শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

শুভদীপ মাইতি-র কবিতা

আগলে রেখেছি গোপন

সাঁকো জন্মের এপারে যখন জড়িয়ে ধরেছে গোলমরিচের লতা
ললাট বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি আভ্যন্তরীণ ইথার
আমায় আজন্ম অপেক্ষায় রাখলো পালোর সরবতে

পরমার্থিক ব্রহ্ম হলো আত্মা। আমি ভেতরে ভেতরে অনুভব করছি নিজেকে
দু'শো বছর আগের জমিদার বাড়ি, পরিখা, কুঁয়োর পাশের বাতিস্তম্ভ
জোনাকি আলোর মতো ঘিরে ধরছে রাতে

একমাত্র ভাতের থালায় টের পাই প্রিয় মানুষের জন্য উৎসর্গীকৃত খিদে ও গোপন জলপান।
যে ছিল, সে নেই
যে নেই, সে আছে― চাবুকের দাগের মতো মায়া চরাচরময়

যে বাসগুলো কাঁথি থেকে মেদিনীপুরের দিকে চলে যাচ্ছে
তারা জানতেও পারলোনা একজন পুরুষ
শীলভদ্রের মতো আগলে রেখেছে প্রাচীন প্রণয়বিহার


ছায়া বিষাদ

শুধুমাত্র শেকড় ছোঁব বলেই আমার কোন উদযাপন ছিলনা শুভেচ্ছাবার্তায়
ফুরিয়ে আসার আগে কোন ঋতু যখন ভিজিয়ে দিচ্ছে শহরতলির ভ্রমণ
আমি কবিতানগর পেরিয়ে ছায়া খুঁজছি হ্যামলকের

রক্তের তঞ্চনে যখন গাঢ় হচ্ছে রাত্রি কালীন সংলাপ
একটি নিভে যাওয়া বাতিস্তম্ভে হঠাৎ করে জ্বলে উঠছে আলো

এখানে মাটির নিচে শুয়ে আছেন ঈশ্বর
যথারীতি কোন বাউলের সুর আমাকে ভেঙে ফেলছে তুমুল আছাড়ে
বুকের ভেতর জমে উঠছে উর্বর পলি ও আনকোরা নামহীন হ্রদ

জানালার ওপারে প্রত্যন্ত গ্রামের দেশ ঘুমিয়ে পড়তেই
আমাদের নাভির বিষাদ ছুঁয়ে উড়ে যাচ্ছে মৌন কবুতর

 


লাবণ্যপ্রভা

রাত বাড়লেই অপেক্ষাদের নম্র শরীরে গাঢ় হয় সমাপ্তি বিষাদ
আমি নিজেকেই ভেঙে ফেলি। ছড়িয়ে দিই যে পথে শ্মশানের মুখ
প্রতিটি মৃত্যুর আগে লাবণ্যপ্রভা একটি আলো শ্লথ চলে যাচ্ছে ছেড়ে
খলবল মেতে উঠছে বেতবন, অশরীরী হাওয়া

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন