গোবিন্দ মোদক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
গোবিন্দ মোদক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

গোবিন্দ মোদক-এর কবিতা

তোর ‘তুই-তুই’ গন্ধটাকে ঘিরে …

তোকে কিছুই দিতে পারিনি — 

না কোনও ভোরে ফোটা ফুল

না সকালের সুগন্ধি প্রাতঃরাশ

না কোনও রোদ্দুর-সেঁকা বিকেল। 

তবু বেলা-অবেলার গল্প জুড়ে 

               একটাতুই-তুই গন্ধ” 

আমার শরীর জুড়ে খেলা করে 

আর ডাহুক ডাকা প্রাক-সন্ধ্যার আলোয় 

আমি খুঁজিতে থাকি 

      হারিয়ে যাওয়া হলদে রোদ্দুর।

 

জানিতোর জন্য কেউ কখনও 

           কবিতা লেখেনি

না কোনও গানে সুর বসিয়েছে 

           অনামি কোনও সুরকার;

তবু একটা গান ঝংকৃত হয় 

            তোর শরীর জুড়ে

আর নিছক একটা প্রেমের গল্প

কখন যে হাই তোলে আড়মোড়া ছাড়িয়ে 

তার হিসাব-নিকাশ লেখা হয় 

              রাত্রির মধ্যযামে

রাতচরা পাখির দল ফিরে যায় দূর দিগন্তে

অথচ তোর জন্য তেমন কোনও খবর 

            আমি ঈথারের বুকে পাই না

সত্যিই তোকে কিছু দিতে পারিনি আমি 

না কোনও সোনালী বিকেল, না একটু উষ্ণতা 

না মেঘভাঙা রোদ্দুর, না বৃষ্টির কলকলানি;

        তবু অনন্ত রাত্রির দ্রাঘিমা জুড়ে

        অন্তহীন একটা প্রেম দোল খায়

আর একটাতুই তুই গন্ধকে ঘিরে 

আমি খুঁজতে থাকি আমার সুবর্ণ জলাশয়। 

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

গোবিন্দ মোদক-এর কবিতা

বৃষ্টির অপেক্ষায় 

মনের মধ্যে চাতক-বিস্ময় নিয়ে 

অপেক্ষার সমুদ্রতটে বিভাজন আঁকছি 

মাথার উপর ধূসর আকাশ উপহার দিয়ে যায় 

নিদাঘ-মাত্রা নানাবিধ উপাচার সহ। 

আষাঢ়ের রথ ফিরে গেলেও 

প্রবল অনাবৃষ্টি মাটিকে রুখা-শুখা করে তোলে

উঠোনে পোঁতা লগিটার ততোধিক লম্বা ছায়া জুড়ে 

রাজত্ব করে গ্রীষ্মের তাপদাহ! 

বটতলার ছায়ায় ক্লান্ত ছাগলছানা 

একটু পিপাসা মিটাবার অপেক্ষায় 

মাকে আকুল ডাকে …

তখনই শোনা যায় বজ্রনির্ঘোষ।

ঈশান কোণ ভারী হয়ে ওঠে ভরপোয়াতির মতো,

বাতাস এলোমেলো বওয়ার অপেক্ষায় স্থির 

বিদ্যুৎ শান দেয় তার ইস্পাতের কাস্তেয় 

ওই সে আসে — গহন মেঘের ছায়া বুকে নিয়ে।

 

রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪

গোবিন্দ মোদক-এর কবিতা

শেষ স্বপ্ন দৃশ্য

আশা নিরাশার দ্বন্দ্ব শেষ হয়ে গেলে 

চাওয়ার আর কিছু থাকে না 

থাকে না পাওয়ারও কিছু। 

এখন আমারও সেই সুবর্ণ-দশা। 

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে 

প্রতিনিয়ত দেখতে পাই মৃত্যুমুখ 

জলছবির মতো ছেলেবেলা 

আর মধ্যরাত্রির দিনগুলি। 

কোথাও খুব করুণ সুরে 

একটা বেহালা বাজে 

বাজতেই থাকে ক্রমাগত 

আর আমি একটু একটু করে 

তলিয়ে যেতে থাকি নৈঃশব্দের ভিতর; 

জীবনের শেষ স্বপ্নদৃশ্যে দেখতে পাই –

একটা কাঠঠোকরা পাখি 

ক্রমাগত ঠুকে ঠুকে 

ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে 

আমার বুকের পাঁজর।

 

সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

গোবিন্দ মোদক-এর কবিতা

মায়ের আগমনবার্তা

অতঃপর বিদায় নিলো বর্ষাতি পরা বাদল মেঘের দল 

আর মোহিনী একটা আলো ছড়িয়ে পড়লো মহাকাশ জুড়ে 

নীল সামিয়ানার মতো পেঁজা মেঘের দল সেই নীলাকাশে 

সবিশ্রাম ভাসলো … ভাসতে থাকলো …

লোভাতুর কিছু মুহূর্ত পার হতেই 

নদীর ধারে চামর দোলাতে থাকল সাদা কাশের দল 

বাতাসে দুন্দুভি বাজালো আগমনী গান 

যোগ্য সঙ্গত করলো খালে-বিলে ফুটে ওঠা শাপলা-শালুক 

আর মোহিনী ঘাগরা পরে নাচলো লক্ষ শিউলিফুল 

পৃথিবীর আদিমতম স্তোত্র উচ্চারণ করলো পদ্মকুঁড়ি 

তখন শারদ দিবাকর উদ্ভাসিত হয়ে পাঠালেন মাভৈঃ বার্তা 

অমনি দিকে দিকে উঠলো সাজো-সাজো রব

জবা টগর স্থলপদ্মের দল প্রকৃতিকে সাজালো

প্রকৃতি সাজালো মনের আঙ্গিনাকে 

আর নীল আকাশে একাকী এক নীলকন্ঠ পাখি

উড়াল দিয়ে ঘোষণা করলো মহামায়ার আগমন বার্তা 

অমনি মৃৎশিল্পী সচকিত হলো 

ঢাকি জাগলো, কাঁসি বাজলো 

আর ঘাসের বুকে শারদ শিশিরে পা রেখে

এলেন জগন্ময়ী-মাতা।