মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সৌমিত্র চক্রবর্তী-র ধারাবাহিক গদ্য : "চলনবিল"

চলনবিল

সূর্য কি পোড়ে! সূর্য পোড়ায়

তুমিও পোড়াও তবু কেন যে পুড়ি না!

এ পোড়া দেশ শুধু গল্প শোনায়

আগুনের নদী ঘেরে সামুদ্র সময়।


আসলে সেই কথাগুলো বলা হয়ে ওঠে না, যে গুলো স্বপ্নের মধ্যেও অলিগলি সাঁতরায়। দিন ওঠে, দিন নামে। মানুষের হাতে পায়ে শাখা প্রশাখা। অহংকার কিম্বা নমনীয়তার বৃত্ত ছাড়িয়ে মাটির ভেতর থেকে ছলকায় বিগত গরমের ঘাম, রক্ত, কান্নার শহীদ ইতিহাস। চোখের আড়ালে জমা হয় আশ্চর্য এক হ্রদের গভীর তলদেশে। একসময়ে হ্রদের বহির্গন্ডী উপচে গেলে বাষ্প হয় প্রাচীন পুরাতত্ব। 


আসলে কথাগুলো কথা থাকে না চিরকাল। না বলা কথাদের গায়ে জমে যায় অনড় সবুজ শ্যাওলা। রোদ্দুর আছড়ায়, বৃষ্টি অসময়ের নোনা গন্ধ ভাসিয়ে ভঙ্গুর করে দেয় কখনোই না জন্মানো ভ্রুণ শব্দদের। বিরল প্রজাতির ঈগল হয়ে যায় না বলা কথারা। পূর্বী সমুদ্রের ওপরে ঝুলে থাকা বাষ্পের ঝুন্ড আচমকা আকাশ বাইসন হয়ে আছড়ে পড়ে মুখ আর মুখোশের যান্ত্রিক সভ্যতার অ্যাসফল্টের রাস্তায়, মধ্যযুগীয় বাড়ির বদ্ধ উঠানে, মেকি রেস্তোরাঁর রোমান্টিক টেবল্ ল্যাম্পশেডে।


কোনো শুরু ছিল না, তাই শেষও হয় নি

বিকার ছিল না, তাই নির্বিকার হওয়ার প্রশ্নও তোলেনি কেউ;

নিশ্ছিদ্র অন্ধকার কিম্বা ফুটফুটে আলো

মেরুর বরফজ্বলন শেষে ছিল না কোথাও,

এক অলীক ব্রহ্মের রূপক ঘিরে রেখেছিল আব্রহ্মস্তম্ব;

ছিল শুধু সুখ আর শোকের কল্পিত মন্ড।


নির্বিকল্প সমাধির গভীরে হারিয়ে যায় কোনো একলা মাঠকোঠা ঘর। সুখ আর সুখের বৃত্তান্তের ঘনিষ্ঠ আলাপচারিতায় উঠে আসে অনিবার্য শৈশবের ফেলে আসা আঁচড়। আস্তে আস্তে সুখের স্মৃতিকণা জমতে জমতে জন্ম নেয় রাজৈশ্বর্যের আলো ঠিকরানো টাইটানিক। আলোর সঞ্চয় পূর্ণ হলে আচমকা মহা বিস্ফোরণ।


দু হাত একত্র করে মহাকাশ উচ্চারণ করে ওহম্! গ্যালাক্সি থেকে অন্য গ্যালাক্সিতে উড়ে যায় শান্তির সাদা পতাকা -


প্রকৃতি রজঃস্বলা হয়…

প্রকৃতি শান্ত হয়… 

 


ক্রমশ...

1 টি মন্তব্য: