মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

সুবীর সরকার-এর ধারাবাহিক গদ্য : "ভবতারণের জোত"

 


ভবতারণের জোত

কূটকাচাল!আমরা তো আসলে কূটকাচাল জড়িয়েই বাঁচি।আর কূটকাচাল ঢুকে পড়তে থাকে হেমন্তের মস্ত

হা-মুখের গহ্বরে।

জীবনের প্রতিদিনে কিভাবে বুঝি চলে আসে কূটকাচাল!কূটকাচাল আসে আর কিরকম জটিল হয়ে উঠি আমরা।

 

কূটকাচাল আসলে পাশাপাশী চলতে থাকা সমান্তরাল রেল্লাইন।আর কূটকাচাল ছাড়া আবার জীবন হয় নাকি!

যাপন হয় নাকি!

কিংবা জীবনযাপন হয় নাকি!



১০

এসব ভাবতে ভাবতে অনিমেষ তার লেখার টেবিলে বসে পড়ে।নানান ওঠা পড়ার ভেতর দিয়ে অনিমেষকে

পেরিয়ে আসতে

হয়েছে লেখালেখির জীবন।

এক পেগ হুইস্কি খেতে খেতে অনিমেষ লিখতে শুরু করে_

"আমার ব্যক্তিজীবন জুড়ে জুড়ে দিবস সন্ধ্যের আলোর বা রঙের মত বারবার ধাক্কা মেরেছে কূটকাচাল।

আমি হয়তো কোথাও

 গেছি।আডদা দিচ্ছি।আবার আড্ডা দিয়ে ফিরে এসেছি।পরে জানলাম,আমি ফিরে আসবার পরেই কি

দ্রুততায় আড্ডার

মানুষগুলি তাদের মুখোশ খুলে ফেল্লেন।আর শুরু হয়ে গেল আমাকেনিয়ে নানান মজাদার কূটকাচাল।আসলে

আমি তো

সোজাসাপটা মানুষ।তাই বিতর্ক তাড়া করেছে সমস্ত জীবন।কূটকাচাল আসে এভাবেই বিকেলের পাখিদের

ডানায় ডানায়।

 

আমি একটা ভরা নদীর বাঁকে দাঁড়িয়ে দেখি কিভাবে অনন্তের স্রোতে ভেসে যায় আমাদের কূটকাচালগুলি।

 

কূটকাচালের সমস্ত পরিধী জুড়ে হলুদ সরিসার খেতে রচিত হতে থাকা ল্যান্ডস্কেপগুলি গানের পর গানের

মতন করে ধেয়ে

আসে,ধেয়েই আসতে থাকে আর আমি সদ্যরচিত কবিতার পাতায় গুঁজে দিতে থাকি ঘুম আর ঘাম।

 

এইসব এলোমেলো আর অগোছালো যাতায়াতের মাঝে কূটকাচাল এসে পড়ে চিরদিনের ম্যাজিকের মত হালকা

চালে এবং

কূটকাচাল ঢুকে পড়তে থাকে হেমন্তের মস্ত হা-মুখের গহ্বরে।

 

আমি পরমায়ু প্রার্থনা করি।আমি কূটকাচাল প্রার্থনা করি"

লেখাটা শেষ করে অনিমেষ একটা অসামান্য হাসি ঝুলিয়ে রাখতে থাকে তার মুখে।

এইভাবে সে কি এক চূড়ান্তরকম দার্শনিক বিষ্ময়ের দিকে চলেই যেতে থাকে বা চলেই যেতে

চায়!




ক্রমশ...


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন