শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০২২

অলোক বিশ্বাস-এর দীর্ঘ কবিতা

কবিতার নামকরণ দিয়ে লেখা দীর্ঘ কবিতা

নির্গত ধোঁয়াগুলি আমাদেরই নির্গমন...

স্বপ্নের মহাকাশ স্বপ্নের বালুচর ডুবে যাচ্ছে ধোঁয়ার ভেতর...

যারা অতিপদে কাঁদছে, তারাই কাঁদাচ্ছে পথের প্রিয় ইশারা...

হৃদয়ের ন্যাশপাতি ডুবে যায় কাদামাখা হাতে...

যারা বিরোধিতা করে ধোঁয়ার, তাদেরই অনেকে ধোঁয়াকে ভরছে আলোয়...

যাত্রা পথের রেল শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ে...

যেখানে থুবড়ে পড়ে ট্রেন সেখানে কালোকালো খেলা...

প্রেমের ভেতর ধোঁয়ার ঝড়...

ভ্রূণের ভেতর ধোঁয়ার অশ্রাব্য ভাষা...

ধোঁয়ার ঝড়কে সমুদ্র ভেবে ডুবে মরছে কেউ...

ভাবি এমন এক ভালোবাসা যা সম্পূর্ণ ধোঁয়াধুলোহীন...

তথাপি রান্না করে যাওয়া অপূর্ব এক নরম হাত, ধোঁয়া লাগেনি...

কোথাও দূষণমুক্ত সাইকেল অজস্র রোমান্টিক মুহূর্তের...

ক্রিয়াপদ স্পষ্ট কোরে বলো প্রকৃতির কাছে কী কী শপথ কোরেছো...

শপথের কোথাও হয়তো ছিলো এমন মনোভাব বাজারসংস্কৃতি যাতে গ্রাস না করে...


তথাপি দুলক্ষ শিরার ভিতর মিথ্যার প্রবাহ...

তথাপি তুমি লিখেছো সত্য যাপনের কবিতা...

তথাপি ধোঁয়া আর ধুলোর বন্ধুত্ব তোমাকে হাসিয়েছে... 

ঘনঘন সত্য যাপনের কবিতায় এতো মিথ্যা এলো কী কোরে...

বেবি, তুমি জন্মেছো বরফ প্রকৃতির সম্পর্কের ভেতর...

কাল্পনিক বরফ বাস্তবিক বরফের চেয়ে সুদূরপ্রসারী...

মান্যবর হে, হৃদয়ের উষ্ণতা ম্যাজিকাল বাঁচিয়ে রেখেছো...

বরফের রাঙ্গানিতে বরফের কোনো দোষ নেই, তাকে আমরাই ডেকেছি সকল পাঠশালায়...

তথাপি বরফ ঘিরে ফেললে পাঠশালাকে, আমরা অন্ধ হয়ে যাই...

যুদ্ধের বিভিন্ন প্রজাতি ফোকলোরের সাজঘরে ঢুকেছে...

বিশ্রাম নেওয়ার ক্যাম্পে অবিরাম অ্যাসিড বৃষ্টি...

কবিতার এলাকা কোনোদিনও দূষণমুক্ত হবে কিনা আমাদের জানা নেই...

কোনো সীমান্ত এলাকাতে আজ আর শান্তি বিরাজ করে না...

সমস্ত শান্তির বার্তায় ধোঁয়া ঢুকে গেছে...

শান্তির দীর্ঘ দীর্ঘ পঙক্তিতে অসংখ্য উইপোকা...

নতুন কোরে হয়তো জন্মাবে না ফিদেল কাস্ত্রো...

আগামী প্রজন্ম জানে চে গুয়েভারা মমি হয়ে গেছে...

তথাপি গর্জে ওঠে রাইফেল... 

সামান্য হৃদয়ে গর্জে ওঠা রাইফেলের কিছুটা কবিতার জন্য উৎসর্গ করা...

পরিবর্তিত ভাষায় কিছু বললে কেউ কেউ খুব রাগ করে...

যারা পরিবর্তিত ভাষার ওপর ধোঁয়া ছোঁড়ে, তাদের জন্য অসময়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত...

অন্ধকারের বহু বৃষ্টিপাত...

অন্ধকার স্যাচিওরেটেড  হলেও অন্ধকার নেভে না...

ঘনঘন-রূপ-বদল-কোরে অন্ধকার বাড়ি বাড়ি ঘোরে...

তথাপি অন্ধকার ধরা পড়ে যায় কারো কারো তীব্র হাতে...

আমরা আলোকে সবসময় ডাকি অন্ধকারকে বগল দাবা কোরে...

অন্ধকারকে আলোর ভেতর ছেড়ে দিই...


আলোর ভেতর ডুবতে থাকা অন্ধকারের দৃশ্যটা ভাবো চিৎকারের বালাই নেই পুনর্জন্মের আশায়...

অথবা যে চিৎকারটি ওঠে তার কদরই আলাদা...

যতোই হাস্যোজ্বল চলি ধোঁয়ার প্রসঙ্গ এসে যাবেই...

ধোঁয়া এক অনন্য উপকরণ অপস্রিয়মান...

আগমনি গান গেয়ে ওঠা নিবিড় সাইকেল ভেসে যায় গভীর গুহায় ধোঁয়ার নিবিড়তায়...

এবং একটি সাইকেল বিশ্বভ্রমণ করে ধোঁয়ার মায়াময় রঙ দেখে...

প্রতিবেশীকে বলি তার চোখেমুখে সাইকেল উৎপাদন হতে পারে...

তথাপি অজস্র ডেয়ার-ডেভিল-ধোঁয়া সব ছিন্নভিন্ন কোরে দেয় সবকিছু...

এমনকি অনন্ত আকাশ ছিন্নভিন্ন করার খেলায় মেতেছে...

পাখিরাও চেনে সাইকো মানুষের গভীরে চলে যাচ্ছে চাপচাপ সন্ত্রাসবাদী ধোঁয়া...

ধোঁয়াময় সম্পর্কে বসবাস কোরতে কোরতে ভালোবাসাগুলো হাঁপিয়ে উঠছে...

ভালোবাসার ভিতরে আর সকালের হালকা নরম রোদ নেই....

ভালোবাসার সঙ্গে কুলকুল ছায়ার আর কোনো সম্পর্ক নেই...

উড়ে উড়ে যাওয়া পাখিসবের রব নেই...


সরল হাসিকে জটিল বাক্যে পরিণত করা যায় ধোঁয়া মাখিয়ে...

এবং সরলতা ভাঙ্গিয়ে কিছু লোক মই বেয়ে উঠে পড়ছে যৌগিক অন্ধকারে...

এবং মানুষের মধ্যে অনেকেই জানে অন্ধকারের কাছে আত্মসমর্পণ করা কতো সহজ...

এবং যেকোনো ভাষায় অন্ধকারের প্রচুর প্রতিশব্দ আছে...

তথাপি মানুষেরা কেক খায় মদ খায় বারবিকিউ তৈরি করে...

তথাপি মানুষেরা প্রতিদিন ভোরে তিরিশ কিলোমিটার সাইকেল চালায়...

তথাপি মানুষেরা লাফিং ক্লাবে নাম নথিভুক্ত করে...

তথাপি শেষ হয় না যুদ্ধকণ্ঠ অন্ধকার এবং ধোঁয়ার সহজপ্রাপ্যতা....

ধর্মের ডেরাগুলো থেকে কেবল বিষাক্ত ধোঁয়া বেরিয়ে আসছে...

যাকে গুরু মানা হয় তিনিও গভীরভাবে ধর্ষণপ্রবণ...

একের পর এক শতাব্দী পার হলেও ধর্ষণগুলো হয়ে উঠছে নিবিড়তম...

ধর্ষণ আর ধোঁয়া উভয়েরই জন্ম অন্ধকারের ভেতর...

আমাদের খেলনাগুলো, প্রেম গুনগুন সুন্দর চিরুনি জামায় মশলা ভর্তি পকেট...

অন্ধকারের ভেতর আরো বহু শিল্পসম্মত বিষয়ের নামধাম ডুবছে...

তাদের আলো ডুবছে, ডুবছে তাদের ভবিষ্যৎ...


কিছুদূর খেলার পর অতিবিপ্লবীও অন্ধকারের কাছে আত্মসমর্পণ করে...

পেট 'রে অন্ধকার খেয়ে কতো মানুষ বিরাজ কোরছে শহরে...

শহরের সঙ্গে চাঁদের সম্পর্ক নষ্ট কোরছে পলিটিকাল পার্টিগুলো...

মর্নিং ওয়াকের সময় শিশির বিন্দুর আলো আর চোখে পড়ে না...

শিশির বিন্দুগুলোকে ধোঁয়ায় মুড়িয়ে জটিল খেলায় জড়িয়ে যাচ্ছে জাদুবাস্তবতা...

ঘরে বাইরে নতুন রাক্ষসের গন্ধ...

নতুন রাক্ষসকে ভালো কোরে চেনা যাচ্ছে না...

বুঝতে পারছি না নতুন রাক্ষসগুলো আমাদের ভালো কোরবে নাকি খারাপ কোরবে...

কেউ বলছে এই সেই রাক্ষস যে অজস্র ছেলেকে লাশ কোরে দিয়েছিলো...

কেউ বলছে এই রাক্ষস সেই রাক্ষস নয়...

রাক্ষসের মানে রাক্ষস নয়, রাক্ষস মানে খোক্কস নয়...

তথাপি এ্যাতো মানুষ নিরুদ্দেশ হয়ে যাচ্ছে কেন, রাক্ষস জানে না...

তথাপি এ্যাতো ধর্ষণ কেন, রাক্ষস জানে না...

অনেকে তো দেখছে ধোঁয়ার ভেতর মিলিয়ে যাচ্ছে রাক্ষস...

অনেকে তো দেখছে ধোঁয়ার ভেতর থেকে গল্প শোনাচ্ছে রাক্ষস...

আমরা বুঝতে পারছি না কিভাবে রাক্ষস, ঈশ্বর হতে পারে...

কিভাবে ঈশ্বর, রাক্ষসের রূপ ধরতে পারে বুঝতে পারছি না...

ঈশ্বরের নামে ঘটানো সন্ত্রাসগুলোর কোনোটাতেই ঈশ্বরের সমর্থন নেই...

অথবা ঈশ্বর এখানে নেই, আছে অন্য কোনোখানে...


এখানে যদি ঈশ্বর থাকেন, তবে এ্যাতো ধোঁয়া কেন আছে...

এখানে যদি এ্যাতো ধোঁয়া থাকে, তবে ঈশ্বরকে বসাবো কোথায়...

আমরা এক্সট্রা টকটাইম চাইছি, অতোশতো বুঝি না...

এও জানি ধোঁয়ার মধ্যেই কোথাও খেলা কোরছে এক মানুষ, হয়তো সে গোডো...

আনলিমিটেড টকটাইমে গোডোর সঙ্গে প্রচুর কথা হয় আমাদের...

যথাবিধি কথা হয় অনন্ত সকালে বিকালে...

ছিদ্রহীন অন্ধকারে হাইটেক ডিকশনে ধোঁয়াহীন লোককথার আয়তনটি বাড়তে থাকে...

অন্ধকার জালের ভেতর জড়ানো ধর্মীয় সন্ত্রাস বিষয়ে কথা হয়...

কথা হয় আর কোন কোন কাজ থেকে বাদ দেওয়া যায় অন্ধকার...

কোন কোন ধোঁয়া কতদূর উড়ে গিয়ে শত্রুকেও বিনাশ করে...

বিনাশিত হওয়ার আগে শত্রুরা আমাদেরও খুব কাঁদিয়ে চলে যায়... 




 

৩টি মন্তব্য:

  1. প্রচুর প্রশ্ন কবির কে উত্তর দেবে আসলে যাদের উত্তর দেবার কথা তারাও প্রশ্ন করতে চাইছে। আর নিরুত্তর থাকার ব্যাধি ক্রমশ অবশ করছে শরীর ও মন। প্রশ্ন করতে কেউ চায় না। তাতে শুধুমাত্র মাড়ভাত জুটতে পারে কপালে।

    উত্তরমুছুন
  2. অন্য রকম লেখা। অন্য মেজাজ।

    উত্তরমুছুন
  3. ভিড়ে-মেশা লেখা নয়

    উত্তরমুছুন