অধীরকৃষ্ণ মণ্ডল লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
অধীরকৃষ্ণ মণ্ডল লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

অধীরকৃষ্ণ মণ্ডল-এর কবিতা

মেঘে ঢাকা চাঁদ

একটা সরলরেখা আঁকলেও রৈখিকতা বোঝা যায় না
অথচ জ্যামিতিক নিয়মে আঁকা হয়ে যায় কত।
এখনো তার পরিমাপ আজও বুঝে উঠতে পারিনি
তবুও রেখার টানে দৃষ্টি ছিল অপলকে
প্রত্যাশা ছিল সরলগতিময়।
একটা চিহ্নের বাস্তবতা বোঝাতে অনেক পথ হাঁটা
জীবনে সীমাহীনতার কত চলমান রূপ
প্রাচীন বৃক্ষ ছায়া পথের গতিপথ চেনালো
অজস্র ফুলের ভেতর যেন কার নির্দেশনা
আকাশের নিচে কত প্রসারিত মুখ
তবু সরলতা বুঝতে সময়ের পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে
একটা দৃশ্য পটে কার যেন মেঘে ঢাকা চাঁদ
তার রূপের মধ্যে শুদ্ধতম গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো বিকেল।

 

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

অধীরকৃষ্ণ মণ্ডল-এর কবিতা

রঙিন স্বপ্ন

পৃথিবী পরেছে রঙিন সানগ্লাস
চারদিকে পড়ে আছে বাসন্তী বর্নমালা।
পলাশে ঢাকা সারা শরীরটা
শুধু মুখের মাঝে বেদনার হাসির প্রলেপ।
মুথা ঘাসে ফুটেছে পড়ন্ত পলাশের বিকেল
সেই কবে সকালে এসেছিলো বসন্ত সময়।
আজ দৈত্যের বাগানে কেউ হাত বাড়ায় না আর
অন্তত গোল আলাপ নেই গোলাপে
বিবর্ণে কোনো ধস নেই আর
সমবেত সংগীতে আকুল প্রার্থনায়
কুঁড়ির আত্মত্যাগে অমলিন সকাল ফিরে তাকায়।
শহীদ বেদির সিঁথিতে পৃথিবীর সব রং
বসন্তের আঁচল ভরা কত রঙিন স্বপ্ন।

 

রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪

অধীরকৃষ্ণ মণ্ডল-এর কবিতা

দশ দিক

কপালে    বিবর্ণ ফোঁটা
চোখে      ঝর্নার কথকতা
মুখে        অব্যক্ত কাব্য
শরীরে     স্বচ্ছ শারীর বিদ্যা
পায়ে       ভ্রমণ বীথি
হৃদয়ে     অনুভূতির সাম্রাজ্য
সামনে    ভাবি সকাল
পেছনে    জীবনী স্মরণিকা
উপরে     চন্দ্র-সূর্য সম্পর্ক
নীচে       মাটিতে শিকড় ---
এভাবে দশদিকের জন্ম ।

 

রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

অধীরকৃষ্ণ মণ্ডল-এর কবিতা

শুভ জন্মক্ষণ

জন্মদিন ছিল ভারী মজার —
মেঘ দিল জল পাখি দিল ফল
নিম গাছের কোলে কত হিম দেখার।
মায়ের কোলে শিশুর কত চিৎকার —
পৃথিবী জুড়ে মা-শব্দ ধ্বনিত হলো
নিমের গন্ধে আমোদিত জগৎ নিরাকার।
আতুর ঘর বলতে এক ঢেঁকিশাল।
২১ দিন বুকের ভেতর আঁচল পাতা
অমনি উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনি কত বিশাল।
পাতা ঝরছিল যত খুশিও ছিল তত —
নিমফল ছড়ানো, নামল এক বিকেল
রাতের চাদরে ঢাকা মায়ের অপেক্ষা কত।
আজ নিমগাছ নেই ঢেঁকিশালও নেই
অথচ আমি আছি আর মাও আছে
নিমের শুশ্রূষায় শুদ্ধিকরণ পাবে চাইলেই।

 

সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

অধীরকৃষ্ণ মণ্ডল-এর কবিতা

চেনা অচেনার ভিড়ে

 

লাটিস হাতে বালকটির শিশু-ঘুড়িটা

কেবল উড়তে শিখেছে পাখনা মেলে।

আকাশ যতটা পাখি চেনে সহজে

ঠিক ততটা ঘুড়ির সঙ্গে আলাপ।

আকাশ হয়তো বোঝে এসব কথা –––

তাদের পরিচয়টা অনেকটা জ্যামিতিক নিয়মে।

এভাবেই ঘুড়িটার আত্মমহিমা প্রকাশ

এভাবেই পাখিরও কত স্বহৃদয়তাবোধ।

ঘুড়ির অধিকার হরণ করেছে যারা

তাদের প্রচেষ্টা ফাঁস হয়ে যায় একদিন।

পাখির স্বাধীনতা কেউ হরণ করলে

অমনি আকাশের ক্রোধে মেঘ জমে ওঠে।

একদিন সব বন্ধন ছিঁড়ে ঘুড়ি চাইলো ক্রমমুক্তি

হঠাৎ তার ছিন্নমুন্ডু ঝুলতে থাকে মগডালে!

সেই ঝুলন্ত মুন্ডুপাত দেখে আকাশ কি

সত্যই সনাক্ত করতে পেরেছিল তাকে?

 

শুক্রবার, ২ জুন, ২০২৩

অধীরকৃষ্ণ মণ্ডল-এর কবিতা

চালচিত্র

 

সকালে জ্বর উঠলে চাদর দিয়ে ঢেকে রাখে মেঘ

তাপমাত্রা কমানোর জন্য ঢালে বৃষ্টি ভেজা জল।

যেই ৯৮ ডিগ্রি অমনি চাদর সরিয়ে হেসে ওঠে শিশু

পথ্য ––– থালাভর্তি উষ্ণ রুটি আর সামনে রাখা এক গ্লাস বৃষ্টি।

দুপুরে ঝর্ণায় একটু কাকস্নান সেরে শুধু উঠে বসা

সামনে একটা শালপাতায় শান্ত ছায়ার ভোগ্যবস্তু।

সন্ধে নামলেই রাতের বিছানায় খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো সুর

রাতের জ্যোৎস্না শিয়রে বসে হাত বুলায়, নিয়ে যায় ঘুমের অনন্তে।

 

বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৩

অধীরকৃষ্ণ মণ্ডল-এর কবিতা

আমরা 

 

কত দিন পেরুতে থাকে রাত

রাত পেরুতে থাকে কত দিন

দিনের শৈশবে দেখি কত বড় গোলক

গোলকের ভেতর জ্বলমল করে নোলক

নোলকের ঝুলন্ত প্রকাশে সুপ্রভাত আসে

আসে অভিনন্দিত পুববাংলার গর্ভপাত

গর্ভপাতে দিনরাত হয়ে যায় সমান সমান

যায় বলেই মা আর সন্তানের এই স্বদেশ

স্বদেশ পুবের, পশ্চিমের, উত্তর দক্ষিণের

মা আর সন্তান পৃথিবীর প্রথম অধিকারী

অধিকারী হয়ে সূর্যকে টাঙিয়ে রাখে পুবের দেওয়ালে

দেওয়ালের চারপাশে মিউজিয়ামে রাখা বড় সংসার

সংসারে তুমি আর আমি থেকে হতে থাকি আমরা।

 

 

মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০২২

কবিতা : অধীরকৃষ্ণ মণ্ডল

গনগনে আঁচে বৃষ্টির পাখনা

প্রথমবারে ঝলসে ওঠে পাখনা
দ্বিতীয়বারে পুড়তে থাকে রহস্য
তৃতীয়বারে গলতে থাকে বেদনা
চতুর্থবারে নামতে থাকে রসকলি
পঞ্চমবারে ছিটোতে থাকে মাধুরী
ষষ্ঠবারে বিঁধতে থাকে মানসী
সপ্তমবারে গিলতে থাকে টোপ
অষ্টমবারে ঝুলতে থাকে দড়ি
নবমবারে দুলতে থাকে শরীর
দশমবারে হাসতে থাকে গৌরবী।
 

শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২

অধীরকৃষ্ণ মণ্ডল-এর কবিতা

পুবের চিঠি

রাতের বোতাম খুললেই শিশির ভেজা চোখ
শিশির জড়ানো চাদরে হাসিখুশি এক দেবশিশু                       
হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ে সুদূর তেপান্তরে
অদূর এক পাতার ভেতর আলাপ-বিলাপ শুরু
আলাপে সব গোপনতা খুললেই লজ্জায় ঢাকা মুখ
বোরখা নামিয়ে পরিচয় ঘটে ––– কেবল মানুষ মানুষ
পরিচয়ে চিনে নিতে পারে নিজস্ব জীবনের সত্তা
জীবনের আড়ালে চলে কত আত্মরক্ষার প্রশ্ন
আত্মাভিমান ভেঙে দ্বিচারিতায় ঘটে কত অকাল মৃত্যু
অকাল বোধনে আমরা সবাই জেগে উঠি রাতের বোতাম খুলে
রাত আছে বলেই তো এখনও তোমাকে চিনতে পারি
আজও তোমার পরিচয়ের বার্তাবাহক নক্ষত্র উপমাখানি
নক্ষত্র আছে বলেই তো পিওনের পুবের চিঠি খুলি।