এমিলি ডিকিনসন
শুনেছিলাম একটি মাছির ভন ভন শব্দ
মৃত্যুমুহূর্তে শুনেছিলাম একটি মাছির ভন ভন শব্দ;
দেহের চারপাশের নির্জন নিস্তব্ধতা
যেন কোন উন্মাদ ঝড়-ঝঞ্ঝার মাঝখানে থমকে থমকে যাওয়া
বাতাসের মহাশূন্যতা।
অশ্রু নিংড়ে নেওয়া শুষ্ক দুটি মরুচোখ,
তিলে তিলে জমাট বাঁধছে গম্ভীর শ্বাস-প্রশ্বাস
শেষবারের মতো, এক রাজাধিরাজ
উজাড় করে দিচ্ছে তার শক্তির সর্বস্ব।
জীবনের সমস্ত সঞ্চয় গচ্ছিত রইল দলিল-দস্তাবেজে, স্বাক্ষর রয়ে গেল
সম্পদের ভাগ-বাঁটোয়ারায়, ---- আর ঠিক পরক্ষণেই
কোত্থেকে যেন একটা মাছি এসে জুটল।
মায়াবী নীল, অনিশ্চিত, সেই ভন ভন শব্দপথ কেঁপে কেঁপে ওঠে,
এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা আর আমার দেহের মাঝে;
পরমুহূর্তে অকস্মাৎ বন্ধ হয়ে গেল জানালার সব কাঠপাল্লা,
চোখ মেলে দেখবার মতো আর কিছুই দেখতে পেলাম না।।
[এমিলি ডিকিনসন একজন স্মরণীয় মার্কিন কবি । আজকের দিনে বিশ্ব জুড়ে তাঁর surrealistic কবিতাগুলির সমাদর উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে । কিন্তু, জীবদ্দশায় তাঁর রচিত প্রায় ১৮০০ কবিতার মধ্যে বোধ করি মাত্র এক ডজনও প্রকাশিত হয়নি। অবিবাহিত চিরনিঃসঙ্গ এমিলি ডিকিনসন রচিত কবিতাগুলি সেকালের নিরিখে ছিল বেশ ভিন্নধর্মী : শিরোনামবিহীন, ক্ষুদ্র বাক্য বিন্যাস, তির্যক অর্থবহুল। যদিও এমিলির কবিতার মূল নির্যাস লুকিয়ে ছিল মানুষের অনিবার্য মৃত্যু এবং অমরত্বে উত্তরনের স্বপ্নআলোকে সজ্জিত।]


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন