প্রাণজি বসাক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
প্রাণজি বসাক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

প্রাণজি বসাক-এর কবিতা

হরফ 

কতটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকে ছায়ার মতো নীল মৃত্যু 

ঢেউরেখা মরে যায় আমার আর যাওয়া হলো না 

প্রশ্নপত্রের সব চিহ্নগুলো জোগাড় করে তুলে রাখ

অহেতুক চাঁদ ওঠে তুমি ইচ্ছে করে ভাঙলে আধা 

বংশের ভাঙাচোরা হরফগুলো কী সুন্দর সৌম্য

সবকিছু ফেলে ঈশ্বরের কাছে চাই দ্রুত প্রসব বেদনা 

প্রবসিত হোক জীবনের ভ্রান্ত-ভ্রূণসমূহ গ্রহণ পূর্বে 

শীতের পান্ডুলিপি আঁচলে জড়িয়ে হেঁটে যাও তুমি 

মানুষেরা ভুল ভুল মেঘে হাত মোছে প্রাত্যহিক বৃত্তে

প্রশ্নচিহ্নরা জেগে ওঠে মানুষের কাঁধে ছায়ার শরীরে 

 

কাছের ভাষা 


যেভাবেই হোক কেটে যদি দিতে পার কেটে দাও দাগ

নক্ষত্র খসে পড়া আকাশে দেখ একটুও লাগেনি তার

শুধু পৃথিবী কাঁপানো আলোর ঝিলিক কেটে দেয় স্বপ্ন 

কেউ দেখে কেউ দেখে না কে কতটা আলো দেখলো

এগিয়ে আসছে কাঁটাতার দাগ বরাবর কার ভাগে কে

জটিল ভগ্নাংশ রোদ বোঝে না ছড়িয়ে পড়ে অন্তরাগে

অক্ষরের ঘুম ভাঙে কী শব্দে হবে উপযুক্ত অলংকার 

দাঁড়কাকের নির্মম ভাষা আর টিনের চালে দাপাদাপি 

আমাদের সভ্যতার কথা মনে করায়মুখস্থ সংসারে 

মানুষের কাছের ভাষা বড় কঠিন লাগে মাস্টারমশাই 

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

প্রাণজি বসাক-এর কবিতা

ছায়াকে ফলো করে 


প্রতিদিনের ছায়াকে ফলো করে করে হয়রান রোদ্দুর

শুধু নিজেকেই জাহির করে ইধারউধার সকাল দুপুর 

শহরের গাছেরা আজ ভিজে আছে পাতা আর শরীর

অটো টোটো ক্যাব কেউ তোলে না ছায়াকে অকারণে 

রোদ্দুর বেশ ছাদে বসে চলে যায় সিআরপার্ক মার্কেট 

দিনকাল যা পড়েছে ভাইমানুষের দাম নেই কোনো 

পৈতৃক বাড়ি ভেঙে উঠছে মাল্টিস্টোরিজ ঝাঁ চকচক

গল্পগুলো সব উধাও সভ্যতা-সংস্কৃতি যেন বোবাকালা 

লেনদেন চলে অনলাইনে মানুষের মুখ দেখে না কেউ

মানুষগুলো সব গোলাকার হয়ে গেছে ভীষণ রোদ্দুরে 


বিলম্ব 


দাঁত দিয়ে কেটে নিয়েছি দুঃখের আশা আর শূন্যতা 

ভাতঘুমের দুপুরে প্রযোজক পাড়াতুত বৌদি সলজ্জে 

ছুঁয়ে দিই দেশের কন্ঠ তোমার স্বপ্ন দূরতম ঘুড়ি 

উড়ান সফল হলে হাততালি পড়বেই অর্থাৎ সফলতা 

কয়েক ধাপ সিঁড়ি টপকে লাফিয়ে উঠি উচ্চতর মঞ্চে 

গোলাকার মন্ডপে শতশত বেলুন সজ্জিত রংবেরঙের 

মধ্যরাতের প্রহর চিরে সানাই বাজছিল অদ্ভুত চরণে 

দাঁতে দাঁত চেপে অন্ধকারের গলা টিপে প্রশ্ন করি

সময়ের কাছে বড়রা কত তাড়াতাড়ি মানুষ হয় আর

মানুষের কাছে দাঁড়াবার সময়ও কত না বিলম্বিত হয়  

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

প্রাণজি বসাক-এর কবিতা

আমিও মানুষ

মানচিত্রে উপবাসের দাগ কেটে কেটে বদলে গেছে 

পাহাড়-পর্বত হিমালয় নেমে গেছে নদীনালা গ্রামশহর 

ছেড়ে দক্ষিণ মুখে – সাকিন খুঁজতে খুঁজতে কোথাও 

খুঁজে পাই না তোমার মুখে বহুবার শোনা গ্রামের নাম 

হয়রানি আর কাকে বলে অকেজো গুগল ম্যাপ তবু

সবুজ জলা জঙ্গল সতেজ নরম বাতাস ভালোবাসে 

মন থেকে হৃদয় থেকে মুছে গেছে পিনকোড ঠিকানা 

আমিও কখন হারিয়ে গেছি গ্রাম্য মানচিত্রে ঘুরপাকে

আমাকে চিনতেই পারছে না এখানের মানুষ জনেরা 

যেন অন্য গ্রহের কেউ কাছে গিয়ে বলি আমিও মানুষ 

 


আগুনের ক্যানভাসে

সৌন্দর্য পেট ভরে খেয়ে দূরে সরে যায় রোদ বেলায়

আঙ্গুলে নিস্পৃহ করগুলো সাক্ষী থাকে নিরীহ ভাঁজে 

হাতের করতলে ছড়িয়ে পড়ে স্পর্শাতুর দাগ অনুনয়ে 

সারাদিন খিদে থাকে ছায়ার শরীরে   দূরে সরে থাকে 

কতরকমের মিছিল আসে যায় দেশ জুড়ে ছায়ান্ধকার

শ্রান্ত ক্লান্ত  মানুষেরা মানুষেরই চোখের দিকে তাকায় 

ফিরে আসে না উত্তর –বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে প্রশ্ন 

সবাই যে যার নিজের কাছেই বড় একা বড়ই একেলা

মন্ত্রণা ছড়াতে ছড়াতে মানুষও বৃদ্ধ হয় মৃত্যু হয় প্রেমে 

ঘুরন্ত পৃথিবীতে মানুষ লেপ্টে পড়ে আগুন ক্যানভাসে

সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

প্রাণজি বসাক-এর কবিতা

মৃণালকান্তি 


একটি কাঠাম  মাটির স্বপ্ন শক্তির স্বপ্ন উৎসবের স্বপ্ন

শুকনো ছাতা গুটিয়ে রেখে বাজারে যান মৃণালকান্তি

নতুন চটি জোড়া দিব্যি হেঁটে যায় সোজা আড্ডা ঘরে

সেখানে লাশের হিসেব নিয়ে টানাটানি চলছে দু-দলে 

কি দরকার ছিল এমন আয়োজনের যেখানে রক্তের

স্বার্থ মূল্যহীন - শুধু দখলের রাজনীতি চলছে চলবে

মৃণালকান্তি রক্তমাংসহীন একটি শুকনো কাঠাম শুধু

মুখে শব্দ নেই আওয়াজ নেই প্রতিবাদের ভাষা নেই

তবুও সে তো মানুষ উঠে দাঁড়াবার শক্তিসামর্থ আছে 

জলহাওয়া মিথ্যে নয় স্বপ্ন দেখেন মানুষ মৃণালকান্তি

 

শুক্রবার, ২ জুন, ২০২৩

প্রাণজি বসাক-এর কবিতা

বড় হতে হতে

বড় হতে হতে কত বড় হয় একটা মানুষ তারই ছায়া

পিছু নেয় ছায়ার কোনো অহংকার থাকে না বিস্ময় 

ছুঁয়ে দাঁড়িয়েও থাকে না আনন্দ উল্লাসেও থাকে না

তবুও তার সহমৃত্যু হয় অনিবার্য অপসৃত কাল থেকে 

জানি তুমি মৃত্যুহীন কেউই কেড়ে নিতে পারেনি প্রাণ 

তোমাকে স্মরণ করে সকাল সন্ধে অনিয়মিত নিয়মে

ক্ষমা করো ক্ষমা করো হে মহতের মহত্ত্বময় মহামানব 

মানুষ কখনো কি নিজের ছায়া মাড়ায় অসত্যবিশ্বাসে

বড় হতে হতে একটা ছায়ায় একটা জাতি স্বপ্ন দেখে 

দীর্ঘ কায়া ছুঁয়ে ও মায়া জড়িয়ে মানুষ নতজানু শেষে

 

রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩

প্রাণজি বসাক-এর কবিতা


জন্মদাগ

চিবুকে জন্মদাগসহ জন্মেছিল বালিকা মণিদীপা

ঘরের মেঝেতে আলপনা দিতে অম্বরে লাগে দাগ 

আজন্ম চিহ্নিত রঙদাগ যেন বিশ্বজনীন মায়াসৃষ্টি

ভালোলাগা ভালোবাসা তুমুলযুদ্ধ কি হবে তবে হে

পাঠশালা থেকে নামডাকা হয়ে গেলে নামতাপড়া 

দাড়িয়াবান্ধা খেলায় যেটুকু লাফঝাপ তা জয়ঢাক

মাঠটুকু ফেলে বালকবালিকা যায় বিস্তৃত বাতাসে 

আর ফেরে না মুথাঘাসে মুখ ঘষে করে না আপন

যে বাতাস যে জল চলে গেছে জানালার দৃষ্টি পথে 

সে পথে মানুষ রেখেছে জন্মদাগ গ্রামীণ জনপদে

শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২

প্রাণজি বসাক-এর কবিতা

যতই উপরে তাকাই 


যতই উপরে তাকাই মন পড়ে থাকে নিচের বন্ধনে 

উঁচু স্বরে ডাক দিই যদি নেমে আসে সংকল্প কিছু 

অদ্ভুত নিয়মে বাঁধা এই উপর-নিচ আসমান পাতাল

কিছুই আপন নয় যতই গলা তুলে ডাকাডাকি হোক


 মুখের গলি থেকে আসে এইসময়ের যুবক বয়স 

তাকে ডেকে বলি এইমাত্র ঘটে যাওয়া ঘটনাসমূহ 

অসহিষ্ণু চঞ্চলতা অসহ্য চাপে পড়ে আছে কিনা 

বোঝা দায় - সে তবে নীল আকাশের দিকে তাকায় 


বুঝে নেয় সমস্যার সমাধান আর সাময়িক রূপভেদ 

এত এত মানুষের আনাগোনা একটু হলেও সহমত

জীবন যৌবন যেন এসফল্টে মোড়া মেরামতি গলি 

যুদ্ধের আপডেট নিয়ে আর নেই কোনো মাথা ব্যাথা 


অদ্ভুত নিয়মে বাঁধা এই উপর-নিচ আকাশ পাতাল

যতই উপরে তাকাই মন পড়ে থাকে নিচের বন্ধনে


 

বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

প্রাণজি বসাক-এর কবিতা

 

যাবার কথায় 


সাতটা বাজতে 'মিনিট এখনো বাকি

তড়িঘড়ি কোথাও বেরুনোর অভ্যাসে অভ্যস্ত নও  

সেকথা জানি বলেই বলছি 

কোথাও যেতে হলে অতো ভাববার কি আছে


বন্ধুরা জেনে গেছে আমাদের -সুখের কথা 

মাঝে মধ্যে গরহাজির থাকি সুযোগের অভাবে 

অপূর্ণই থেকেছে বহুবার সাজানো দিনলিপি 

তরতরিয়ে বেড়ে ওঠে রঙচটা বেলা


একা একা চলতে চলতে তোমার সাথেই যাব 

একথা অনিশ্চিত বলা যেতে পারে 

সাতটা বেজে 'মিনিট সকাল সকাল

ইতিমধ্যে আমরা যে যার মতো হারিয়ে গেছি