মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

মামুন মুস্তাফা-র অনুবাদ কবিতা


 মায়া আবু আল-হায়াত

দিবাস্বপ্ন 
আমি এমন একটি আনন্দের কথা লিখবো
যা জেনিনকে ছয় দিক থেকে আক্রমণ করে।
আমারি ক্যাম্পে শিশুদের বেলুন হাতে ছুটোছুটির কথা,
ওই আবেগমথিত বিষয়ে যা আস্কারে
সারারাত ধরে স্তন পানরত শিশুদের শান্ত করেছিল;
সামান্য সমুদ্রের কাছাকাছি-
তুলকারেমে আমরা যার উপর ও নিচ দিয়ে হাঁটতে পারি,
বালাতায় মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকা চোখ সম্পর্কে,
কালান্দিয়ার চেকপয়েন্টে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের জন্য
একজন মহিলার নাচ সম্বন্ধে,
আজাউনে হাস্যরত পুরুষদের শরীরজুড়ে যন্ত্রণা নিয়ে;

এবং তোমার আমার বিষয়ে-
আমাদের পকেটভর্তি সমুদ্র-শেল ও পাগলামি
আর একটি শহর নির্মাণ প্রসঙ্গে।


পরাজয়ের সরণি 
আমি অন্যান্যদের মতো
পালানোর কথা ভাবলাম।
কিন্তু আমার পালিয়ে যেতে ভয় হচ্ছে,
যানজটপূর্ণ একটি সেতুর আতঙ্ক
এবং ট্রাফিক দুর্ঘটনা,
এমনকি একটি নতুন ভাষা শেখার।

একটি সহজ যাত্রার জন্য আমার পরিকল্পনা
অথচ একটি ক্ষুদ্র প্রস্থান:
আমার সন্তানদের একটি স্যুটকেসে নিয়েছি
একটি নতুন জায়গায় আমাদের যাত্রা।

দিকনির্দেশ আমাকে বিভ্রান্ত করে:
এই শহরে কোনো বন নেই,
মরুভূমিও নেই।
পরাজয়ের কোনো সড়ক তোমার জানা আছে
যা শেষ হয় না
একটি উপনিবেশেও?

আমি পশুদের সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা ভেবেছিলাম,
আনন্দদায়ক, বিকল্প হিশাবে
আমার বাচ্চাদের বৈদ্যুতিক খেলনার জন্য।
এবং কেউ অন্যকে বলি দেয়ার আগে
আমার বাস্তুচ্যুতির জন্য জায়গা চাই,
কেননা আমার সন্তানেরা বড়ো হচ্ছে,
তাদের বহুবিধ প্রশ্ন!
আর আমি মিথ্যা বলি না
এবং ক্ষোভও রাখি না।
যদিও প্রতিবেশীরা সবসময় নোংরা থাকে,
তবুও আমি তিরস্কার করি না
কিন্তু শত্রুরা হত্যা করে।

আমার সন্তানেরা বড়ো হয়
তবু কেউ এখনো চিন্তা করেনি
শেষ সংবাদ প্রচারের কথা:
ধর্মীয় চ্যানেল বন্ধ করে দাও,
স্কুলের ছাদ ও দেয়াল সীলগালা করো,
নির্যাতন শেষ।

আমি কথা বলার সাহস পাই না
কিন্তু আমি যা বলি তাই ঘটে
আর আমি কথা বলতে চাই না
বরং হারিয়ে যেতে চাই।


[মায়া আবু আল-হায়াত ১৯৮০ সালে বৈরুতে জন্মগ্রহণকারী ফিলিস্তিনি ঔপন্যাসিক, কবি, গল্পকার এবং অনুবাদক। লেবানিজ মা ও ফিলিস্তিনি বাবার সঙ্গে তিনি বেড়ে ওঠেন জর্ডানে। মায়া আবু আল-হায়াত তিনটি উপন্যাস এবং তিনটি কবিতা সংকলন প্রকাশ করেছেন। তাঁর বইগুলো বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছে এবং তার কিছু গল্প বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। মায়া একজন অভিনেত্রী হিসেবেও কাজ করতেন এবং প্যালেস্টাইন রাইটিং ওয়ার্কশপ চালাতেন। তিনি শিশু সাহিত্যেও বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ২০০৩ সালে, তিনি নাবলুসের আন-নাজাহ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি লাভ করেন। জেরুজালেমে বসতি স্থাপনের আগে তিনি তাঁর পরিবারের সাথে আম্মান, জর্ডান এবং তিউনিসিয়ায় বসবাস করতে থাকেন। ২০০৮ সালে মায়া আবু আল-হায়াত জেরুসালেমে চলে আসেন এবং বর্তমানে তিনি তাঁর স্বামী ও তিন সন্তানের সঙ্গে এখানেই বসবাস করছেন।]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন