গুলজার
এই হাসপাতালে
এই হাসপাতালে...
সবকিছু আছে, নামকরা কুশলী ডাক্তারও আছে
শ্বাস নেবার যন্ত্রের সাহায্যে চলতেও পারছি
আর বোতল ভর্তি রক্তও এখানে পাওয়া যায়
'লিভার' মেলে সঠিক দামে।
চোখ বদলে নেবার জন্য, চক্ষু ব্যঙ্কও আছে।
আমি 'হার্ট বাইপাস' করতে যাচ্ছি হে খোদা
ডাক্তার নীতিন এই কাজে এক্সপার্ট...
এমন কঠিন সময়ে তোমার দরকার নেই কিন্তু
যদি সময় হয়, তো এসো, পাশে বোসো
কোনো কথা বলবে!!
তোমার সঙ্গে যখন কথা হয় না
কোনোদিন যখন তোমার সঙ্গে কথা হয় না 'প্রিয়'
এমন চুপচাপ কেটে যায় সুনসান এই দিন
একটা সোজা লম্বা বড় রাস্তার ওপর যেন
সাথ সাথ চলতে থাকা, অভিমানী কোনো বন্ধু
মুখ ফুলিয়ে, নারাজ, মৌন, উদাস।
আর যখন মিলন ঘটে, হাসিতে গড়িয়ে পড়ে অভিমানী দিন।
কাতুকুতু দিয়ে আমাকে বলে,'বলো , কেমন আছো বন্ধু!'
এ্যালকোহলিক
যতক্ষণ ভরা থাকে বোতল
ওর ভিতর খলবল করতে থাকে ঝড়
ওকে খালি করো তবেই পরিষ্কার,পরিপাটি দেখতে লাগবে
প্রতিটি বোতলের তলানিতে দেখ জমে আছে কতই না শান্তি
এসো না, একে খালি করি!
প্রতিবারই বলে যায় মেয়েটি
প্রতিবারই বলে যায় মেয়েটি... এয়ার হোস্টেস
প্লেনের উপরে, জলে যদি নেমে পড়তে হয়
সিটের নীচে জ্যাকেট আছে
দুটো নল মুখে নিয়ে, তারপর ফুলিয়ে
ফ্লাইটে যদি অক্সিজেন কম হয়ে যায়
মাস্ক আছে,আপনা থেকেই পরবে,নাকের ওপর রেখে...
আগুন লাগলে চারটি দরজা আছে, মধ্যেখানে দুটো করে, পিছনে দুটো, আর...
প্রতিবারই এই ভয় পেয়ে বসে
যদি এমন হয় তো,
কত কঠিন হয়ে যাবে মরা!
[গুলজার এক বর্ণময় প্রতিভার অধিকারী। তিনি চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার,গীতিকার, গল্পকার এবং কবি। তাঁর প্রকৃত নাম সম্পূরণ সিং কালরা। জন্ম ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের ২৮ আগস্ট। অধুনা পাকিস্তানের পঞ্জাবের দিনা-তে। হিন্দি, উর্দু, পঞ্জাবি,ব্রজ ভাষায় তিনি কবিতা, গীত ও অন্যান্য সাহিত্য রচনা করেছেন। গুলজার কবিতা লেখেন মূলত উর্দু, হিন্দি ও পঞ্জাবিতে।তাঁর প্রধান কাব্যগুলির মধ্যে অন্যতম 'চাঁদ পোখরাজ কা', 'রাত পশমিনে কি', এবং ' পন্দের পা়ঁচ পঁচাত্তর '। হিন্দিতে লেখা তা়ঁর অভিনব আঙ্গিকের কবিতা সংকলন হলো 'ত্রিবেণী'।এখানে তাঁর ' পাজী নজমে ' কাব্যের কয়েকটি কবিতার অনুবাদ রইল। অনুবাদ করেছেন বিশিষ্ট অনুবাদক মানবেন্দ্রনাথ সাহা।]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন