মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

প্রদীপ চক্রবর্তী-র কবিতা

মৃগয়াভূমি 

এক .

বিষ পান করো  মীরা 
পিরিতের রীতি - রঙ্গন 
ধরে রাখি খিলানের নীলচূড়া 
সামলে নেবার কিছু কিছু 
ধরে রাখি মাংসের শরীর, স্বরগ্রামখানি 

ভোরের  সাকিন আমার 
ঝড়ের দোটানায় কেমন ঝিমলাগা 
সুরকি - খসা জানলার গ্রিলে দুলছি 
শব্দ - পলার্ধ মুহূর্তের ধ্বনি মহামাংসে 
 হরিণের বাতিঘর চিনে তুমি ঠিক ফিরে আসবে 
বাতিমায়াবীর চোখমেলিয়ান ছবির বালুকায় 

বিষের গণভারত শিশিরবিনা রক্তে ছিটকে ওঠে,
আকাশে আইকনে মৌন পাখি 
পাতার মধ্যে অলিভ্রম না শৈবালসাঁজোয়া  দিয়ে ঢাকা পিস্তলের মুখে 
 দম ফাটছে আমাদের,
 ছলাৎছল  নীলাঞ্জন ছায়ার হাওয়ায় 
কার  পোড়া গন্ধ? 
কার হিয়ার গল্পে  হাওয়ায় নড়ছে না বুদ্ধক্ষেত?

 

দুই .

সুবর্ণনগরীর দক্ষিণপারে পরপর ময়ূর ফাটছে,
বাহুল্যা  নাচুনী  যে - পাখা ধরেছে ঘোড়াদের দুইপাশে 
তারালীন বলতে বলতেই যামিনী কেমন পাল্টে গিয়েছে দেখো!

 স্তরে স্তরে লোকায়ত, শকটের মোড়ক 
মুখিয়ে উঠছে দিগ্বিদিক ঘোড়াদের সরল  ভাঙনে 
পরস্পরের মধ্যে কথা বলতে বলতে দূর সুদূর মানুষ  থেমে যায় রাত্রিকালীন শিলং রেডিওর কাছে 

কিভাবে ছায়াপথের পাগল হারিয়ে গিয়েছিলো 
শহরতলীর শিউলিছড়ানো উঠোনে


তিন .

নিষাদের বিস্তারিত জেনেছি কাল 
শিকারের ব্যবহারবিধি 
ফুটো হয়ে আবার জুড়ে যাচ্ছে
 সারাংশ ও আকাশ 

ঘন বাদলের সমগ্রতা 
ভিজে যাচ্ছে জন্মমৌন পাখির জলছবি 
শান্ত হাওয়ায় গুঁড়ো হয়ে যাওয়া 
 আকালের আলো 
মুহূর্তের ব্যবধানে  রঙ বদলিয়ে বেরিয়ে আসছে 
চ্যুত সম্পর্কের হৃদশিল্পে 

 রঙদূষণের কিরাতকর্মে বাতাস মদ হয়ে ঝরছে
 
বাতাসের অশীতিপর সাঁকো পেরিয়ে যাচ্ছি বহুদূর,
এই মরণদশা ছেড়ে জন্ম নিচ্ছে ভালোবাসার কাটাকুটি 

 নিহিত ক্রমানুসারে বাতাস বিজড়িত একটি সমীরণ -  অশ্বে গতি লেগে আছে কতখানি ...


চার .
পেছনে তাকাই সন্ধিবাতায়নে 
জলের প্রকৌশল আছে, দেহাংশে নড়াচড়া 
নীলবয়নের  ভাঁজে ভাঁজে এ কার নাকচাবি 
ও টায়রার যন্ত্রণা নিয়ে উঠে আসে অনুচিত 
রিরংসা, 
চৈত্রে  ঝরা মুমূর্ষু ক্ষতমুখে বেঁধানো জন্তুর বিষ,
মাংসের  যন্ত্রণা  শুইয়ে রাখি, প্রান্তরসঙ্গিনী মেঘ 
বা  ভলক মদিরা অবাক করেছে অখণ্ড মৃগয়ায় 
তমসাবাহিত আলোর কথক 

হয়তো বিন্দুর মতো , জলের দাগের মতো ব্যবহৃত ঠোঁট, লাস্যজল, আলোছায়াবাসী, দিগন্তহীন ছাদে দেখবো তোমার কমলিনী
কতটা গভীর ছিল, কতটা শিশির বা প্রমিত বর্ষা জড়ানো হাহাকার তুলে ধরো অসমাপ্ত জৃম্ভনে ...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন