বিপ্লব চক্রবর্তী লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বিপ্লব চক্রবর্তী লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিপ্লব চক্রবর্তী-র কবিতা

চাবি- জন্ম

পাতা ধরে শিশিরফোঁটা ঝুলছিল মেয়েটি 
আমরা নিচ থেকে বিস্ময়ে তাকিয়েছি
বলেছি সাহসিনীর ভালো হবে একদিন 

পাতার আশ্রয় ছাড়া সে ছিল ভীষণ ভীষণ একা!

শরীরের স্থাপত্যগুলো নিলামে তুলতে চেয়েছিল
 ইনবক্সে মাপ জানতে তৎপর ছিল এক কবি
ভাবছিল লড়াইকে কীভাবে পণ্য করা যায়!

জানা গেল পাতানির্ভর একক লড়াই ছিল সাহসিনীর!

নিরালম্ব হাঁটত মহাশূন্যে সাহায্য ছাড়াই 
আগুনের ভেতরে বিশ্রাম নিত
রুখে দাঁড়াতে পারত!

পাতা থেকেই ছিঁড়ে ফেললো একদিন যুদ্ধভূমিতে!

তারপর মেয়েটা একটা মস্ত চাবি হয়ে গেল
যেটা এখন অনেকের হাতে হাতে ঘুরছে
গণতন্ত্র আর ন্যায়বিচারের তালা খোলার জন্য।।


 

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিপ্লব চক্রবর্তী-র কবিতা

বীজাঙ্কুর

যে ভাবেই বলিনা কেন
একটা শরীর পুড়ে যাওয়ার গল্পই 
ইনিযে বিনিযে আকাশের দিকে উঠে যায়
তুমি ভাব তোমার কথা বলেছি
এলো চুলের ঝরে পড়া খুঁজতে খুঁজতে খুব করে 
কাঁদ যখন আমিও আমার মত বিষাদ আঁকি
গাছেদের পাশে দাঁড়িয়ে দেখি
কেমন করে বৃষ্টিকে বুকে ধরে কাঁদছে
আমিও নীরবে চোখের জল ফেলি
বিষাদগুলো জড়ো করে 
খুব যত্ন করে বীজের মতো পুঁতে ফেলি পরপর
তারপর অপেক্ষা করতে থাকি
কবে একদিন হাতজোড় করে ওরা আকাশে তাকাবে
চোখের জল দিয়ে গোড়াগুলো ভিজিযে
পাশে বসে থাকি একজন বন্ধুর জন্য
এভাবেই আমার নিজস্ব দুঃখ ভুলে থাকতে চাই।

 

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

বিপ্লব চক্রবর্তী-র কবিতা

মন উবাচ
আমার দুটো সৌখিন জামা ছিল
গুছিয়ে রেখেছিলাম বহুবছর
এখন রং জ্বলে মোছনি হয়ে গেছে
সখের প্যান্ট-টাও একই কথা বলছিল ...

দুজন বন্ধু নিয়ে গর্ববোধ করতাম আমি
সিঁড়ির অনেকটা ওপর থেকে অনিমেষ এখনও ডাকে
সিঁড়ি ভাঙতে পারি না আমি বিচ্ছেদ হয়ে গেছে সব
জামা প্যান্ট বন্ধু  এবং  অন্তর্যামি...

অনিকেত এখনও লড়াইতে আছে জীবন জীবিকায়
বহুরূপী সাজাটাই ওর পেশা বলে
কখনও কখনও আমার শত্রুও সাজতে হয় ওকে
দুজন দুজনকে এড়াই সচেতন মধ্যবিত্ত মওকায়...

খুব একা লাগলে রাস্তায় এলোপাথাড়ি হাঁটি
দেখি লাল দন্তমঞ্জন বিক্রি করছে পুরনো হকার
দাঁত সাদা হয় না জেনেও অভ্যাসে বলে যায়
কিছু মানুষ একই ভাবে বন্ধক রাখে নিজেদের ঘটিবাটি।

গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে আমি এখনো অপেক্ষা করি
একজন নতুন ফেরিওয়ালার ডাক শোনার জন্য
পুরনো পোশাক বদলে দিয়ে নতুন দাঁতের মাজন দিতে
কথা নিয়ে নতুন কেউ আসবে একদম আনাড়ি... 

রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪

বিপ্লব চক্রবর্তী-র কবিতা

দহন কথা

পুড়ে যাওয়ার একটা ব্যক্তিগত অনুভব আছে
ছাই হওয়া যন্ত্রণাটা ধূপ হয়ে  মিশে যায় স্বজনে 
নিজের হৄদয় ছাড়া অন্যরা দেখতে পায়না বলেই
আমাকে খুঁটে খায় কটা শকুন নির্বান্ধব নির্জনে।

জ্বালানিছাড়া আগুন দেখিনা বলেই আমাদের 
বাড়ি ও আসবাবপত্র ভয়ে কাঁদতে থাকে যন্ত্রণায় 
দাহ্য তরলের মতো মসৃন সম্পর্কগুলো সেখানে 
বণিকি ষড়যন্ত্র হয়ে কালোজাদুর ভয়ে কাতরায়

ভাবি কোনো একদিন জ্বলনটা শেষ হয়ে যাবে
সমস্ত মাথাটাকে বলি আজ ক্ষত নিরাময়ের দিন
সেদিনই আগুন ধূপের অভাবে নিভে নিভে যায়
অযথাই ভেবে চলি পরদিন থেকে নিশ্চিত সুদিন।

 

রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

বিপ্লব চক্রবর্তী-র কবিতা

শব্দ ত্রাসের ধ্বনি

সেই সব শব্দ আর ত্রাস অহংকারে আশ্রিত হয়ে
স্পর্শ গন্ধ উল্লাস স্পর্ধায় লম্পট সৌখিন সব বঁধু।
আগুনের কাছে আহুতি দিতে সেইসব‌ ব্যমোরা
 ভীষণ চেপে ধরলে শকুনেরা কথা বলে যায়।।

আগুন এগিয়ে এসো আমাকে মুক্ত করে নাও
আমার শরীরের ভেতরে জমানো আবর্জনা সব।
লুকনো আত্মপক্ষ সমর্থন ধুরন্ধর অসহ্য চালাকি
নিরপেক্ষতার আড়ালে সমস্ত সবুজ লোভ।।

চিতাকাঠ জড়ো করে তৈরি হরিশ্চন্দ্র ডোম 
 সকল উচ্ছন্নটুকু নিয়ে শ্মশানে তৈরি হয়ে আছি।
চরাচর ভুতদের চিনি পেত্নি সব পরিচিত সাড়ম্ভর 
এসো পবিত্র আগুন পুড়ে যাক খেলা কানামাছি।।

 

শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২

বিপ্লব চক্রবর্তী-র ঝুরোগল্প

শুভানুধ্যায়ী

বদনদার ফোন সক্কাল বেলা,"অলোক, এখন কেমন আছে শ্রীলেখা?
---ভালো, জ্বরটা  একদম সেরে গেছে।কোন অসুবিধা নেই দাদা।সব ওক্কে।আমি এখন একটা কাজে বের হব।
-- না না অত হাল্কা ভাবে নিস না ভাই, বৌমাকে জিজ্ঞেস কর, পেঁয়াজ রসুনের গন্ধ পাচ্ছে  কি না!জিভে স্বাদ পাচ্ছে কি না।গলার ভিতর ভারি ভারি লাগছে কি না!
---ওসব কোন সমস্যা নেই দাদা,স্বাদ পাচ্ছে, গন্ধ পাচ্ছে!পুরো সুস্থ। রান্নাঘর সামলাচ্ছে।এখন মাংস কসাচ্ছে।
কথা বলতে বলতে অলোকের হঠাৎ মনে হল, বদনদার পাল্লায় পড়ে গেছে, নিস্তার নেই। মাথা খারাপ করে দেবে।বদনদা সব বিষয়ে সিরিয়াস। সূক্ষ্ম বিষয়কে ভাবাতে ভাবাতে একটা জটিল পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেওয়াটাই ওনার কৃতিত্ব। পারতপক্ষে বদন দাকে আমাদের বন্ধু বান্ধবেরা কখনো সমস্যার কথা বলেন না। সমাধানতো দূরস্ত,সমস্যার অনেকগুলো মুখ বের করে মাঝরাস্তায় দাঁড় করিয়ে দেবে। দাঁড় করিয়ে দিয়েও ক্ষান্ত থাকেন না,সময়ে অসমেয়ে ফোন করে শুধু উপদেশ আর উপদেশ দিয়ে যাবেন।গতকাল সকালে ঘন্টার চায়ের দোকানে আড্ডা মারার সময় বন্ধুদের সামনে বলে ফেলেছিল শ্রীলেখার জ্বরের ব্যাপারটা। বাজারের ব্যাগ নিয়ে উঠে আসতেই বদনদা দোকানে ঢুকেছিল, বেশ মনে পড়ছে। সম্ভবত তখনই বদনদাকে চন্দন,বিনয়, সুকুমারের মধ্যে কেউ না কেউ নিশ্চয় বলেছে শ্রীলেখার জ্বরের কথাটা।কথা বলতে বলতে ভাবছে কিভাবে এড়ানো যায়।বদন দার ক্রমাগত অনুসন্ধান সমানে ফোনের অন্যপ্রান্ত থেকে চলছে। বলছেন, " --অত হালকা ভাবে নিস না ভাই, লবঙ্গ দিয়ে লিকার চা  দিনে অন্তত  সাতবার দিবি শ্রীলেখাকে।জোর করে খাওয়াবি।"
-- প্রয়োজনে শ্রীলেখা নিজেই করে খায় দাদা!
--না ভাই অত সহজে নিস না,মেয়ে আর তুই বৌমার থেকে দূরে থাকবি, বেশি প্রেম দেখাতে যাসনা।অন্তত চোদ্দো দিন তুই আর মেয়ে শ্রীলেখার ছায়া মাড়াবি না।
----আচ্ছা ঠিক আছে দাদা।বলছিলাম একটু ব্যাস্ত আছি, পরে না হয় ফোন করছি।
-- আর শোন ভাই ,পারলে ব্লাড নয়তো সোয়াপ দুটোর একটা টেষ্ট করিয়ে নে।ব্লাডে চব্বিশ ঘন্টায় রেজাল্ট পেয়ে যাবি,সোয়াপে একটু বেশি সময় লাগবে।আজই করে ফেল।তারপর অন্যকাজে যাবি।
---বুঝতে পেরেছি বদন দা, আমার বউ এর করোনা না হওয়া পর্যন্ত তোমার শান্তি নেই।
বলে ফোনটা কেটে দিলেন অলোক।

 

শনিবার, ১ জানুয়ারী, ২০২২

বিপ্লব চক্রবর্তী-র কবিতা

ভালোবাসা

ভালোবাসি---

সারারাত সিঁড়িপথে বসে

শিশিরপতন শুনি

 

একফোঁটা যে ছন্দ অন্যফোঁটা

ভিন্নবাণী-----

পাতার স্তনাগ্র থেকে

টুপটুপ খসে পড়ে জল

আমি কামুকতা নিয়ে চেয়ে থাকি

ভালোবাসি---

সারারাত সিঁড়িপথে বসে থাকি।

 

বৃহস্পতিবার, ১ এপ্রিল, ২০২১

বিপ্লব চক্রবর্তী-র কবিতা


রুবানার মনখারাপ

 

যশোর থেকে রুবানা লিখেছে ম্যাসেঞ্জারে,

পলাশে এবারও নাকি কোনও কুঁড়ি

ধরেনি,গাছটা বেঁচে আছে কোনক্রমে।

রাস্তার জন্য ওদের কৃষ্ণচূড়া গাছটাও

কয়েকবছর আগেই কাটা পড়েছে।

শিমুলের বনতলিতে রিসর্ট,সেখানে প্রেম

বিকিকিনির উল্লাসি খানাপিনার মহরম।

লিখেছে ,সালাউদ্দিন-জব্বার-বরকত

রফিকুদ্দিনের কবরে এবারো নিজের বাগিচার

ফুল দিতে পারবে না,-- রকমের কয়েকটি

অভিমান।লিখেছে, বাংলা বর্ণমালায় এখন

কয়েদি পোশাক। পদ্মার এপার ওপারে লুটেরা

বাতাস ফেলে দিতে চাইছে বাংলা হরফ!আমরা

রবীন্দ্রনাথ,নজরুল,জীবনানন্দ,জসীমউদ্দিন,

আর শামসুর রহমানকে দিয়ে আত্মরক্ষার

প্রাচীর গড়েছি সব ষড়যন্ত্র ভেঙে দেবার জন্য।

 

 

 

 

 

সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২০

বিপ্লব চক্রবর্তী

 


সতর্ক  অভিযোজন

 

খুব সাবধানে আছি নিশ্বাসে বারুদ নিয়ে

তোমার আমার দূরত্বের মাঝ বরাবর 

লেগে আছে সন্দেহ। কেউই বিশ্বাসী নই

তীক্ষ্ণ কাঁটা লেপটে আছে দোলের রঙেতে

সৃজন ভূমিতেও কথারা বাগান সাজায়

যারা আছে জন্মরোগী নিজেরাই দোসর

উল্লাস রব তুলে সচকিত করে যায়

নিজেদের গভীরতাহীন শৈশব কথন। 

কালো বেড়ালের মতো অন্ধকার এগিয়ে

ধরেছে আমাদের চেনা চেনানোর ভাষা

ঘাতকের সব আয়োজন শেষ হয়ে গেলে

আমাদের প্রতিটি হৃদয়ে তৈরি হবে শোক

 যারা প্রিয় নারীর কাছেই পৌঁছাতে পারেনি

এখনও  তাদের জন্যই  এইসব ধাঁধা।