শারদীয় গান
খুব তাড়াতাড়ি ঠাণ্ডা এক অন্ধকারে আমরা ডুব দেবো;
স্বল্পমেয়াদি গরমের এই ঝলমলে দিনগুলোকে বিদায়!
এরই মধ্যে বিষণ্ণ শেষকৃত্যের শেষে উঠোনের হাঁটাপথে
জ্বালানি কাঠের ভেঙে পড়ার মর্মর ধ্বনি।
শীতের গোটা মরশুমটা ফিরে আসবে আমার অস্তিত্বে: ক্রোধ,
ঘৃণা, শীতলতা, কাঁপুনি, জুলুম করে নেওয়া কঠিন মেহনত,
মেরুদেশের নরকে সূর্যের মতো,
হৃদয়টা আমার লাল বরফের একটা চাঁই।
কাঁপতে কাঁপতে জ্বালানি কাঠগুলোর পতনের কথা কানে আসে;
গড়ে তোলা মাচানখানা বধিরতর প্রতিধ্বনিহীন।
ক্লান্তিহীন মোটাসোটা গড্ডলিকার অনুগমনে
এ মন যেন সেই বুরুজের মতো টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ে।
একঘেয়ে এই ঝটকায় রিক্ত হয়ে গেছি যেন
কোথায় যেন হুড়োহুড়ি করে কফিনের শরীরে ওরা পেরেক মেরে দিচ্ছে।
কার জন্য? – সবে তো গ্রীষ্ম গেল; এখন শরতকাল!
কার জানি চলে যাওয়ার অদ্ভুত একটা আওয়াজ।
তোমার লম্বা চোখের শ্যামলা আলো আমার ভালো লাগে,
আলগা সৌন্দর্য, তবুও এ সমস্ত কিছু আজ আমার কাছে তেতো,
সাগর থেকে উঠে আসা আলোর মতো দামি আর কিছু নেই
কিস্যু না, না তোমার ভালবাসা, না সাজঘর, না ঘরের অগ্নিকুণ্ড।
তাও আমায় ভালোবেসো, নরম হৃদয়ে! মা হয়ে ওঠো,
এমনকি এক বেঈমানের, মায় নষ্ট কারো;
প্রেয়সী বা সহোদরা, ক্ষণিকের মাধুরী হয়ো
জমকালো শরতের না কি পাটে যাওয়া সূর্যের।
সামান্য কাজ! সমাধি পথ চেয়ে আছে; সেও তো গৃধ্নু!
ওঃ! ছেড়ে দাও, তোমার পায়ে মাথা ঠেকাই,
চেখে দেখো, শুভ্র তপ্ত গ্রীষ্মের জন্য অনুতাপ,
অন্তিম ঋতুতে গৈরিক মৃদু আলোর রেখা!
[শার্ল পিয়ের বদল্যের (জন্ম - ৯ই এপ্রিল, ১৮২১ পারিতে - ৩১শে অগাস্ট, ১৮৬৭ র্যু দু দোম) ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম কবি ও অনুবাদক। প্রাবন্ধিক ও শিল্প-সমালোচক হিসেবে তার কাজও উল্লেখের দাবি রাখে। ফরাসিতে এডগার অ্যালান পোর অন্যতম প্রথম অনুবাদক ছিলেন তিনি।]


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন