মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

রন্তিদেব সরকার-এর কবিতা

তুমি এখন একটা অব্যেস হয়ে দাঁড়িয়েছ

তুমি এখন একটা অব্যেস হয়ে দাঁড়িয়েছ।

যখন থেকে তুমি তোমার ব্যক্তিগত নেপথ্যে

চোখের আড়াল হয়েছে, তখন থেকেই।

 

নিত্য ঘুম থেকে জেগে, হাত-মুখ ধুয়ে

যেই আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়াই---

দেখতে পাই, আমার প্রতিচ্ছবির জায়গাটা

তুমি দখল করে, দিব্যি এক অতীন্দ্রিয় হাসি  

হেসেই চলেছ কৌতুকী চোখের ঝিলিকে;

আয়নার ওপার থেকে; একে কি ক্লেয়ারভয়েন্স বলে?   

 

যেহেতু দেখা হয়না দীর্ঘদিন, ফোনে কথাও হয়না

তাই তোমার অন্তহীন আলাপচারিতারও বিরাম নেই;  

আর আমি তোমার আজগুবি প্রশ্নমালার উৎসমুখ

খুঁজতে গিয়ে গলদঘর্ম, জেরবার। তবুও ভালো লাগে

তোমার এই নিত্য সন্দর্শন; সমীপবর্তী হওয়া;

আমার নতুন কবিতাগুলি শুনতে চাওয়া। কিন্তু আমি

তোমাকে তো জানি; মুখে না বললেও আমি জানি 

তোমার কাব্যচারিতার কামুফ্লেজ; তোমার যাবতীয় আগ্রহ;

আমার নতুন কবিতায় তুমি কতটা আছো জুড়ে।

আর আমি দূরাগত হয়েও কতটা আছি কাছাকাছি!   

 

আমি ভাবি অন্য কথা- এমন আশ্চর্য সাক্ষাৎ

বাস্তবে কি সত্যি ঘটে কোনোদিন, নাকি আমার

অবচেতনে, মনের অন্তঃপুরে, আমার আকাশকুসুম কল্পনা?  

যদিও তার কোনো সদুত্তর পাইনি আমি আজো।

আসলে, তুমি থেকে যাও তোমাতেই, অপ্রকাশিত;             

এদিকে আমার  সামনে এসে যখন জড়ো হও

আমার মনের যাবতীয় সুকুমার মুকুরগুলি উসকে দিয়ে,  

তখন আমিও থাকি যুক্তিতক্কোহীন; কিংকর্তব্যবিমূঢ়

সামিল হয়ে পড়ি আমার অতৃপ্ত হৃদয়বাসনার সুখগাহনে,   

বাস্তব-পরাবাস্তব সব যেন তখন তালগোল পাকিয়ে যায় ----

মনের কথা মনেই রয়ে যায় প্রতিবারের মতই।     

 

1 টি মন্তব্য:

  1. মনের কথা মনেই রয়ে যায়, দেখা নেই,কথা নেই ফোনে; তবু কবির ভাবনায় দোল খায় তাঁর নতুন কবিতায় কতখানি তুমি। তালগোল পাকিয়ে যায় বাস্তব পরাবাস্তব। দুরাগত হয়েও কতটা কাছাকাছি তার নেই কোন সদুত্তর। এ কবিতা আত্মজৈবনিক আবার সার্বজনীন। বেশ ভালো লাগার রেশ থেকে যায়। কবিকে অভিনন্দন। — যযাতি দেবল, পানাগড় গ্রাম।

    উত্তরমুছুন