যে বাড়িতে সূর্যের সাতরঙ কারো কারো সাক্ষাৎকার নেয়... যে রুফটপ থেকে উলুধ্বনি শোনা যায় স্বৈরাচারী শাসকের তর্জনী উপেক্ষা করে... যে চঞ্চলতা মান্যতা দেয় রিষ্টওয়াচ থেকে চাঁদের আলো ছড়ালে... চলো, পুরনো খাঁচা, লাউডগা সাপ, কাটোয়ার ডাটা, রিফিলহারা কলম এবং যাবতীয় অচল চিঠিপত্র, পুরনো স্মৃতি ও টুকরো হয়ে যাওয়া সম্পর্ক নিয়ে সেই বাড়ি যাই। সেখানে হেঁটে বেড়াচ্ছেন যুক্তিকে ছাড়িয়ে যাওয়া বিন্যাসের রঙ্গিন জাদুকর। যদি মনে হয়, এই কথাবস্তু ঐকিক হলো, তবে একজন পাঠক এই জাদুকরকে বলতে পারেন প্রকৃতি বিজ্ঞানী অথবা ভূগোল বিজ্ঞানী অথবা অর্থবিজ্ঞানের পরবর্তী রূপকার। জাদুকর শব্দের পরিবর্তে পাঠক সম্ভাব্য যেকোনো প্রাণীবাচক বা অপ্রাণীবাচক চিহ্ন বসাতে পারেন। সেই বাড়ি মানে কোনো দুর্গম দুরূহ মিনমিনে বা আধাসামরিক অঞ্চল নয়। সেই বাড়ির দেয়ালে দেয়ালে ময়ূরেরা বাস করে, কোকিলেরা বাক্যবিন্যাস বদলায় আর যুক্তির ফাটল দিয়ে অঙ্কশাস্ত্র বেরিয়ে গীতবিতান গেয়ে যায়। যেকোনো বস্তুসামগ্রীর, যেকোনো প্রকার দুঃখবেদনার এমনকি অনিরাময়যোগ্য পাতি ভাবনার মেটামরফোসিস ঘটে ওই বাড়িতে। ওই বাড়ির প্রতিটি বুননের ভেতর জাদুকরের জলতরঙ্গ বাজে। ওই সমারোহে গেলে সকলের দ্যাখা পাই— সালিম আলি থেকে আইনস্টাইন, ভিক্টোরিয়া ওকামপো থেকে লালন ফকির, আরনেস্ট হেমিংওয়ে থেকে কমলা দাশ এবং সানিধাপা থেকে লেবার ক্লাস, বুটিকের কাজটাজ। পরিযায়ী পাখিদেরও দ্যাখা পাবে। ওই হলো অন্য এক মহাদেশ অন্য এক মহাকাশ। ওই আকাশের গায়ে অজস্র প্রজাপতির নাম ও চিহ্ন আঁকা আছে যা আবিষ্কার করার জন্য ২টো নয় ৪টে নয় ১টা সহজগতি হৃদয় থাকলেই চলবে। আমাদের যতো জল আছে, নক্ষত্র আছে, অধরা পাখি আছে, কোষে কোষে জমে থাকা পাথর আছে, অথবা চাবুকের অসংখ্য দাগসহ প্রেম, সবকিছু নিয়ে দিনের প্রথম কিরণের কাছে যাই। দিনের সমস্ত কিরণেরা ওই বাড়ি থাকে। চলো, সেই বাড়ি গিয়ে চোখের ছানি কাটিয়ে আসি, চশমার কাচে যুক্ত করি তাহার জাদুবাস্তবতা...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন