এই ভীড়ের মাঝে একজন মা দাঁড়িয়ে আছে। খুব অল্প বয়েস, নোংরা ফ্রক, আলুথালু চুল, ভাবলেশহীন মুখ। তার কোলে একটা বাচ্চা। সে ভিক্ষে চাইছে কি চাইছে না – ঠিক বোঝা গেল না। তার কোলের বাচ্চাটাকে কি এই মা-ই জন্ম দিয়েছে?
তীর্থক্ষেত্রের পাশে পূণ্যতোয়া নদী। জমজমাট মেলা আর মানুষের ভীড়। কেউ শ্রদ্ধালু, কেউ উল্লসিত, কেউ ভিখারী, কেউ বা আমীর কিংবা ফেরিয়ালা!
পূণ্যতোয়া নদীতে প্রোথিত ও দন্ডায়মান বিশাল দেবী প্রতিমা। আমি জলে ডুব দিয়ে পূণ্য সঞ্চয় করতে করতে বলে উঠলাম – ‘মা, তুমিই কি আমার জন্ম দিয়েছো?’ কোনো উত্তর এলো না। তীর্থস্থানের জল আর বালিতে আমার শরীর আর মগজ একাকার।
স্নান সেরে উঠে এলাম। মেয়েটি তখনো সেই জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছে - কোলে তার বাচ্চা, সেই ভাবলেশহীন মুখ!
পূণ্য সঞ্চয়ের জন্যে একটা বিস্কুটের প্যাকেট। বাচ্চা কোলে মেয়েটার হাতে তুলে দিলাম। সে তা হাতে তুলে নিলো। জুল জুল ছোট ছোট দুটো চোখে আমার দিকে তাকালো। প্যাকেট খুলে সে বিস্কুট খেতে লাগলো। তখনো কোলে আঁকড়ে ধরে থাকা তার সন্তান।
এই মেয়েটিকে কেউ কি কখনো রেপ করেছিল? এই আশ্রয়হীন অনাথ মেয়েটিই কি আমার মা?
চোখ বন্ধ করলাম। দেখলাম, আমার দেশ আমাকে কোলে নিয়ে ভাবলেশহীন দাঁড়িয়ে আছে এই তীর্থক্ষেত্রে!
শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুনশুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুন