মলয়দা স্মরণে
বিগত ২৯ অক্টোবর ২০২৩ ছিল প্রয়াত মলয় রায়চৌধুরীর ৮৫তম জন্মদিন। কিন্তু ৮৪ বছর অতিক্রম করে ৮৫ বছরে পদার্পণের সুযোগ তাঁর হলো না। মাত্র তিনদিন আগে ২৬ অক্টোবর সকালে প্রয়াণ ঘটল তাঁর। বাংলা সাহিত্যে তিনি একদিকে নিরলসভাবে লিখেছেন কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, নাটক; অন্যদিকে অনুবাদ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন কবিদের কবিতাগ্রন্থ। তিনি ছিলেন আপাদমস্তক প্রতিষ্ঠানবিরোধী। সারাটা জীবন তিনি প্রাতিষ্ঠানিক সাহিত্যচর্চার বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে অপ্রাতিষ্ঠানিক সাহিত্যসৃষ্টি করে গেছেন। তাঁর লেখা যতগুলো বই প্রকাশিত হয়েছে, কোনো বাণিজ্যিক সাহিত্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত হয়নি। তাঁর কোনো লেখা কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সাহিত্য পত্রিকায় প্রকাশিতও হয়নি। তিনি লিটল ম্যাগাজিনে লিখতেন, অসংখ্য লিটল ম্যাগাজিনে সারাজীবন লিখেছেন। এবং এভাবেই তিনি পৌঁছে গেছেন সাহিত্যের আন্তর্জাতিক স্তরে। তিনি বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতে লিখেছেন, অন্যান্য ভাষায় তাঁর লেখা অনূদিত হয়েছে, তাঁর সাহিত্যকর্ম নিয়ে বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পি এইচ ডি-র জন্য গবেষণা হয়েছে। তাঁর লেখকসত্ত্বা এতটাই অভূতপূর্ব ও বৈচিত্র্যপূর্ণ, যা নিবিড় পাঠ ও গভীর বিশ্লেষণের অপেক্ষা রাখে। এর পাশাপাশি ১৯৬১ সালে হাংরিসাহিত্য আন্দোলনের যে সূচনা হয়েছিল, বাংলাসাহিত্যের প্রথাগত ও বহমান ভাবনা, আঙ্গিক, শৈলী ও গঠনের শুধু বিরুদ্ধতা নয় বরং খোল নলচে বদলে দেবার জন্য আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন মলয় রায়চৌধুরী। পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাসাহিত্যে উত্তর-আধুনিকতার ওপর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন।
বলা বাহুল্য, তাঁর প্রয়াণে বাংলাসাহিত্যে অপূরণীয় শূন্যতা্র সৃষ্টি হলো। তাঁর স্মৃতির প্রতি জানাই আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা।
তথ্যসংকলন : কাজল সেন
মলয় রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা অশেষ। 🙏
উত্তরমুছুন