঁই স্টেশনমাস্টারের অপেক্ষায় খাঁখাঁ বিরান এক শূন্য প্রান্তরে!!