যাত্রা, ক্রমশ
বাইসাইকেলের টুংটাং আমার মর্মে
আজকাল যতোক্ষণ ঘুমিয়ে থাকি
ততোক্ষণ জেগে থাকি মহার্ঘ শৈশবের প্রহরায়
একবার নদীদের লতানো হাত, একবার হালটের স্নেহার্দ্র গ্রীবা
আর একবার প্রগাঢ় সবুজের কেশাগ্র ধরে
নিঃশব্দ ঘুমের অভিনয় করি--
এভাবে অকস্মাৎ সত্যিকারের ঘুম নেমে এলে
বাইসাইকেলের টুংটাং দিয়ে মাতিয়ে তুলি নিমগ্ন বাড়ি
কখনো রেললাইনের ওপর, প্রায়শ বড় রাস্তার মাঝ বরাবর
আবার হঠাৎ শহরমুখী পাকা রাস্তায়
বাইসাইকেলের মাথা ঢুকিয়ে দিয়ে যাপন করি আরণ্যক কৈশোর
এইভাবে প্রতিদিন আমার ধবল বাড়িটা কেঁপে কেঁপে উঠে
বিপুল জলে নিক্ষিপ্ত পাথরের মতো গভীরতর ঘুমে লীন হয়ে যায়...
তখন জলের গহ্বরে ফলিমাছের ধবধবে লেজে
প্রথম স্বাক্ষর শিখি নিজের নাম, এবং ক্রমশ রক্তাক্ত হই
বোয়ালের ঘাঁই, শিংমাছের শানানো কাঁটায়...
আমার জলজ জীবন গড়াতে গড়াতে নিঃসীম সমুদ্র ছুঁয়ে
ভেসে ওঠে এক মহানগরের প্রত্ন পোড়া ইটে
বাইসাইকেলের টুংটাং আমার মর্মে
তা আজ প্রবল সিন্ধু ও নিরবচ্ছিন্ন ইট-পাথরের পাঁজর বিদীর্ণ করে
আর কোনো ঝঙ্কার তোলে না
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন