মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

আশিস গোপাল-এর কবিতা


সে সন্ধ্যায়  

হেমন্তের শেষ সন্ধ্যার বুকে অসংখ্য শরীর ক্লান্তির অবসান ঘটিয়ে ঘুমিয়ে গেছিল,

ঘুমিয়ে গেছিল চাবুকের নক্সা নিয়ে

শান্তির খোঁজে;

আকাশে তখনও বাঁকা চাঁদ ছিল, তখনও বুড়ো এক তারা ছিল আর ছিল বাদুড়ের আর্তনাদ।

 

শীতের প্রতিটি সন্ধ্যা নামে বুড়ো বাদুড়ের ডানার নীচে;

 

স্তব্ধ, আবেগহীন জনস্রোতের মাঝে শুয়ে

হলুদ হেমন্তের রাতে।

সারাটা দিনের ধুলো বালি মাখা, ভাঁজ পড়া শরীর টেনে নিয়ে যায় মানুষ

 

আমি তখনও দিগন্তের শেষ খুঁজি।

হঠাৎ চোখ খুলে দেখি আমার

চারিপাশে কে যেন নির্জনতার

ছেঁড়া আঁচল খুলে দিল।

 

কবে কার বৃদ্ধ মাকড়সা শত যুগ পুরোনো জালে

নিজেকে জড়িয়ে ঘুমাচ্ছে!

ঘুম কি সুখের?

সেই কালো জালে কি জড়িয়ে নেই

যা গেছে আজ বিস্মৃতির পথে?

কবে কার খসে পড়া দেয়ালের বুকে আজও যে ক্ষত,

তারও কি বুকে তোমার মত ছিল না ব্যথা?

ওই যে কত কাল ধুলোয় ঢাকা কাগজ আজ

একাকিত্বের সাথী

সেও কি ছিল না মৃত আর্তনাদের সাক্ষী?

 

স্তব্ধ, হেমন্তের একা রাত...

আমার শরীরে কে যেন তার উষ্ণ ছোঁয়া দেয়!

কে যেন আঁচড় কাটে বুকের গভীরে;

 

রাস্তার ধারে মৃত ডাবের গায়ে কালো শ্যাওলা জমার মত--

গভীর, কালো কুয়োর জলে আজও শ্যাওলা ভাসে।

সে জল গভীর, গভীর তোমার চোখের মত

যা গিলে খায় সবস্ত আবেগ;

 

শীতের প্রতিটি রাত নামে বুড়ো শিয়ালের ডাকে;

তবু আমার ক্লান্ত মন নীল দিগন্ত পেল না!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন