রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

সম্পাদকের নিবেদন


 সম্পাদকের নিবেদন

বিশ্বখ্যাত দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল। জন্ম ১৮৭২ সালে ইংল্যান্ডে। লিখেছেন বহু মননশীল বই। বইয়ের বিষয় ছিল শিক্ষা, বিজ্ঞান, গণিত, রাজনীতি, সমাজতত্ত্ব, ধর্মতত্ত্ব, দর্শনশাস্ত্র প্রভৃতি। দার্শনিক হিসেবে সমগ্র বিশ্বে সমধিক পরিচিত হলেও, গণিতবিদ হিসেবেও তাঁর বিশ্বখ্যাতি ছিল।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে শান্তিবাদীর ভূমিকার জন্য কারাদন্ডে দন্ডিত হোন। পারমানবিক নিরস্রীকরণের সপক্ষে তাঁর ছিল প্রতিবাদী সংগঠকের ভূমিকা। 

সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান ১৯৫০-এ। 

তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছেপ্রিন্সিপল্‌স্‌ অফ ম্যাথমেটিক্‌স্‌’, ‘প্রব্লেমস্‌ অফ ফিলজফি’, ‘দ্য .বি.সি. অফ রিলেটিভিটি’, ‘দ্য অ্যানালিসিস অফ ম্যাটার’, ‘পলিটিক্যাল আইডিয়ালস্‌’, ‘হিস্ট্রি অফ ওয়েস্টার্ন ফিলজফিপ্রভৃতি। 

রাসেল ভেবেছেন পৃথিবীতে মানুষের স্থান সম্পর্কে এবং কল্যাণময় জীবন অর্জনে তার সম্ভাবনা সম্পর্কে ভেবেছেন। মানুষ প্রকৃতির একটি অংশ। প্রকৃতি বিরুদ্ধ কোনও কিছু নয়। পার্থিব জগৎ সম্পর্কে কিছু বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন যে, মানুষের শরীর অন্যান্য পদার্থের মতো ইলেকট্রন, প্রোটনের মতো কণিকার দ্বারা সৃষ্ট। আবার আমাদের চিন্তা-চেতনা মস্তিষ্কের ভেতরেই বহুপথ পরিভ্রমণ করে, যেমন আমরা করে থাকি সড়ক রেলপথ। চিন্তা করার জন্য যে শক্তি ব্যবহৃত হয় তার উৎস হল রসায়ন। রাসেল উদাহরণস্বরূপ বলেছেন, কীভাবে শরীর আয়োডিনের অভাবে চালাক মানুষ নির্বোধে পরিণত হয়। 

সুন্দর জীবন সম্বন্ধে রাসেল বলেছেন, জ্ঞান ব্যতীত প্রেম বা প্রেম বাদ দিয়ে জ্ঞান ––– কোনোটাই সুন্দর জীবন সৃষ্টি করতে পারে না। তাই সুন্দর জীবন হল প্রেমের দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং জ্ঞানের দ্বারা পরিচালিত। 

মানুষকে মানবিক করে তুলতে হলে সাহসের গণতন্দ্রীকরণ আবশ্যক। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, নারীর ভোটাধিকার থেকে দেখা যাচ্ছে যে তাদের সাহস অদম্য সাহসী মানুষদের মতো বেড়ে গেছে। তাদের এই সাহসের প্রয়োজন ছিল। সাহস, তা যে ধরণেরই হোক, অর্জন করতে হলে প্রয়োজন সুন্দর স্বাস্থ্য, পর্যাপ্ত পুষ্টি এবং মৌলিক প্রাণোচ্ছল আবেগ।

রাসেলের ভাবনায় ––– যদি বিজ্ঞান চায়, তবে আমাদের আগামী প্রজন্মদের সুন্দর জীবন কাটাতে সক্ষম করে তুলবে, তাদের জ্ঞান এবং আত্মসংযমের দীক্ষা দিয়ে এবং বিরোধ সৃষ্টিকারী চরিত্রের পরিবর্তে মিলন সৃষ্টিকারী চরিত্র প্রদান করে।

রাসেল প্রয়াত হোন ১৯৭০- আটানব্বই বছর বয়সে। তিনি প্রতিনিধিত্ব করে গেছেন একটি শতককে। তিনি যে পৃথিবীর স্বপ্ন দেখে গেছেন তা নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। আগামী দিনেও থাকবে। তিনি চেয়েছিলেন সব রকম কুসংস্কার থেকে মানুষের মুক্তি। তিনি সবরকম যুদ্ধ, হানাহানি, হিংসা, এবং বৈষম্যের বিরোধী ছিলেন। তাঁর মতো মনীষী মহান মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছেন এবং থাকবেন ইতিহাসের পাতায়।

তাঁর জন্ম-সার্ধশতবর্ষে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই।


সকলে ভালো থাকুন।রঙিন ক্যানভাস’-এর জন্মদিন উপলক্ষ্যে সকল লেখক এবং পাঠককে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা অভিনন্দন। 


রোশনি ইসলাম

সোনালি বেগম

1 টি মন্তব্য:

  1. সৌমিত্র চক্রবর্তী১২ ডিসেম্বর, ২০২৩ এ ৮:০৫ PM

    রঙিন ক্যানভাসের প্রত্যেক সংখ্যার সম্পাদকীয় অনন্য এবং সংগ্রহযোগ্য। প্রত্যেক সংখ্যায় পাঠক তাঁর ভাবনার রসদ পেয়ে যান। ধন্যবাদ সম্পাদক।

    উত্তরমুছুন