১.
দৈন্য সুরে প্রেমধ্যানে মজিলে পরান কেটে যায়
নিকষ যত অথই আঁধার ঘনিয়ে ছিল মনে,
আবীরমাখা রাধাচূড়া ফুটেছে সখার খোঁপায়
দোলপূর্ণিমার চাঁদ উঠেছে সাধুপাড়ার বনে৷
২.
তুমি যদি বা সরল নদী আমি নতজানু ভূমি
তোমাতেই ডুবে মরা ও পূণর্জাগরণ আমার!
অপেক্ষমান দিগন্ত আমি হেসে ওঠা সূর্য তুমি
ছুঁই না সখা হে, স্পর্শে গড়ি প্রেমের যৌথ খামার৷
৩.
তোমার মুখের মত লাস্যময়ী মুখরার বাণী
অন্তর চুঁইয়ে নেমে আসা অন্তরার অন্ত্যমিলে
আর স্মৃতির সঞ্চারী খুঁড়ে অভিমানের শুনানি
কন্ঠে বিরহপ্রবণ সুর; সুর জুড়ে তুমি ছিলে৷
৪.
কাছে গেলে যদি হারাই এই ভয়ে নিরাপদ দূরত্বে থাকি
চোখের আড়াল হলে সত্যিই মনেরও আড়াল হয় নাকি!
চোখে হারাই কল্পনায় দু'হাত বাড়াই তাই সংগোপনে
দেহে সন্দেহ যদি আত্মার এ দূরত্ব বল ঘুঁচাই কেমনে?
৫.
একই ছাদের নীচে পাশাপাশি শুয়ে থাকে দু'জন মানুষ
এক পুরুষ ও এক নারী, একে অন্যে ভাগ করে মন দেহ
হাসে ভালোবাসে জীবনের যত উত্তর মিলায় নিরঙ্কুশ
তাদের মাঝে অদৃশ্য জিজ্ঞাসা চিহ্ন হয়ে ঝুলে থাকে সন্দেহ!
৬.
তোমার জন্যে ঘর ছেড়েছি আপন এবং পর ছেড়েছি যে
পিছুটান ভুলে কাঁধব্যাগে তুলে পথ করেছি বসতবাটি
ভাটির দেশের মাটির পাখি পোষ মানালাম কৃষ্টিতে ভিজে
নমস্য হে বৈরাগ্য, তোমার মোহে সাধ-বিরহে উজান হাঁটি৷
৭.
তুমি আফ্রোদিতির হাসি তাই সখা আমি কৃষ্ণপক্ষের বাঁশি
পূর্বকোণে আমার উদয় পশ্চিমে অস্ত যাই তোমার কোলে
তোমার আগুনরূপ আমি নিশ্চুপ দাহকালের মৌনভাষী
অনাবিস্কৃত সভ্যতার মাঠে আমরা কি মিলবোই তাহলে?
৮.
রক্তাক্ত তর্জনী মুছবে তোমার সিঁথির সিঁদুর
কালো থাবা এঁকে দেবে ঐ কপালে কলংক-টিপ!
মলিন সজল চোখ শোকে হোক বেদনাবিধূর
তারুণ্য জেগে আছে, ভয় কী প্রিয় গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ??
৯.
বিজাতীয় থাবায় সময়ের চক্ষু চড়কগাছ
কোনো কোনো বিনিদ্র আঁখি তবু শেকড়ের সন্ধানে
মাতৃপ্রেমে মশগুল পাহাড়-নদী-সড়ক-গাছ
মানুষের প্রকৃত ভূগোল তার অতল পরানে৷
১০.
জ্ঞান-বৃক্ষের এক শাখে ছিলেন কনফুসিয়াস
অন্যগুলোতে কৃষ্ণ-মোহাম্মদ-সক্রেটিসের বাস
এমনি শাখা প্রশাখায় তাবৎ জ্ঞানী গুণীজন
সে বৃক্ষের ছায়ার নাম - মানবতার অন্বেষণ!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন