রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩

মহুয়া দাস-এর অনুবাদ কবিতা

সানগ্রে হ্যান



ফুলের হাসি
এক জাপানি বন্ধুর 
হঠাৎ জিজ্ঞাসা,
ঐ অক্ষরগুলোর মানে বলতে পারো?
অক্ষরগুলো হাসছে কিন্তু,দ্যাখো।
চেয়ে দেখি সেখানে এক ফুল।

ফুলের দোকানের কাচের দরজা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে,
হাসছে এক ফুটন্ত ফুল।
সেখানে আরও অনেক ফুল
নজর কাড়ছিল,
নানা প্রজাতির।
দরজার বাইরে লেখা ফুল শব্দটি
ফুলেরই মতো উজ্জ্বল, হাসছিল।

প্রত্যেকটি পাতায় পাতায় যেন ফুলের আলিঙ্গন।
তাদের মুখে অন্য কিছু নয়,
শুধুই হাসি।
আরও হাসিতে পূর্ণ হয়ে উঠুক তারা।

এক স্মিত ফুল কখনো কি দুঃখী হতে পারে!

আমি তোমাকে এক চলন্ত গাড়িতে দেখতে পেলাম,
এক পলকের জন্যে।
একটি ফুল যেন অন্য ফুলকে দেখছে।
ফুল দেখে তোমার মুখে 
যেন হাজার ফুলের হাসি।

এই সুন্দর ফুলের মতো হাসি
তোমার মুখে চিরকাল থাকুক।
তোমার মুখে যেন দর্জি 
তার নিপুণ হাতে 
ফুলের শরীর ফুটিয়ে তুলেছে।
এ তো ফুলই।
সত্যিই এক সুন্দর ফুল।


আমার স্বপ্নই আমার ভুল

স্বপ্ন দেখা আমার ভুল হয়েছিল, 
ভেঙে পড়া সেই রাজ্যের পিছনের বাগানে 
কত ফুল ফুটে আছে
তবু রাজতন্ত্রের ক্রুরতা সেখানে স্পষ্ট। 
এখানে কখনোই ছিলাম না, 
আদিম সব রং ফুটে আছে এখানে
এ যেন চলচ্চিত্রে দেখা আশ্চর্য  সব রঙের উন্মীলন। 
সিনেমাস্কোপ যেন। 

ক্যালিডোস্কোপের স্মৃতি আনে মনে, 
বাওবাব গাছ কেন তার 
মাথা আর ডালপালা
 আকাশের দিকে তুলে দাড়িয়ে? 
দিনরাত সে কোন স্বপ্নে বিভোর? 
মনে হয় স্বপ্নের কোষে কোষে
পৌঁছে গেছে তার ইচ্ছেরা, 
বাতাসের মাঝে ভেসে ভেসে। 

না, তাও নয়। 
এটা তার দোষ যে, সে, 
মাটিতে নিজেকে প্রতিস্থাপিত না করেই, 
আকাশে পৌঁছনোর স্বপ্নে বিভোর ছিল, 

যদিও আমি তার ছায়া হারিয়েছি, 
তার সমগ্র জীবনের প্রকাশ ঘটে গেছে ইতিমধ্যেই।

 

[সানগ্রে হ্যান ১৯৫৫ সালে কোরিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন কবি, রচনাকার, অনুবাদক (জাপানী-কোরিয়ান)। সহকারী অধ্যাপক । তিনি সেজং বিশবিদ্যালয়ে জাপানি ভাষা ও জাপানি সাহিত্যের প্রধান ছিলেন। তাঁর কাজের জন্যে তিনি কবিতা ও  সচেতনতা বিষয়ক নবাগত পুরস্কার, কোরিয়া থেকে হিওনান্সিওলহিওন সাহিত্য পুরস্কার এবং জাপান থেকে সিতোসোজো পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি অনেক জাপানি সাহিত্যকর্ম কোরিয়ান ভাষায় এবং  কোরিয়ান সাহিত্যকর্ম জাপানি ভাষায় অনুবাদ করেছেন। এই কাজে কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কাব্যিক সংকলন, শিশুদের বই, আত্ম প্রতিরোধের বই ও বিজ্ঞানের বই রয়েছে।]

1 টি মন্তব্য: