পকেট গরম হলে
আপ্সে চলে আসে হরিয়ালি
টিক্কা রেশমি চেলো,
ট্যাঙ্ক ফুল করে লংড্রাইভের
কাচভাঙা হাসি আর ক্ল্যাসিক।
একসময় তো সন্ধে নামে
ফেলে আসা ধানক্ষেত, নিরালা
কেবিন, কমপ্লান দিন
আড়চোখের যত শিরশিরে গান
বাড়ি থেকে পালিয়ে সব রং
অগস্ত্য তৃষ্ণায় শুষে কালো।
একটা সময়ে ছন্দ থাকেনা
প্রতিযোগিতা থাকেনা
ভালোবাসা মন্দবাসা
ব্যাংকব্যালেন্স ক্রেডিট কার্ডের
দাম্ভিক কারিকুরী শেষ ফোঁটা
জলশরীর শুকালেই শব্দহীন।
সত্যির ইঁদুরদৌড় ফিতে ছুঁলেই
মাঝরাত নামলেই
সব সত্যি সেকেন্ডে মিথ্যে হয়,
বিশ্বাস অবিশ্বাস সাদা কালো
সমস্ত তুচ্ছ হয়ে রগ ধরে টান,
নিয়ন্ত্রণ শূন্য হলে
ফিরে আসে জন্মকথন,
অনিকেত সফরের পরে
মাইনাস পয়েন্টে টান দেয়
শব্দ বর্ণ গন্ধহীন
সূক্ষ স্থূল ভেদে সাত স্তর পেরোনো
অজানা এক ব্ল্যাকহোল।
ছেঁড়া মেঘ ছেঁড়া কাঁথা
বাক
থাক
অযত্নেই ধুলো পড়া শেলফে,
এলোমেলো
ক্লোনগুলো
কেমিক্যাল জারে ভাসে তো ভাসুক।
বিন্তিরিং মেঘ মাখা
চিট
ভিনটেজ
পাল্লা ভাঙা আদ্যি সেগুনদ্বারে
ঠক
কড়া
অথচ হাত পা নেই!
অথচ অহর্নিশ বেড়ে চলে রমনইচ্ছে।
শ্রাবণ
ভাদরে
সুঘ্রাণ ছিটিয়ে দ্বৈরথে জেতে তিনপা বুড়ো,
ফুটপাত
কিম্বা প্রপাত
খোলা ম্যানহোলে সবই তেনার ইচ্ছে,
থাক
যাক
ইয়াদদাস্তের সোনালি রিপু।
সব স্মৃতি ডিলিট হলেও দাগ থাকে হার্ডডিস্কে।
ড্রাঙ্কেন Drunken
আবে আয় মদ খাই
পড়ন্ত বিকেলে,
গোলমেলে
প্রেম পাওয়া হস্তমৈথুনে
মস্ত টেরর পুতুল
পিঙ্কজিনস পরে এদিকে
ওদিকে তালেগোলে
শপিং এর মলে।
দুসশালা
মোবাইল চিৎকার
শীৎকার অলিতে গলিতে।
ছেচল্লিশ
বেগার্স লেনে টেনেটুনে
জুটেছে রুটি আর
কলা,
এনিওয়ে এইসশালা
মদ খেলে বসে পড়, নচেৎ
পালা...!
হত্যাকাণ্ডের পরে
রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে আছে স্খলিত
রক্তের বিশৃঙ্খল কণা,
যাদের হাঁটার কথা ছিল ভিড়জমজম
ঘনিষ্ঠ রোজকার হিসেব নিকেশের ফুটপাতে,
হেঁটেই এখন স্বপ্নসন্ধানে
চলে গেছে তারা বহুদূরে,
উচ্ছলিত রক্তকণিকারা যত কথা দিয়েছিল
রাখেনি কিছুই অনিচ্ছার শুষ্ক প্রহরে।
-সাবধানে যাস বাবা!
-অফিসের দেরী আর নয়!
-অপেক্ষায় থাকব সারাদিন!
কত প্রতিশ্রুতি দিতে সক্ষম তুচ্ছ লোকগণনার
তরুণ শ্বেত ও লোহিত বিন্দুরা?
কপালে কোঁচকানো বলি গাঢ় হয়
হাত থেকে ফসকানো বেলজিয়াম
কাচের সূক্ষ্ম থেকেও সূক্ষ্ম টুকরা বসতে।
মাইক্রোফোন, চাকা আনাগোনা,
হাজারো টিআরপি উথলানো জবর বক্তৃতায়
কিছুতেই এক হয়ে ফের ছোটেনা
অবাধ্য ছড়ানো রক্তিম কণিকার দল।
একশো কুড়িতে এক কমে গেলেও
বৃদ্ধ গোল গর্ভগৃহে লক্কা পায়রার বকমবকম!
নিঃসঙ্গ নৈতিকতার শব্দগাছ
এখন শুদ্ধসত্ব যান্ত্রিক আরাত্রিক। বেশ বোঝা যায় ফেলে আসা প্রাচীন বছর অনিকেত দিনরাত্রি বেয়ে
নামে সর্বদাই।
আসছে পুজো কিম্বা তার পরের উজ্জ্বল তারাখচিত ভবিতব্য নাহয় আনন্দেই কাটুক, অন্তত অসুখী
বাথরুম বিন্যাস থেকে তো মুক্তি। আঃ সে আনন্দ উৎসব!
নিত্যকার হাওয়াভাষে গতানুগতিক, একঘেয়ে চিঠি, বাদ প্রতিবাদ, কলুষ অভিযোগ কিম্বা অভিমান খেলা
ছেড়ে ঈশ্বরীর শরণ। অন্তত সেখানে প্রতিনিয়ত টিকটিক প্রশ্ন পিছু ধাওয়া করবে না।
তাহলে সীমিত মাসের প্রেম প্রেম খেলা, স্থায়ী নাকি অস্থায়ী সিঁদুরদান, এসব কূট প্রশ্ন আর তার উত্তর না
পাওয়ার স্থায়ী বিরতি। আত্মসম্পর্কিতরাও সন্তুষ্ট প্রবল, বাছা আমার ফিরেছে নিজের আবাসে।
এখন স্বপ্নেও ডাকে সেই কাঠবাদাম গাছ, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের বিচিত্র কার্যক্রম, সুদর্শন ডাক্তার, ব্যস্ত শহুরে
ধাবার রুমালী রুটি আর রেশমী কাবাব। এখন দুহাত বাড়িয়ে আছে দুর্গোৎসব, সেই দোতলা হোস্টেল,
প্রিয় মুখগুলো।
সাময়িক সময় কাটানো খেলা উচ্ছন্নে যাক।
ছুটি কাজ মন্তাজ
নিশ্চিন্ত জানলা গলে ফিসফিস
দুর্ভাবনা আসে দমকে দমকে-
জানলার এপাশে ছায়া ওপাশে ছায়া।
কুলাঙ্গার রাতজাগাপাখি ডানা গুটিয়ে
চোখের ওপর শাটার নামিয়ে
টুপচুপ অতীতবিক্ষণে,
জাবর কাটে দুপেয়ে চতুষ্পদ।
ছায়াগুলো বাড়ে কমে
ছুঁয়ে ফেলে নিউরনের অন্ধঅধ্যায়,
ছায়ারাও জেনে গেছে
স্মৃতি বড় জলবাহী নেশা।
লাল চায়ে মকাইবাড়ি ছলাকলা
করে তিতিরের কুব কুব ডাকে,
ভাদুরে কুত্তার কালো
চোখমনি ইতিউতি খোঁজে
অসংবৃত প্রতিবেশিনীর ছায়া।
ছায়া খোঁজে উন্মত্ত গর্ভিণী মাটি
রাখঢাক সুরক্ষিত ভল্টের গোপন আবেশে,
সেই এক ঘর আছে চারচৌকো
চারমাথা, হৃদ আছে গতি নেই
স্থবির জং ধরা ঘড়ির কাঁটায়।
ঘর আছে, দরজা নেই
জানলা আছে, দেওয়াল নেই...
গরাদশাসানি উপেক্ষা করেই উড়ে আসে
তীক্ষ্ণ আলকুসি পাতার হুল,
জাবরের ফাঁকেফাঁকে শান্ত ছায়া
উঁকিঝুঁকি দেয় ছোট্ট পাহাড়ি স্রোতে।
দুহাতে আঁকড়ে ধরে জানলা নিয়ে
বসে আছি, সেই এক বাড়ি আছে
দেওয়াল নেই, দরজা নেই -
হৃদ নেই, মাথা নেই -
আছে শুধু ছায়া আর বেগম আখতার।
নিষাদপুত্র
ছেলেটা তাকিয়ে ছিলো
একদৃষ্টে সেই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রাজ্ঞ আচার এবং বিচারের বিচিত্র কার্যক্রম বোঝার চেষ্টায়।
রং আর বেরঙের ফুরফুরে প্রজাপতির পাখার সুগন্ধি ঝাপটা মাঝেমধ্যে এদিকেও কৃপায় উড়ছিল,
ভাসছিল, ছুঁয়ে দিচ্ছিল অন্ত্যজ কুচকুচে চামড়া।
একের পর এক ঢাউস চারচক্রযান থামতেই কয়েক কোঁচানো ধুতি আর রঙিন ব্র্যান্ডেড ছুটে আসছিল
আপ্লুত অভ্যর্থনায়। ছেলেটা দেখছিল অপলক দ্বিপ্রাহরিক সূর্য মায়ায়।
যত রাজকীয় ব্রিটিশের উচ্ছিষ্ট খোলশ এদিকে ওদিকে কারুকাজময় ট্রে এবং ভুরভুরে সুগন্ধের চাবুক কষিয়ে।
পার প্লেটে বিকিয়ে যাবে নিষাদের চোদ্দোপুরুষ।
নিষাদপুত্র দেখছিল রজনীগন্ধা আর বিদেশী পারফিউমের ধর্ষিত ছায়ায় আবছায়ায় সকলেই ছিল
সেখানে, সমস্ত রাজপুত্তুরের চলন্ত শব।
শুধু ছিলনা সেই পরলোকগত নারী, যার স্নেহহাত বিচার না করেই ছুঁয়েছিল তার কালো কালো একমাথা
চুল। যে তখন ভাত খাচ্ছিল অন্ত্যজপাড়ায় তার অফুরান সন্ততির পাশে।
গাজা স্ট্রীপ
রাষ্ট্রপুঞ্জের ছুঁচলো গর্বিত মাথায়
পতপতিয়ে উড়ছে কাটা শিশুমুন্ড,
শাইলকের ফর্ক ব্যাঙ্গহেসে মুখে তোলে
একটুকরো জরায়ুর কাবাব,
নেক্সট তারই বক্তৃতা শান্তির সপক্ষে।
তেলের কূপগুলোর চারপাশে
দাউদাউ অ্যাম্বার শিখায় বৃহদাকার ওভেন,
যেভাবেই হোক পরিস্কার রাখতেই হবে
আদ্যন্ত গলিত সোনার চলাচল পথ।
কোথাও বাদামি কুত্তির ঘেউ শান্তি ভাঙলেও
মিসাইল প্রহার অনিবার্য হয় ঈশ্বরের নামচায়,
কোথাও কোনো নাট্যমঞ্চে বিবেক স্পর্ধিত হলে
জিভ কেটে নিতে নিশপিশ করে সাদা আঙুল।
আগুন সর্বভূক, ছড়ানোর সাহস
নেভাতে আসবে ধর্মকল্যাণ,
পায়ের তিনফুট নীচে ফুটছে গাজা,
রক্ত থইথই কার্পেটে আরামদায়ক শান্তিসম্মেলন।
রাষ্ট্রপুঞ্জের লাল দাড়ির আগায়
উড়ছে পতপত কাটা শিশুমুন্ডের কালো চুল।
অরণ্য স্মৃতির গন্ধে
অপাচ্য রাতের কোনো কৌনিক বিন্দুতে
মাঝেমাঝে তন্দ্রা আসে লাফ দিয়ে,
আয় বৃষ্টি ঝেঁপে ... বলেই সফেদা আকাশে
জলীয় স্বপ্নযাত্রার নিস্পাপ কৌতুহল, কিম্বা
আচমকা টুকরো দিনের বিবর্ণ কোলাজ
তিরতিরে সরণি বেয়ে ঢুকে পড়ে মস্তিষ্কখাঁজে।
জঙ্গলপ্রান্তে কালো কালো আদিবাসী গ্রামে
ঘিয়েরং গোঁফ আর লাঠির ডগায় গুছিয়ে
সং সাজা অবশিষ্ট জনের মাথার ওপরে ছড়ানো
ছিটানো দিগন্তের দিকে বুভুক্ষু তাকিয়ে বিড়বিড় অবিরাম
-চলো মুসাফির বাঁধো গাঠরি রাস্তা বহোত দূর হ্যায়।
কখনো একক নিশ্চুপ সন্ধের ব্যাকুল অবকাশ
মালেকাজানের গুনগুন ঠুমরির তালে মাথা দোলায়,
জানলার পাশে অবহেলায় জন্মানো বেজন্মা নিম
খুশির সিরসিরে হাওয়ায় কোমর দোলায় অকারণে,
সেই অপার্থিব আলোছায়ায় ভুলে যাওয়া যায়
কয়েক ঘড়ির কাঁটার পাক বিরতিতে
ঘরের মধ্যে কথা জড়িয়ে যাওয়া প্যারালাইজড
বাবা, খুনখুনে মা আর উন্মাদিনী বোনের ক্লেদবেলা।
সেই মরকত টুকরোর ঝিকমিক লোহিতভূমিতে
দশ বাই দশের ইঁদুর খুপরিতে নেমে আসে দিল্লী
সম্রাট ময়ুরবাহন হয়ে অনিকেত আবেশে।
সোনাগাছির অপাপবিদ্ধ বহুগামিনীরও
মনের গোপন কুঠিয়াল উড়ে যায় ম্যাজিক কার্পেটে।
দেবল পাখির খোঁজে
জলেরও ছায়া আছে
অবস্তী রাজপথে বৃদ্ধা খোঁজে চুল।
ছায়ারও দিন আছে
পৃক্ত ঘামাবেশে এক চিলতে সুখ।
সুখেরও ক্লান্তি আছে
অ্যাসফল্টের রঙ চায় কুয়াশা চাবুক।
কুয়াশারও মৃত্যু আছে
বিষ হীরে বুকে ঢালে সবুজ হেমলক।
স্বাগত রঙিন ক্যানভাস। শুভেচ্ছা অফুরান।
উত্তরমুছুনভালো লাগলো
উত্তরমুছুনধন্যবাদ।
উত্তরমুছুন