একটি পাখি, একজন দেবদূত
অন্ধকার দৃশ্যাবলির ভিতর থেকে উড়ে এল
একটি পাখি
দগ্ধ স্মৃতি আর নির্জন আত্মার পালক
দুঃখ আর যৌবনের প্রথম নির্বাসিত সন্তান
একটি পাখি
তন্দ্রাতুর মানুষের দু'চোখের অনল অনিদ্রা
একজন দেবদূত
যারা কবিতা পড়ে না কবিতা তাদের জন্যই
একজন কবি বলেছিলেন
যারা কবিতা পড়ে না
কবিতা তাদের জন্যই
তাদের বুকের ক্ষত এবং কাঁটা ঢুকে থাকা
আঙুলগুলির জন্য
মৃত এবং জীবিত মানুষগুলির
আর্ত আনন্দের জন্য
বন্ধ্যা পথের ওপর দিয়ে অহর্নিশি চলাচল করা
আর্তনাদের জন্য
মরুভূমির সূর্যের জন্য
মৃত্যুর অর্থ এবং জীবনের শূন্যতার জন্য
ধ্বংসাবশেষের কালি মাখা কালো পাথরটির জন্য
কুমারীদের কামার্ত ঠোঁট দু'টির মধ্যকার
সিঁদুরবর্ণের জন্য
কাঁটাতারে পাখা মেলে পড়ে থাকা
হলুদ প্রজাপতির জন্য
কীটপতঙ্গ শামুক শ্যাওলা শালুকগুলির জন্য
বিকালের আকাশে একাকী উড়ে যাওয়া
পাখিটির জন্য
পাঁচশ নিযুত ক্ষুধাতুর রুগ্ন শিশুর
মায়েদের জন্য
রক্তের মতো চাঁদের রং লাল হয়ে যাওয়ার
ভয়ের জন্য
প্রতিটি স্তব্ধ মুহূর্তের জন্য
তাঁদের প্রেমের জন্য
একটি চুম্বনের জন্য
মাটির মানুষ পুনরায় মাটি হবে
সেই প্রাচীন প্রবাদের জন্য
[অসমিয়া ভাষার ভারতবিখ্যাত কবি নীলমণি ফুকন-এর জন্ম হয় ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩ সালে আসামের দেরগাঁও-এ । পেশা ছিল অধ্যাপনা। ১৯৮১ সালে পান সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার। এগারোটি কাব্যগ্রন্হের জনক নীলমণি ফুকন ২০২১ সালে জ্ঞানপীঠ পুরস্কারে ভূষিত হন। আসামের দু'টি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডি. লিট উপাধি প্রদান করেছে। কবিতা ছাড়াও শিল্পকলা, অনুবাদ এবং প্রবন্ধের জগতেও তিনি ছিলেন সমান সৃষ্টিশীল। নবতিপর কবির প্রয়াণ ঘটেছে অতি সম্প্রতি গত ১৯ জানুয়ারি ২০২৩।]
অনূদিত কবিতা দুটির জন্য রঙিন ক্যানভাস উজ্জ্বল হয়ে রইল।
উত্তরমুছুন