ক্লোজ-ডিসট্যান্স
‘বিশ্বাসটা কার উপর করা যায়? বাবার উপর মা-র উপর বোনের উপর ভাইয়ের উপর স্ত্রীর উপর স্বামীর উপর নাকি বন্ধুর উপর? সবসময় সজাগ থাকার মন্ত্র ধ্বনিত হচ্ছে বাতাসে’ কংসাবতী নদীর তীরে শবনম ও স্বাতী।
‘ক্রাইম টেলিভিশন সিরিজ দস্তক দেখিস?’ স্বাতীর ভ্রূকুটি।
‘পরম আত্মীয় বন্ধুদের প্রতি এত অবিশ্বাস স্থাপন! শো-টা প্রায়ই দেখি তো।’
‘মানসিক ব্যাল্যান্স, কতটুকু ক্লোজ হব, আর কতটুকু ডিসট্যান্স মেনটেন করব।’
‘বিশ্বাস হল দৈনন্দিন বেঁচে থাকার মূলধন, তাই তো।’
‘ফিলিং সিকিওর রিলিজেস দ্য ফিলগুড কেমিক্যাল অক্সিটোসিন’ নদীর ধারে ফুরফুরে হাওয়ায় শবনম হালকা হওয়ার চেষ্টা করে।
‘শোন মানুষকে অবিশ্বাস করে কোন মানুষ সুখী হয়েছে, বলতো!’ স্বাতীর হাতে মোবাইল কাউকে মেসেজ করছে।
‘সত্যি, ইট টেক্স ইয়ার্স টু বিল্ড আপ ট্রাস্ট।’
‘অন্ধভাবে তো কাউকে বিশ্বাস করা যায় না।’
‘ভাব তো আমাদের অরুণাভদাদুর অবস্থা!’ শবনম আর স্বাতীর চোখেমুখে অস্থিরতা। বিকেলের শেষ রোদ মেখে পাখিদের ঘরে ফেরা দেখতে থাকে ওরা। মোবাইলে অরুণাভদাদুর নম্বর। রিং হচ্ছে।
শবনম ‘হ্যাঁ, দাদু, এখন কেমন আছো?’
‘শোন, সেই যে লাল রঙের ওষুধের কথা বলেছিলাম, মনে আছে তোর?’
‘হ্যাঁ, তোমার পুত্র ও পুত্রবধূ নিয়মিত তোমাকে খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট, তাই তো?’
‘সেটা খেয়ে খেয়ে আমার এখন হাই সুগার। বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছি না।’
‘সে কী?’ শবনম প্রায় আর্তনাদ করে ওঠে।
‘ওই লাল ওষুধটা আসলে ওয়াইন, লাল মদ! কেউ মিসচিফ করেছে আমার সঙ্গে’ ফোনের লাইন কেটে গেল।
শবনম আর স্বাতী হতবাক।
‘ইউজ ইওর ওয়াইজ মাইন্ড, লজিক্যাল থিংকিং উইথ ইমোশনাল অ্যাওয়ারনেস।’
দুই সখি হাতে হাত রেখে ‘ওয়েল, সামটাইমস ইট ইজ ইজিয়ার সেড্ দ্যান ডান।’
রাতের আকাশে তখন রাখিপূর্ণিমার চাঁদ আর মেঘের লুকোচুরি খেলা শুরু হয়ে গেছে।
বিশ্বাস ও অবিশ্বাস একই মুদ্রার দুই পিঠ। অবিশ্বাস্য ভালো গল্প।
উত্তরমুছুন