(২১)
কোথাও নক্ষত্র,
কোথাও কোথাও আবার জোনাকি।
আমার কাছে যা রাত ছিল,
তোমার কাছে তা কেবলই ভোর!
(২২)
স্মৃতি
আচমকা
সমস্ত ব্যথা বেদনা হয়ে
জীবনের উপর আছড়ে পড়ে।
মারাত্মক শীত ঋতুতেও
স্মৃতি
আচমকা
সমস্ত ব্যথা বেদনা হয়ে
জীবনের উপর আছড়ে পড়ে।
আচমকা
কারো গায়ে বরফের মতো ঠান্ডা জল
নিক্ষেপ করলে যেমন লাগে,
ঠিক তেমনই।
(২৩)
চতুর্দিকে এমন পাহারা বসিয়ে দিয়েছে
যেন পরিবর্তনকে আটকে দেবে!
শুভ্রতার প্রতিটা মুহূর্ত দ্বিধায় উঁকি মারছে।
কেউ জানে না কোন রূপ সে ধারণ করবে !
বহুরূপীর কোন সাজে সে সেজে উঠবে
কিংবা কোন রূপে বদলে যাবে, কেউ জানে না।
পরিবর্তন তার নিজের পথেই আসবে।
(২৪)
আল্লার কসম, দুঃখকে তুমি ভুলিয়ে দিও না।
ওকে চুপ করে থাকতে দাও।
এই দুঃখ ছাড়া আমার নিজস্ব বলে কিছু নেই!
ক্ষত বিক্ষত পা নিয়ে
হয়তো কেউ এই বনে এসেছে,
আর এসেছে বলেই ঝড় বাদলে
কেউ জ্বেলে দিয়েছে প্রদীপ।
(২৫)
দুঃখের গভীর চোখ থেকে মুছে ফেল অভিযোগ।
ঝরে পড়া বৃষ্টিকে বল মেঘের সঙ্গে টক্কর না দিতে।
মনের এক একটা জেদে বিব্রত আমিও।
আল্লার প্রশ্রয়েই এমন এক পাগলকে যুঝতে পারছি।
(২৬)
আঁচলে কাজল কালো
মুহূর্তের এক ঝলক
একি তোমার চোখের পলক, নাকি আমার!
(২৭)
ব্যথার ছায়া, উদাসীন ধোঁয়া আর দুঃখের মেঘ
বারেবারেই হৃদয়কে মনে করায়।
জীবন যদি এমনই হয়, তাহলে কাকে বলে মৃত্যু!
ভালোবাসা স্বপ্ন ছিল একদিন
সেই স্বপ্নের আদল কেমন ছিল জিজ্ঞাসা করো না আমায়।
প্রেমের অপরাধে কী সাজা হয়েছে আমার,
সে-প্রশ্ন আমাকে না করাই ভালো।
(২৮)
হে আমার প্রিয়তম,
আমার মনে তোমার নাম
মন্দিরের অসংখ্য ঘন্টার সম্মিলিত সুরের মতোই বাজে।
আমার অস্তিত্বে একাকার হয়ে আছে সেই নাম
আর আমার মুহূর্তরা তোমার নামের বাঁধনে বাঁধা।
(২৯)
হে আমার মনের মানুষ,
উদাসী মনের ভাগীদার,
অপূর্ণ জীবনের বন্ধু আমার!
তোমার সমস্ত ক্ষত, আসলে আমারই বেদনা।
তোমার সব ব্যথার উচ্চারণ,
আমার অস্ফুট যন্ত্রণার গাঁথা।
(৩০)
আজকের শুভেচ্ছার এই রাত,
বহু প্রতীক্ষিত রাতের পরে এসেছে।
সুখের এমন রাত,
দুঃখের এমন নিশি,
কদাচিৎ আসে!
চোখের জলে ভেজা কোনো দিনের ভাগ্যে জোটে
এমন সুখের রাত,
এমন দুর্ভাগ্যের রজনী!
এ হল মৃত্যুর অমানিশা। জন্মেরও।
[মীনা কুমারী ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের এক কিংবদন্তি অভিনেত্রী। তাঁর আসল নাম মাহজবীন বানো । সিনেমা জগতে ট্রাজেডি কুইন হিসেবে তিনি বিশেষ পরিচিত ছিলেন। দাম্পত্যের ব্যর্থতার কারণে তাঁর মনে ছিল গভীর ক্ষত ও যন্ত্রণা, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর কলমে। তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক সত্যিকারের কবি। তাঁর জন্ম ১৯৩৩ সালে মুম্বাইয়ের দাদারে। মৃত্যু ১৯৭২ সালে, । রচনা করেছেন অজস্র উর্দু শায়েরী। এখানে রইলো মাত্র দশটির অনুবাদ।]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন