সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

প্রদীপ চক্রবর্তী-র কবিতা

নাট্যকারের শেষ সংলাপ 

এক.

একটু আগেই শ্রাবণের ভেতর শুয়ে ছিলেন সুব্রত কুমারী | সেই সে কবে যেন বিলীন বিজনের এখনো মনে আছে বৃষ্টি পড়ছিল তার প্রাচীন রাজগৃহে ,  অশরীরী হাসছে ,  রক্তমাখা গৌরীপট হাতে | অথচ অগতির গতি আমি তো তার রীতিমুগ্ধ জীব ! 

তবু কেন স্বপ্নে পাওয়া মেঘলা আলো আবার নতুন করে নিভে যাচ্ছে , পাঁচ বাই তিন , বকুলবাড়ি রোডে ? বৃষ্টির ভেতর যাকে
 দেখেছি , কত বিস্তার ছিল তার হাতে | বৃষ্টির হালকা পর্দায় রোদের সাতরঙা আঁচড়ের মতো তার ফণায় কস্তুরীর গন্ধ কই ? মধ্যযুগের ডোম্বীর মত সাইকোপ্যাথের বাঁশি পড়ে আছে একপাশে , নৈশদীপগণ কোনওভাবে সে ভাস্কর্য ভেঙে কয়েকজন অন্ধ শিল্পীকে হত্যা করতে
 চায় ,  যারা ভুল করে বাঁশিতে বাজিয়েছে  আজ পুরিয়া ধ্যানেশ্রী 

একটু আগেই উদ্যানবাটিকামধ্যে ম্রিয়মান এই ইহজগতের বাইরে অবিকল্প তরঙ্গসংকুল শ্যাওলা ও মাছেদের জগতে আমাকে নিয়ে যান সুব্রত কুমারী | লাস্টসিনের আগে মিনার্ভা থিয়েটারের প্রম্পটার তখন   লুকোনো সিঁড়ির নীচে ছাই ওড়াচ্ছে গন্ধ ওড়াচ্ছে আমার বিগত দিনের ছায়া থেকে ...

দুই.

দুলছে বিজুর বনে মিশে যাচ্ছে মাখন নট্ট ঐ | অখণ্ড মন্ডলাকারে ঘুরে যাচ্ছে মাখন | দিগ্বিদিক মহুয়ার গন্ধে অফিসের ভাত ফোটে | অবেলার ভাত মাখা হয় | তারা একদিন ১৭ আশ্বিন , ২৮ অগ্রহায়ণ , ৬ পৌষ , ২১ ফাল্গুন অথবা ১১চৈত্রের মধ্যে যেকোনও  একটি দিনে একফালি নদীর আমন্ত্রণে নিয়ে যায় বনমুরগির অবিরাম প্রসব ক্ষমতা 

তাদের সুহাসিনী পমেটম অচেনা রাস্তার গন্ধে কখন যেন দেখতে পায় প্রায়ান্ধকার শীতলতায়  চৌদলে চেপে সুহাসিনী চলেছে স্বর্গে | পৃথিবী নামক যন্ত্রটিতে একাকিত্ব মনখারাপ মরীচিকা অনস্তিত্বের অস্তিত্বে ছ ' টি জলবায়ু হলুদ শস্য ও ঘুমন্ত শিশুদের মাঝে সরু নদী একজন সারাদিন রান্না করেন |  পৃথিবীর শেষ বিকেল কখন যেন সজোরে শ্বাস নিতে নিতে  মানুষ ও  সম্পর্কের ভেতর হারিয়ে যায় দু একটা কাকেদের মতো  ...

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন