সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২০
প্রভাত চৌধুরী
রঙিন ক্যানভাস
' আমি লিখলেই ক্যানভাসটি রঙিন হয়ে উঠবে '
এই বাক্যটিকে আপ্তবাক্য বলা সমীচীন হবে কিনা
জানি না ,না-জানার জন্য আমার অজ্ঞতার
দুই দিকে দুটি মেষপালকের টুপি
লাগিয়ে দিতে সক্ষম হলেই দেখতে পাবেন
গঙ্গাপদ বসু নামক এক মহার্ঘ্য অভিনেতাকে
স্থান, কাল এবং পাত্র সম্পর্কে সম্যক উপলব্ধি
না-থাকলে আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে যাওয়ার অর্থ
হল ময়ূরের পালক থেকে নীল রংটিকে
আলাদা করে ব্যবহার করার অভিপ্রায়
কিংবা সূর্যাস্তের থেকে কমলা রং-কে
ক্যানভাসে লিখব , এইজন্যই এত রং
এসে পড়ল, দেখে নিন
ইতিমধ্যেই রঙিন হয়ে উঠেছে ক্যানভাসটি
02 . 12 . 2020 ♢ 14 : 02
অলোক বিশ্বাস
রসেরসে বসবাস
একটা রাস্তা পেরিয়ে যখন অন্য রাস্তায় ঢুকছি
সেখানে দেখছি সাজানো আছে রস। কেউ রসের ভিতর
বসে দর্শন লিখছে। ধর্ম নয়, সম্প্রদায় নয়, সন্ত্রাস নয়,
কেবল রস দিয়ে লেখা আছে এক একটি দেশের কথা।
সেইসব দেশের কেউ ভুলে যায়নি রসে আঁকা
ইলিয়াড ও ওডিসি। রাস্তাওয়ালা মানুষেরা
হৈচৈ ডুবে থাকে সেখানে। ঈশ্বরের পাল্টা ঈশ্বরে যখন
ফাটল দেখা দিচ্ছে ছোট বড়ো সমস্ত সড়কে,
ফোঁটাফোঁটা রস ঈশ্বরবাদীকে সমুদ্র দেখালো।
ঝড়বৃষ্টিতে এবং প্রভুত পরিমাণ
বিষাদে মাটির গ্লাস ভরে এনে দিয়েছ রস। সেই রসের
ভেতরে অজস্র ডানাওয়ালা কথনবিশ্ব। স্নায়ুতন্ত্র থেকে
মুছে দিচ্ছে শুকিয়ে যাওয়া পালক। অবিরাম রসপানের
দিবস ও রজনীতে চিরতরের আশ্চর্য ধ্বনি। সূর্যোদয়
থেকে সূর্যাস্ত অবধি প্রজাপতিরও অধিক কোনো রঙ।
রঙ মাখিয়ে হৃদয় প্রস্তুত হয়, সেই হৃদয়ের আনাচে-কানাচে
লতাপাতা ঢেউ আর অতনুভরা স্বর। স্তরে স্তরে গুছিয়ে
রাখা রসের সকাল বিকালগুলি হয়তো কখনো
ঘুমিয়ে পড়ে। রসে ভরা স্বপ্নগুলি ঘুমিয়ে পড়ে না কোথাও...
দেবাশিস চন্দ
পলাশমিতালি
কোথাও যাব না আমি, কোনো দূরত্বপ্রতাপ গর্জনে,
বাতাসে বাতাসে কানাকানি, অসহায় মানুষের কান্না,
দূরে সরে থাকার ফরমান, সামজিক দূরত্বের
অসামাজিক বর্শাফলকের রক্তচোখে চোখ রেখে
যাব তোর কাছে, স্খলিত মেঘের শব্দমুর্ছায়
ধুয়ে নেব সব পাপ, হাতে হাত, ঠোঁটে ঠোঁট রেখে
উড়ে যাব আকাশে, বর্ষার পোয়াতি মেঘ দেবে ছায়া,
রাজপথ, নির্জন বারান্দায় ছড়িয়ে যাবে সম্পর্কশেকড়,
দূরত্ব–মানচিত্রের কণ্ঠনালী চেপে ধরে শেখাব সহবৎ,
বুক চিরে দেখাব ভাল থাকার আলোকিত শিলালিপি।
# # # #
তোর সঙ্গে আমার প্রাণের খেলা, পারিজাতপ্রেম,
আমি কেন যাব দূরে, তোকেই জড়িয়েমড়িয়ে
পুঁইলতার মতো বেঁচে থাকব বৃষ্টিমগ্ন ভালবাসায়,
তোকে ছেড়ে যাব না কোথাও কোনো দূর দ্বীপে,
তুই আমার পলাশমিতালি, জ্যোৎস্নারাতের গান।
কাজল সেন
যেমন একটা গাছ
যেমন একটা গাছ
যেমন একটা বটগাছ
যেমন একটা বটগাছের ঝুরি
তোমার আমার মাথা থেকে
আমাদের অন্তরমহল
এই যেমন আমার নিজের পছন্দমতো একটা সাদামাটা চাতাল
একটা নিমগাছ দুটো জুঁইগাছ তিনটে ক্যাকটাসের সাজানো বাগান
অজস্র ঝুরি নেমে প্রোথিত হচ্ছে মাটির গভীরে
আমরা এভাবেই প্রতিদিন মাটির অন্দরমহলে
একটু একটু করে সাজিয়ে তুলছি
যার যতটা হলুদ আছে তার ততটাই থাক
আমার আদৌ নেই কোনো হলুদের উপাখ্যান
নাভিজলে নিমজ্জিত হয়ে আমি চাই না কোনো তন্নিষ্ঠ উড়ান
সাবেক মঙ্গলাহাটে এখন কেউ হয়তো নিছকই ছন্নছাড়া
রূপটানের আদব কায়দায় গহীন কোনো নীল সরোবর
কার কতটা দায় সেকথা এখন মুলতুবি থাক
শুধু পিছিয়ে থাকা মানুষেরা এভাবেই
কখন যেন ডুবে মরে নষ্ট সরোবরে
আর এগিয়ে থাকা মানুষের সমাগমে
সরগরম থাকে আমার সাদামাটা চাতাল