শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২

প্রদীপ চক্রবর্তী-র কবিতা

পৃথিবীর দিকে শ্রী হরিণ 

এক.

 

নির্লিপ্ত আহ্বান প্রকাশ্যে - ছায়ামুখী ওঠানামার ভাষায়,

যতটা পুরোনো সুহানা 

ভগ্ন হাত পা সেই রোদ্দুর সেঁকে সমস্ত দেহে ছড়িয়ে দেয়। 

পাখিদের দু' এক ফোঁটা জল ঝরে পঞ্চমের 

 

সে আমাকে টেনে নিচ্ছে 

অন্ধ তামস ঊর্ণাজলে বেঁচে আছি। 

যাত্রাগানে সখী নৃত্য| অতএব উন্মাদ অভিজ্ঞানসমূহ 

রহস্যগল্পের মেয়ে সঁপে দেয় ধারকের

 মরা লাভায় 

 

ওরা কী টের পেয়েছিলো 

রৌপ্যমুদ্রা হারিয়েছে শতদল প্রতিভা,

পুরোনো আলেয়ার হাসিতে রক্তঘামপুষ্টি 

যেখানে মুগ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছি কিছুক্ষণ ...

বসন্তজড়িত সাঁজোয়াবন্ধনে 

 

কিছুদূরে চৈত্রের গাজনে আমি লেংটিপরা শিব সাজলাম 

নদীরা মুহূর্ত দিল 

নীল নৌকো,

 ফুল শাল্মলী



দুই.

 

নানারঙের কল্পনীয় ধ্বনিঠুঁটো নদীর জলে পা ডুবিয়ে ছড়িয়ে 

পড়ছেসূর্যাস্তের কাছে মৌন প্রতিবাদে কোথায় পালাবো। অবগাহনের 

আদলে গড়া এক মানুষ। বস্তুত ঘুণ লেগে তামাদি সময়ের 

উদীয়মান বহুতল বেয়ে দুটো কাক ঠোকরাচ্ছে নিজেদের মুখের খাবার 

 

সকাল বেলায় কাজে যাচ্ছে বিমূর্ত মানুষের 

ছায়া | কেমন সুন্দর ওই লোকঅপেরায় মাটির 

কমলিকা মাখা মানুষের মুকুট 

 

কী দিয়ে ভোলালে তুমিএকটু ভাঙা পাত্র একটুখানি 

হলুদমাখা খাবার নিয়ে বসতি উঠে আসছে 

হে দীর্ঘ - সুদীর্ঘ ময়ূর 

অধরা মেঘের তুলো উড়ে যাচ্ছে ভাঙার পরেই  



তিন.

 

বুকের কাছে মনোগ্রাম করা পুরোনো বকুল  কিশোরী মনের পটুয়া। 

মিহিন মেপে কথা। রতি বিরতির মাঝে লতা উঠছেলুপ্ত নদী 

চলে গেছে বায়ুর দক্ষিণ পাড়ে। খুব ধীরে মুখর প্রায়,

বাস্তুহারা প্রজাপতি ধরি 

 

ছবিতে  না আটকে তুমি ভেসে যাচ্ছ নীলকুঠি অথবা রিখিয়ায়। 

ঠিক বিশ বছর আগের এক বর্ষাদিনসুর  দেউল। 

সূরা   শবপীরের মাজারএখানে একটা সিঁড়ি ঝুলছে। 

জলে ভেজা চেয়ারএক কুচি মায়ের চিবোনো পানকখন গড়িয়ে

গন্ধ বিকেলযেন শরীর নয়বৃষ্টি পরে আছো। 

সাবলীল বৃষ্টি নিচ্ছ ফুসফুস ছাড়া 


চার.

 

কী ভীষণ গল্পের গরু গাছে ওঠেকী ভীষণ আলতু ফালতু 

কথা মাথায় রেখে ভূতেরা ভাবে, অফিসের লিফ্ট বন্ধ হয়ে গেলে 

দ্রুত সেরে নেওয়া যায় বিশ্বায়ন!

 

ভাবনা আসলে অ্যাসট্রেতে নিভে আসা সিগারের আলো। 

ধোঁয়াহরিণের হিরণ্যটুকু পেতে পেতে কুয়াশা হয়ে যায় 

 

কুয়াশা না কু আশা? দিলচোর গুনগুন গঞ্জ। 

পুরোনো আলোপোশ পুরোনো কানায় মহুলচুড়ির মহিষাদল 

 

বাসনা কাদের বাড়ি? লোহা বাঁধা বিদ্যুৎ

যেখানে পরকীয়া চিড় খাচ্ছে| একটা  অস্পষ্ট 

আলোর বৃত্ত থেকে পাতা ঝরে যাচ্ছে অঝোর। 

পুরোনো গোধূলির কদাচিৎ গন্ধমাখা পাললিক মহিষের মন্থর

বাথান পেরিয়ে ভেসে যায় পর্বতের গায়ে

পর্বত গলে যায় মহিষে আবার...



পাঁচ.

 

মুখ দাও নি, মুখর ধুলোশব্দ 

অনেকদিনের হাওয়া ঘুরে ঘুরে বিষয়ী হলো 

 

ছায়াটুকরো চিরেপাতার ভেতর 

গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে মিশে থাকে বেহালা কাঠের এস্রাজ ...

 

কার রক্তে কত দামি লিয়রের কণিকা 

অলিভ ফুলের ঢল 

আমিষের অবসাদে ঝুরো টোল 

ছবিটি মুখস্ত কার

 

সুতোকল হিতার্থে তোমার প্রকল্প কী

 

গোটা দেশের চিৎকারে নিভে যায় ধূপ আর পিতলের প্রদীপ ...

 

পাখির আঠা গড়িয়ে পড়ছে পৃথিবীর নাভিতে 

বিভিন্ন যুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে কাকপক্ষীর ভিড় 

 

তণুমুখে মেঘের কুকুর ডেকে ওঠে মেঘে 

কত রঙ ভোরে ধোওয়া

তার কাছে পৃথিবী আর কতটুকু গোলক 

1 টি মন্তব্য: