অনেকসময় ব্যালকনির রেলিং ধরে ঠায় ঝুলে থাকে এক -একটা গোটা দুপুর। এদের কোন বিপদ সম্ভাবনা নেই। এরা কতকাল ধরে পাখির গায়ে মিশে মিশে বাতাস দেখেছে। ঝুরঝুরে রোদ হয়ে সাগরজলে ছড়িয়েছে হিরে-জহরত। গাছের পাতায় শিরায় পেতেছে অলীক সংসার ।অথবা চিলেকোঠার ঘুলঘুলি দিয়ে চুপিচুপি লিপস্টিক লাগিয়েছে ঠোঁটে। এদের ভয় নেই। ডর নেই। এদের মরাও নেই।
মরা থাকে শরীরে। যে শরীরটা সারা গায়ে জবজবে ঘি মাখিয়ে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। কিছুটা ব্রহ্মআগুন সংগ্রহ করে জ্বালিয়ে দেবে নিজেরই নাভিমূল। ছাই হয়ে যাবে এই গনগনে দুপুরের আঁচে। মরা থাকে শুধু তার॥
ফ্রয়েডের সূত্র
জানো, কোষ্ঠীতে লেখা ছিল আমার মৃত্যু নাকি জলে ডুবে হবে। সেই মতো ঝাঁপ দিলাম মত্ত নদীর খরস্রোতে। জাপটে ধরলাম বুক। এমন মোলায়েম স্পর্শ আগেও পেয়েছি। আরাম হয়। ব্যথা মরে।
ডুব দিলাম আরও গভীরে। একটা বিকট মাছ অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। ভাবছে, লোকটা মরছে অথচ যন্ত্রণা বলতে কিছু নেই। কথাটা ঠিক। খুলে পড়ছে এক-একটা মাংসখণ্ড। গলে গলে পড়ছে রক্তনাড়ি। অসহ্য। অসহনীয়। অথচ যন্ত্রণা বলতে কিছু নেই। যন্ত্রণা তো লেগে আছে চাদরে, বালিশে। একটা সাজানো চিতায়। এভাবেই নদীর স্রোতে ভাসছে চিতা। শ্রাদ্ধের মালশা। কাউকে কিছু না জানিয়ে ওদের পিছু নিলাম একটা কাগজের নৌকা আঁকড়ে ধরে। এভাবে আরও কতক্ষণ কে জানে। কেউ ডাকেনি। কেউ বলতেও তো কেউ নেই। শরীর বলতেও কেউ নেই। নদীর গায়ে লেগে লেগে ভেসে আছে শুধু আমাদের বলা ও শোনাগুলো...। আমাদের বেঁচে থাকা আর মরাগুলো...॥
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন