আমরা নিজেদের সময়কে লিখতে পারব না
এই যে নিশ্চল নির্জন সময়
পাখি পাখালিরাও যেখানে চুপ করে আছে,
প্রতিদিনের শব্দও যেখানে নেই আছে শুধু ধ্বনি,
প্রার্থনা, ডাক ও বিলাপ সব যেখানে মৌন,
সঙ্গীসাথিরাও যেখানে ডুব দিয়েছে
সবকিছুতেই চুপ করে থাকা যেখানে
সময়ের মতো প্রসারমান
এমন সময়কে আমরা কীভাবে লিখব?
জানি না এটাই আমাদের সময়
নাকি ভুল করে আমরা অন্য সময়ে এসে পড়েছি
এতটাই পরিপাটি সেজেগুজে আছে এই সময়
এতে কোনও ভাঁজ, স্তর, ফাটল কিছুই চোখে পড়ে না
আর এর থেকে পালিয়ে যাওয়ার পাকদণ্ডিও খুঁজে পাই না।
আমরা নিজেদের সময়কে লিখতে পারব না।
সময়টা এখন ধীরে চলছে
মনে হচ্ছে সব ঘড়িগুলো
বিলম্বিত লয়ে চলবে বলে ঠিক করে নিয়েছে,
অসময়ের বাতাস এখন শীতল,
যদিও ফুলে ফুলে বসন্ত হাসছে
যেন আমাদের কুসময়কে বিদ্রুপ করছে
কাঠবিড়ালি দ্রুতগতিতে ছুটছে
মুখ ভেংচিয়ে গাছ বা খুঁটির ওপর চড়ছে,
হঠাৎ কবুতরের সংখ্যা কমে গেল
যেন অসহায় শ্রমিকের মতো নিজের ঘরে গ্রামে
ফিরে যাওয়ার দুঃখের যাত্রায় বেরিয়ে পড়েছে
আমাদের এইটুকুই সান্ত্বনা
নিজেদের সময়ে না থাকলেও
আমরা আমাদের ঘরে আছি।
কোনও আবর্জনার অবশিষ্ট কোনও অংশের মতো
আশাও কোনও কোণায় লুকিয়ে রয়েছে
যা আজ নয়তো কাল ঝাড়ু দিয়ে ফেলে দেওয়া হবে।
আমরা নিজেদের সময়কে আর লিখতে পারব না।
[অশোক বাজপেয়ী ( জন্ম ১৯৪১) হিন্দি সাহিত্যের বিখ্যাত কবি এবং বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক। কবিতার জন্য ১৯৯৪ সালে পেয়েছেন সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার। তিনি ভারত সরকারের প্রশাসনিক উচ্চপদেও সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। ললিত কলা অকাদেমি এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল অকাদেমি অব আর্টস-এর চেয়ারম্যান ছিলেন।]
দারুণ লাগল
উত্তরমুছুনধন্যবাদ 🙏
মুছুন