গোলাম কিবরিয়া পিনু লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
গোলাম কিবরিয়া পিনু লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

গোলাম কিবরিয়া পিনু-র কবিতা


কোপনপ্রকৃতি

খাদ আর ফাঁদ

         তৈরি করি বলেই বিবাদ,

            বিবাদেরও রয়েছে নীল ঝুঁটি!

টুঁটি চেপে ধরতে চাই

            টিয়াহীরামন  চন্দনার

কাকাতুয়া হতে পারছিনে--

           গানে গানে ভরিয়ে তুলবো,

               মনেরও জট খুলবো,

দুলবো  দোলাবো!

 

ক্রোধপরায়ণ মানুষের কোপনপ্রকৃতি

প্রকৃতিকেও নষ্ট করছে,

         হয়ে পড়ছি খড়গহস্ত--

হস্তিও বিলুপ্ত হচ্ছে!

 

কোল  ক্রোড় থেকে ফেলে দিচ্ছি

           মমতা  ভালোবাসা,

টেনে নিচ্ছি অবিশ্বাস  বিশ্বাসঘাতকতা,

             হয়ে উঠছি ফেরেরবাজ!

বাজপাখি হয়ে উড়ি আকাশে!

বাতাসে ছড়িয়ে দিই ক্ষতিকর কার্বন!

 

মানুষের রোষানল--

দমকল জল ঢেলে ঠান্ডা করতে পারছে না!

ঠেঁটাপনায় পরগণায় পরগণায় লুপ্ত হচ্ছে শুভবোধ!

মানুষ ভব্যতা হারাতে হারাতে--

              সভ্যতা হারিয়ে ফেলবে?


রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪

গোলাম কিবরিয়া পিনু-র কবিতা

আবিষ্কার

তোমার আগুন আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে
পুড়ে যাওয়ার ভয়!
কেন যে আগুন আবিষ্কার করলাম
                           --তোমার ভেতর!

তপ্ত হই--উষ্ণ হই--তাপসহ হই অগ্নিকল্প
অল্প অল্প পুড়তে থাকি,
                  কখন যে পুরো পুড়ে যাই!

মেরুঅঞ্চলে থাকার পরও
ঠান্ডায়-বরফে জমে যাওয়ার পরও--
তাপপ্রাপ্ত হয়ে
          কখন যে আমিও ফায়ারপ্লেস হয়ে উঠি!

কখন যে দপ করে জ্বলে ওঠো
কখন যে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠো--
গৃহদাহ না হলেই ভালো
                   লঙ্কাকাণ্ড না হলেই ভালো!

 

সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

গোলাম কিবরিয়া পিনু-র কবিতা

সন্তানের পদশব্দ

সিঁড়িতে পায়ের শব্দ শুনে
বুঝতে  পারেন
     তাঁর সন্তানটি আসছে ঘরে

চটিজুতো পরে আসলেও টের পায়
         বুটজুতো পরে আসলেও টের পায়,
তাঁর সন্তান কলিংবেলে হাত রাখার আগেই
মা হৃদপিণ্ডে লাগানো কলিংবেল বেজে ওঠে!

মায়েরা যে ঘরেই থাকুক না কেন?
                সন্তানের জন্য –––
খিড়কিদুয়ার খুলে রাখে
      সিংহদরোজা খুলে রাখে
            সদরদুয়ার খুলে রাখে
ঘরের কপাট বন্ধ করে না কখনো!

সন্তানের পদশব্দ কত অব্দ ধরে যেন চেনা!


 

শুক্রবার, ২ জুন, ২০২৩

গোলাম কিবরিয়া পিনু-র দীর্ঘ কবিতা

রবীন্দ্রনাথ

ধূলিঝড়ে পড়ে গিয়ে যখন আমরা
দিকভ্রান্ত! প্রান্ত এক এক করে খসে যায়
মরীচিকা নিয়ে আঁধিঝড়ে স্বপ্নের স্খলন হয়
             তখনই তোমার অবিশ্রান্ত ঝর্নাধারা
                    আমাদের জলধারা হয়ে ওঠে
                    আমাদের স্রোতস্বিনী হয়ে ওঠে
                    আমাদের কুলবতী হয়ে ওঠে
                    আমাদের অন্তঃশীলা হয়ে ওঠে
মরুপ্রান্তরের মরুজাত অবস্থা কাটানোর পর
ধূলোকণা দূর হয়ে যায়
           ত্রসরেণু দূর হয়ে যায়
কাকচক্ষুর মতন নির্মল জলের দেখা পাই!

জলকাদা মাখা রাঙামাটি আরও রাঙা হয়ে ওঠে
                  অভয়অরণ্যের ভেতর--
রক্তকরবীর দেখা পাই
    রক্তকমলের দেখা পাই
      কৃষ্ণকলির দেখা পাই
          কিংশুকের  দেখা পাই
            মৃণালিনীর দেখা পাই
সপ্তমুখী জবা ফুটে ওঠে
প্রসবন নিয়ে কাকলি-কুজনে মেতে ওঠে
         পানকৌড়ি-নীলমণি-যাযাবর পাখি!

তার পাশে জেগে ওঠে সজীবতা
তার পাশে জেগে ওঠে নবীনতা
তার পাশে জেগে ওঠে প্রাণময়তা
                    তার নাম তুমি
তুমি আমাদের নিত্যকালের অখণ্ড মূলভূমি!

এ ভূমিতে তোমার বৈশাখ
এ ভূমিতে তোমার শরৎ
এ ভূমিতে তোমার হেমন্ত
এ ভূমিতে তোমার বসন্ত
এ ভূমিতে তোমার বর্ষাকাল
দূর করো যেন শস্যহানি ও আকাল-
         সে কারণে শুধু তুমি রবি নও
                    আমাদের এক সূর্যঘড়ি!
কালজ্ঞান নিয়ে কখনো থাকি না স্থির
তোমারই বোধভাষ্যি নিয়ে বোধের অতলে নড়ি।

তোমারই সপ্তসুর থেকে সুরবোধ নিয়ে
সঙ্কোচ কাটিয়ে জড়তা কাটিয়ে
নিজেকে বাঁচানোর রক্ষাকবচ খুঁজে পাই--
রক্ষপুরী থেকে বের হয়ে
          তমসার তাম্রশাসন থেকে বেঁচে উঠি
                   তানপুরা হাতে নিই
অন্ধকারের ঠাসবুনন থেকে বাঁচি
সপ্তসিন্ধুর উষ্ণজল ছুঁই
স্বপ্ন নিয়ে সপ্তলোকে যাই,
গলা ছেড়ে গাই গান--হই প্রসারিত
              তোমার আকাশপ্রান্ত কী অবারিত!

তোমার অন্তরা থেকে আমার অন্তর জেগে ওঠে
                          আত্মতত্ত্ব খুঁজে পাই
                              খুঁজে পাই ঐকতান।
অন্তর্জগতের কপাট এক এক করে খুলে যায়
স্বভাবসৌন্দর্য নিয়ে কী তোমার শক্তি! কী তোমার গান!
তোমার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বাড়ে--
                              আমাদেরই মান
                              আমাদেরই মান।      

 

রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩

গোলাম কিবরিয়া পিনু-র কবিতা

ঋতুসন্ধিতে বসন্ত    

অপেক্ষায় থাকি –––
মুলতবি করে রাখি–––রঙিন হওয়ার সাধ,
                      আসুক বসন্ত!
তারপর হই আনকোরা –––
                  টাটকা ও তাজা হয়ে
ঋতুসন্ধিতে হই অভিনব জোড়া!

পূর্বজ্ঞানে ––– মাত্রাজ্ঞানে ফেলে রাখি
                      প্রত্ন ও ধ্বংসাবশেষ,
পরি ––– হলুদ রঙের প্রকৃতির বেশ!

ভবিতব্য জেগে তুলি পুষ্পের বোঁটায়
তা দেখে ধনিয়া ও মটরশুঁটির জমিও দুলতে থাকে,
আমি আরও রাঙা হই--সৌরতাপে ফাল্গুনে!

বসন্তভৈরবী নিয়ে –––
কুঠরিতে থাকি না ––– থাকি না কোনো কোঠায়
নদীর জলও শেষ হয়ে যায় ––– তৃষ্ণার ফোঁটায়!


 

সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২২

গোলাম কিবরিয়া পিনু-র কবিতা

আবিষ্কার

একদিনই তোমাকে কতটুকু আবিষ্কার করা
যাবে? তুমি তো একগ্রন্থে লিপিবদ্ধ নও,
নও শুধু কার্ল মার্কসের দাস ক্যাপিটালের
বিশ্লেষণে মূর্ত! বহু গ্রন্থের অধ্যায়ে অধ্যায়ে
মানুষের উপস্থিতি, এক অধ্যায়ের সাথে আর
এক অধ্যায়ের মিল খুঁজে পাওযা যায না!
আশা ও বিশ্বাস দু’টোই ছলনাময়, সময়ে
সময়ে কত রঙ নিয়ে রঙ বদলায়! মানুষের
সাদা অংশের চেয়ে অন্ধকারের অংশ বেশি,
তা আবিষ্কারের অপেক্ষায় থাকে, কিন্তু পুরো  
আবিষ্কার করা যায় না!

 

শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০২২

গোলাম কিবরিয়া পিনু-র কবিতা

কলেজ পড়ুয়া মেয়ে

কলেজ পড়ুয়া অল্পবয়স্ক মেয়ে
মেষপালের সাথে যাচ্ছো কোথায়?
      
মেষপালের সাথে থাকে লোমশ-কুকুর।

কয়লাখনির দিকে ধাবিত হইও না--
    
প্রশিক্ষণ না থাকলে অন্ধকূপে পতিত হবে,
    
নিজেকে আয়ত্তে আনার চেষ্টা করো।

অনেক কিছু লিখতে চাইলেলেখো--
    
কিন্তু যতিচিহ্ন বসাও
    
না হলে বাক্য হবে না।

পুঞ্জ-পুঞ্জ মেঘের ভেতর খেলা করে বিদ্যুৎ
    
লজ্জায় লাল হয়ে গেলেও
    
নিজের স্বরূপ দেখো।

রঙিন-আনন্দ চুলের ফিতায় জ্বলজ্বল করবে
    
 বয়সে তা জানি,
    
ফুল  পাতার আড়ালে লুকাবে কতদিন?

নিজের মুদ্রণ দেখে প্রুফ কাটো
    
তাই বলে নিজের সাথে যুদ্ধ করতে করতে
    
ক্লান্ত হয়ে পড়ো না।

নিজেকে সজ্জিত করো--
    
তবেআচ্ছন্নতা অচেতন করে তুললে
    
সহজেই দাহ্য হবে।

মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

গোলাম কিবরিয়া পিনু-র কবিতা

অবাক হই না 

আমি এখন অবাক হই না

কোনো লোকের বাতি নেভানোর

              --কৌশল দেখে!

আমি এখন অবাক হই না

ড্রেসিং-রুমে না গিয়েই

   রূপ পাল্টানোর দৃশ্য দেখে!

কারো হাতে উঠতে পারে ছুরি

তাতেও আমি অবাক হই না!

       অবাক হই না!

কচ্ছপের লড়াইয়ের ভেতর পড়ে গিয়ে

নাভিশ্বাসস্বপ্নচ্যুত হই--

    গহীন নদী জলহারা হয়

তাতেও আমি অবাক হই না!

ছদ্মনামে স্বরের প্রকাশ

খুশবু ছড়িয়ে--

   রাতের শিউলি হত্যা করা

অবাক হই না!

চূর্ণ হওয়ার ভয় থেকে যায়

একটা প্রান্ত খসার পরও

অন্য প্রান্ত খসে যায়--

   তাতে আমি অবাক হই না!

ভোজনবিলাসী পোশাকবিলাসী

পুষ্পরেণু গুঁড়া হওয়ার পরও

অবাক হই না-অবাক হই না!

বিরক্তিকর ধ্বনি শোনার পরও

  অবাক হই না--

নাভিদেশ থেকে ঊর্ধ্বমুখী শ্বাসের টান

       অবাক হই না!