শুক্রবার, ১ অক্টোবর, ২০২১

মাহফুজ আল-হোসেন -এর কবিতা


জার্নি বাই ট্রেন

ঘুম ভাঙার পর আয়েশি আড়মোড়া - এরপর হাই তুলতে তুলতে অনেক পরে টের পেলাম আজগুবি এক ট্রেনের যাত্রী আমরা সবাই।

গুষ্টিসুদ্ধ জায়গা হচ্ছে কী করে !
কেউ উঠছে কেউ নামছে এভাবেই তো স্থানসংকুলান  ( সমস্যা হলে যেমন চ্যাংদোলা করে উঠানো যায় কিংবা ধপ করে নীচেও ফেলে দেয়া যায়, মোটা অংকের জরিমানা জেনেও ট্রেন যাত্রায় ত্যক্ত- বিরক্ত হয়ে কেউ আবার অকালে চেইন টেনে নেমে যায়)

একটাই তো ট্রেন তাই না? ( শুনে স্টেশন মাস্টার হাসছেন সবার অলক্ষ্যে ..)
একজন প্রবীণ প্যাসেঞ্জার বললেন  -ট্রেনের তালে তাল মিলিয়ে সবাই যেভাবে খোশগল্পে মেতে আছে-
প্রত্যেকের কানে আলাদা করে হুইসেলের সংযোগ থাকলে বোধহয় ভালো হতো।

যাত্রারম্ভের প্রাক্কালে সকলেই এক ক্লাসের যাত্রী ছিলেন- অর্থ অনর্থ এবং ক্ষমতাসম্পর্কের যাদুস্পর্শে আস্তে আস্তে শীতাতপ শোভন সুলভ  শ্রেণীভুক্ত হয়েছেন (শ্রেণীসংগ্ৰামের সেই গৌরবজনক ইতিহাসের কথা  বিস্মৃতির অতল গহ্বরেজবরদস্তি,শ্রেণীচ্যূতি, সীট দখল এসবএখন তো নিত্যনৈমিত্তিক, কেউ আবার হ্যান্ডেল ধরে দন্ডায়মান থাকার চিরস্থায়ী দণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত)

ট্রেনের জানালার দু'ধারে উল্টোদিকে ছুটে চলা  সিগন্যাল পোলগুলোই শুধু আছে, সবুজ গাছপালা ধানক্ষেত কুঁড়েঘর  সব ইরেজার দিয়ে মুছে ফেলেছে বখে যাওয়া ছেলেগুলো;

কী -প্লাটফর্মের প্লট বদলে নদী আঁকলো কে?
আর নদীর জল অল্পস্বল্প ঘোলা তো থাকতেই পারে- তাই বলে এমন ভুরকুষ্টি কালো!

সবজান্তা একজন গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন- রেললাইনের শেষপ্রান্তে অথৈ সমুদ্র ...

পুন‌শ্চ

ঠিক মনে নেই সবটা, একটু একটু করে আবছা মনে আসছে  -ট্রেনটা হঠাৎ  করেই একটা টানেলে ঢুকেছিল - এরপর থেকে না আছে কোনো ট্রেন না আছে কোনো স্টেশন, বেমালুম সব গায়েব - যেন অনন্তকাল ধরে সবাই দাঁড়িয়ে আছি একঠাঁই স্টেশনমাস্টারের অপেক্ষায় খাঁখাঁ বিরান এক শূন্য প্রান্তরে!!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন