৫।
অনিমেষ ভাবে।তাকে ভাবতেই হয়।কত কত স্মৃতির তাড়সে তাকে তাড়িত হতে হয়।এত বছরের কবিতা
লিখবার জীবনে কত
অভিজ্ঞতা অনিমেষের কবিতা জীবনকে ক্রমে বদলে বদলে দিয়েছে।ভাঙা সম্পর্ক থেকে সে কেবল তুলে এনেছে
সাঁকো কিংবা
শালবনের কবিতাগুচ্ছ।নুতন কলমের প্রতি চিরদিনের আগ্রহ তার।নিজে পাশে দাঁড়িয়ে তরুণ কলমকে স্বাগত
জানিয়েছে চিরকাল সে।সে তো চিঠির যুগের স্মৃতিজড়ানো মানুষ।শুরুর দিনগুলিতে তেমন কোন অগ্রজর
স্নেহের হাত তার পিঠে পায় নি।চারপাশের দেশ দুনিয়া আর গঞ্জ হাট তাকে শিখিয়েছে। পুষ্ট
করেছে।দাউদাউ এক আগুন ছুঁতে ছুঁতে আজ অনিমেষ সামান্য হলেও একটা নিজের দাঁড়াবার জায়গায় এসে
পৌঁছেছে।তাই সে
বোঝে নুতন কলমের অসহায় এক আশ্রয়হীন পরিসর টুকুর কথা।বড্ড আবেগ আর নিঃশর্ত এক আকুতি নিয়ে
তরুণ কবির
ভুবনকে দু হাতের দশ আঙুল দিয়ে প্রবল স্পর্শ করতেই চে য়ে ছে অনিমেষ।কিন্তু এই আবেগ তাকে কষ্ট
দিয়েছে।হাহাকার দিয়েছে। ভয়াবহ এক বিপন্নতার দিকে ঠেলে দিয়েছে।তার মনে পড়ে,বছর দশ আগে সুনেত্রা
এসেছিল। মেয়েটির কবিতায় এক প্রখরতা ছিল।আগামীর সম্ভাবনা অনিমেষ দেখতে পেয়েছিল
সুনেত্রা র কবিতায়।সুনেত্রা অনিমেষের পরামর্শ প্রত্যাশা করেছিল।কবিতা জীবনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা দিয়ে
অনিমেষ তার পাশে
দাঁড়িয়েছিল,যেমন সে দাঁড়ায়।একটা সময় অনিমেষ বুঝে গেল,সুনেত্রা পড়াশোনা দিয়ে মেধা মননকে আরো
ধারালো করবার
কঠিন শ্রম করতে চায় না।খুব হালকা কিছু পড়াশোনা দিয়ে সামান্য পথও এগোন যায় না।এর পর সুনেত্রা
সরে গিয়েছিল।তার
পৃথিবী জুড়ে তখন অন্যরকম মানুষেরা।নাম যশ খ্যাতি আলোর দিকে কিভাবে বুঝি হারিয়েই গেলো সুনেত্রা।
ভারি ধাক্কা খেয়েছিল অনিমেষ। দশ বছর বাদেও যা ভোলা যায় না।
৬।
একবার ভরা নদীর উজানে যেতে যেতে উন্মনা হয়ে পড়া অনিমেষ একনাগাড়ে দেখছিল আকাশে ঝুলে থাকা
মেঘেদের।
বুঝি বদলেয়ারের আশ্চর্য মেঘ দল।
স্তরে স্তরে সাজানো।তার মনে হচ্ছিল বুঝি দাত না মেজে দাঁড়িয়ে থাকা রাক্ষসের ঘুম ভাঙ্গবে এক্ষুনি।তাই সে
একটা প্রতিরক্ষা
ও সুড়ঙ্গের ভেতর ঢুকে পড়তে চাইছিল।বারবার তো একটা সমাধান সূত্র হীন বিপন্নতার দিকে কবি অনিমেষ
দত্তকে এভাবে
ঝুঁকে পড়তে হয়েছে!খানিকটা ছায়ার ভিতরে মাদুর বিছিয়ে রাখবার মতন।
ক্রমশ...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন