আয়নায় মুখ
প্রায় সময়ই আমি এক পাটি মোজা হারিয়ে ফেলি। তাতে অসুবিধা নেই, এক পায়েই মোজা পরে জুতো পায়ে দেই। লেখার সময় বাতিক আছে আমার, কান্না কাটি করি। কান্নার সময় আমাকে বিশ্রী দেখায়। উঠে গিয়ে আয়নায় দেখি, সর্বনাশ কী বিশ্রী লাগছে। তাড়াতাড়ি চোখ মুছতে শুরু করি।
পত্রিকা পড়া শুরু করলে আমি ছোটোখাটো জিনিষ দিয়ে শুরু করি। কোন নায়কের সর্দি হয়েছে, কোন নায়িকা মুটিয়ে গেছে, কোন খেলোয়ার দাঁত মাজে না..এসব খবর আমার প্রিয়।
একসময় ঘুষ খেতে ইচ্ছা করত..ইচ্ছা ছিল লুঙ্গি পরে অফিসে যাব, লোকজন আমাকে রাশি রাশি টাকা দেবে, আমি লুঙ্গির কাছায় টাকা বোঝাই করে বাড়ি ফিরব। টাকাগুলো বালিশের নিচে রাখবো, ঘুমানোর সময় টাকা কচকচ করবে।
না, সাধ মিটিল না।
ডাকটিকেট আমি থুথু দিয়ে লাগাই। বাথরুমে বসে বসে প্রচুর গালিগালাজ করি। যাকে পছন্দ করি না, তাকে কল্পনায় নাকের ফুটোতে টুথপেস্ট ঢুকিয়ে দেই। আর যাকে পছন্দ করি তাকে কল্পনায় কোলে বসিয়ে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের নখ কেটে দেই, দুই কালারের মোজা পরিয়ে দেই, ফিসফিস করে কানে কানে বলি;
: বাবুই এসো তোমার সর্দি ঝেড়ে দেই।
এক একদিন মনে হয় ঈশ্বরের সাথে ফোনে কথা বলছি। আমাকে বলেন;
: কিরে ব্যাটা কেমন আছিস?
: এই আপনার দয়া
: তুই নাকি আমাকে মানিস না? এমন থাপ্পড় দেবো না তোকে ..
: এই তো ঈশ্বর রেগে গেলেন আপনি ..আপনাকে রাগলে কুৎসিত লাগে। ছি:
ঈশ্বর হো হো করে হেসে দেন। আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে দেখি হাসিটা অবিকল আমার মতো। আমি ঈশ্বরকে মৃদু অনুযোগের সাথে বলি;
: আপনি যাই বলুন না কেন, ৩টা জিনিষের উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেই।
ঈশ্বর হুংকার দিয়ে উঠলেন,অগ্নিশর্মা।
: বল ব্যাটা কোন ৩টা জিনিষ?
: বলব? অভয় দিচ্ছেন?
: বল..নো ভয়।
: শক্তিশালী মানুষ বা রাষ্ট্র, ফেসবুক আর দেশে দেশে সংখ্যালঘু মানুষ পেটানো।
মুহূর্ত চুপচাপ। আমি ভয়ে ভয়ে ডাকলাম;
: ঈশ্বর ঈশ্বর ..ও প্রভু
কেউ জবাব দেয় না। নিজের কথারই প্রতিধ্বনি ফিরে ফিরে এলো। নাহ, কোথাও কেউ নেই। থাকার কথাও নয়। দুর্বল মানুষ সতত একাই থাকে। কেউ তাকে শোনে না।
ওমা সামনে দেখি হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট জনপ্রিয় চরিত্র বাকের ভাই। আঙ্গুলে চাবির রিঙ ঘুরাচ্ছেন। শিস দিচ্ছেন ..
হাওয়া মে উড়তা যায়ে..
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন